দাঁত থাকতে আমরা দাঁতের মর্ম বুঝি না: মানবিক শওকত

সিলেট

আর্থ মানবতার সেবা ও সামাজিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত মানবিক টিম সিলেট’র পক্ষ থেকে কুলাউড়া মুক্ত দিবস উপলক্ষে ৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে।

কর্মসূচীর মধ্যে ছিলো- মুক্তির মঞ্চ,বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা, মেডিকেল ক্যাম্পেইন, স্বেচ্ছায় রক্তদান, শীতবস্ত্র বিতরণ, পিঠা উৎসব ও আলোচনা সভা।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কুলাউড়া ডাক বাংলা মাঠে সংগঠনের সমন্বয়ক ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের নায়েক মো.সফি আহমদের(পিপিএম) সভাপত্বিতে এবং সদস্য রুবেল হোসাইনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুশীল সেন দে।

প্রধান বক্তা বেওয়ারিশ সেবা ফাউন্ডেশনের টিম লিডার শওকত হোসেন।

বিশেষ অতিথি জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল ইসলাম শামীম।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কুলাউড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন।

দিনব্যাপী কর্মসূচীর মধ্যে ছিন্নমূল মানুষের জন্য পিঠা উৎসব ও বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা এবং ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইনে খুশি হয়েছেন উপস্থিত সবাই।

শুরুতে সংগঠনের উপদেষ্টা যুক্তরাজ্য প্রবাসী মঞ্জুর আহমেদ আরিফ উপদেষ্টা সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা সুশীল সেন গুপ্ত বলেন, কুলাউড়া মুক্তদিবস এলেই গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়।কত কষ্ট আমরা সেইদিন এই উপজেলাকে পাক-বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত করেছিলাম।দেশ স্বাধীন হওয়ার এতো বছরপরেও আমরা এইদিনটি পালন করতে দেখিনা।কয়েক বছর আগে উপজেলায় মুক্ত দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান করা হয়েছিল।তারপর আর কোনো খোঁজ নেই।

তিনি বলেন,এত বছর পর মানবিক টিম সিলেট আজ অনুষ্ঠান করে আমাদেরকে সম্মান দেখিয়েছে তার জন্য আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।কিন্তু সত্য কথা একটু তেতুই হয় উপজেলার একটি সংগঠনও সেটা রাজনৈতিক বা সামাজিক এই রকম অনুষ্ঠান করে কুলাউড়া মুক্ত দিবসের আয়োজন করেনি।

বেওয়ারিশ সেবা ফাউন্ডেশনের টিম লিডার মানবিক শওকত বলেন, আজকে যাদেরকে সামনে নিয়ে কথা বলছি তাঁরা প্রত্যেকেই আমার বাবা।কারণ আমার বাবাও এদেশের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।কিন্তু জাতি হিসেবে আমরা যে একটি অকৃতজ্ঞ জাতি, নতুন করে আবার তা প্রমাণ করলাম।এতো সুন্দর আয়োজনে মানুষের উপস্থিতি।দাঁত থাকতে আমরা দাঁতের মর্ম বুঝি না। আজ থেকে দশ বছর পর আর জাতির এই বীর সন্তানদের আমরা পাবো না।দাঁত চলে গেলে হয়তো বোঝবো।কিন্তু সেদিন আর সময় থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, আজ যে আমরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করছি তা সম্ভব হচ্ছে কাদের জন্য একবার নিজেদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করুন।গাড়ি-বাড়ি, বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করতে পারছেন এই সোনার সন্তানরা দেশ স্বাধীন করার কারণে না হয় কিছুই পেতাম না।অথচ তাদেরকে সম্মান না জানিয়ে বিভিন্ন দেশের পতাকা টাঙানো আর জার্সি পড়ে উল্লাস করতে ঠিকই টাকা খরচ করতে পারেন।মেসি-নেইমারের মূল আমার কাছে টিস্যুরি সমানও নয়।তাদের দলের জন্য বড় বড় পাতাকা বানায়।কিন্তু এই শীতে একজন মুক্তিযোদ্ধার গায়ে কেউ কি একটি শাল তুলে দিয়েছেন?

মানবিক টিম সিলেট যে সম্মানটুকু দিয়েছে এইটুকু সম্মান দিতে পেরে গর্ববোধ করছি।আসুন সবাই জাতির বীর সন্তানদের পাশে দাঁড়াই।অন্যদেশের পতাকা জার্সির পিছে না ছুটে।

এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী রজব আলী, আব্দুর রাজ্জাক, বিভাস চন্দ্র দেভ, রঞ্জিত চন্দ্র শীল, মো.অমর আতিক, নীলয় কুমার ভট্টাচার্য, লেমে চন্দ্র দাসসহ মানবিক টিম সিলেট’র অর্ধশতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *