‘দখিনা স্বপ্ন’ বাস্তবায়নের এক বছর আজ

জাতীয়

দখিনা স্বপ্ন’ বাস্তবায়নের এক বছর আজ। যোগাযোগ সহজ ও স্বাচ্ছ্যন্দময় হওয়ায় উচ্ছ্বসিত এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। কিন্তু এ সেতুকে ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলে অর্থনৈতিক যে উন্নয়নের সম্ভাবনা, সেটি এখনও অনেক দূর। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এক বছর এই বিশ্লেষণের জন্য পর্যাপ্ত নয়। আর পরিকল্পনা মন্ত্রী জানিয়েছেন, কিছু প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে আরও।

পদ্মা সেতু স্বপ্ন পূরণ করেছে দেশের দক্ষিণের মানুষের। প্রাকৃতিক ও প্রকৌশলগত জটিলতা শেষে নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতু, নির্মাণ শেষে উদ্বোধন হয় গত বছরের ২৫ জুন।

উদ্বোধনের পর গত এক বছরে পদ্মা সেতু থেকে টোল আদায় হয়েছে প্রায় ৭৯০ কোটি টাকা। গড়ে প্রতি মাসে টোল আদায় হচ্ছে ৬৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। যা প্রতিদিনে হিসেবে গড়ে সোয়া দুই কোটি টাকা। কিন্তু পদ্মা সেতু কেবলমাত্র টোল নির্ভর সহজ যোগাযোগের জন্য নয়। পদ্মা বহুমুখী সেতুর সম্ভাবনা এখনও পুরোপুরি বাস্তব রূপ পায়নি। এ জন্য গ্যাস সংযোগসহ নানামুখী প্রতিবন্ধকতার কথা বলছেন দায়িত্বশীলরা।

পদ্মা সেতু ঘিরে এখনও মুগ্ধতা কাটেনি সাধারণ মানুষের। যোগাযোগের উন্নয়ন আর সহজীকরণই তাদের অনেক বড় প্রাপ্তি। দ্বিতল পদ্মা সেতুতে সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি চালু হবার অপেক্ষায় রেল। সেটি হলেই গড়ে উঠবে সমন্বিত যোগাযোগব্যবস্থা ।

পদ্মা সেতু ব্যবহারকারীরা জানান, সেতু হওয়ায় যোগযোগ সহজ হয়েছে। ভোগান্তি কমেছে। সময়ের পাশাপাশি অর্থও সাশ্রয়ী হয়েছে। তবে নিজ অঞ্চলে কর্মসংস্থানের দাবি জানান তারা।

দক্ষিণ অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভাবনা নিয়ে সিপিডির গবেষণা পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমাদের সনাতনী যে বৃহৎ আকারের শিল্প বা ভারি শিল্প রয়েছে, সেগুলো এখনই দক্ষিণ বঙ্গে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। সেখানে গ্যাস বা জ্বালানী সুবিধা পৌঁছানো, ব্যাংকিং ব্যবস্থা, দক্ষ মানবসম্পদ সুবিধা এবং কাঁচামাল সরবরাহ দরকার। কারণ, পণ্য উৎপাদনের সাথে এ ধরনের বিষয়গুলো জড়িত।

পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রজেক্ট তো শেষ হয়েছে ফিজিক্যালি। ফিন্যান্সিয়ালি এখনো শেষ হয়নি। ঠিকাদারের অনেকগুলো ক্লেইম আছে। যেগুলো আমরা এখন মিউচুয়াল করার চেষ্টা করছি। একনেক থেকে অ্যাপ্রুভ হয়ে গেছে, ওই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, লক্ষ্য শতভাগেরও বেশি যদি সম্ভব হয় সেটা পূরণ হয়েছে বলে আমি মনে করি। আর্থিক বিচারেও এই এক বছরে অন্তত হাজার কোটি টাকা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কর্তৃপক্ষ জমা দিয়েছে। রাজস্ব আয় আগামী দিনে আরও বাড়বে।

অর্থনৈতিক সম্ভাবনা নিয়ে তিনি বলেন, আর্থিক বাজারের সাথে যোগাযোগ কম ছিল; এটা বাড়ানোর জন্য একটু সময় লাগবে। ওই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগে কম ছিল।

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *