দিরাই(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের দিরাই পৌরসভার বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন বসছে জুয়া খেলার আসর। জুয়া মাদকের মতোই ভয়ঙ্কর সর্বগ্রাসী নেশা। জুয়ার নেশায় আসক্তরা মা-বোন, স্ত্রী-কন্যার স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান সম্পদ বিক্রি করার মাধ্যমে জুয়া খেলে থাকেন। এখানেই কান্ত থাকে না জুয়ারিরা, জুয়ার নেশায় মক্ত হয়ে সুবিদা লুভি দাদন ব্যবসায়ীদের কাছথেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে, জুয়া খেলায় বিভোর, পরে সেই সমস্ত আসক্ত জুয়ারিরা দাদন ব্যবসায়ীদের অত্যাচারে ভিটেমাটি ছাড়তে বাদ্য হয়। জুয়ার মাধ্যমে সর্বস্ব হারানোর বহু নজির বিদ্ধ্যমান।
এক সময়ে যে লুডু বোর্ড ছিল কাগজের তৈরি এখন তা মোবাইলে অ্যাপের মাধ্যমে পাওয়া যায়। আর এই অ্যাপকে ব্যবহার করে একদল যুবক মেতে উঠেছে ডিজিটাল জুয়া খেলায়। শ্রীশ্রী জগন্নাথ জিউর মন্দিরের পিছনে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় ময়লা-আবর্জনায় বসে একদল জুয়াড়ি মোবাইলে লুডু খেলা (ডিজিটাল) জুয়া খেলায় মেতে উঠেছে। চারিদিকে আবর্জনা ছড়ানো, ছিটানো, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ১৫ থেকে ২০ জন খন্ড খন্ড হয়ে বসে জুয়া খেলায় মেতে উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জুয়া খেলায় জড়িত অধিকাংশ দিনমজুর, যুবক পেশায় মোটরসাইকেল চালক,ছোটখাট ব্যবসায় জড়িত। তাদের উর্পারজিত টাকা দিয়ে মেতে উঠে মোবাইল গেমিং জুয়া খেলায়। অজ্ঞাত নামা ঐ যুবক গুলো সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এই জুয়ার আসর।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তিরা জানান, প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে রাত ১০ পর্যন্ত এই স্থানে অজ্ঞাত যুবকরা মোবাইলে লুডু খেলা ব্যবহার করে জুয়া খেলায় মেতে উঠে। আমরা অনেকবার তাদের তাড়ানোর চেষ্ঠা করেছি কিন্তু কোন লাভ হয়নি। হত দরিদ্র এই যুবক গুলো সর্বস্ব খোয়ানো খেলায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের তৎপর না থাকার কারণকেই দায়ী করছেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান পাশেই বাসাবাড়িতে আমাদের মেয়ে ছেলে আছে, এখান দিয়ে চলাফেরা করে, তার পাশেই আবর্জনাতে বসে প্রকাশেই প্রতিদিন জুয়া খেলাসহ নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করছে তারা। প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার জুয়া খেলা হয়। আমরা ভয়ে এই জুয়াড়ি গুলোকে কিছু বলতে পারিনা। অনেক সময় জুয়া খেলানিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়াবিবাদ সৃষ্টি হয়, তাদের চিৎকার চেঁচামেচিতে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পরেছি। পাড়ার ছোট-ছোট ছেলে,মেয়ে ও শিক্ষার্থীদের উপর এর ক্ষতিকর প্রভাব পরছে।
উক্ত স্থানের পাশেই নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্বাস্থ্যকেন্দ্রর কর্মকর্তারা জানান আমরা এখানের স্থানীয় বাসিন্দা, মানসন্মানের ভয়ে নীরব থাকতে হয় আমাদের। স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে আলাপ কথা হলে তারা জানান বখাটে জুয়ারিদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। তাই প্রশাসনের সহযোগিতা চান বলে জানান। এ ব্যাপারে দিরাই থানার ওসি কাজী মোক্তাদির হোসেন বলেন, মোবাইল জুয়ারিদের শনাক্ত করা কঠিন তাই আগে তাদের শনাক্ত করতে হবে। সচেতনতা বাড়াতে হবে বলে জানান তিনি। সেই সাথে অভিযান চালাবেন বলে আশ্বস্ত করেন এবং এটা বন্ধে তথ্য দিয়ে প্রশাসনকে সহায়তার আহবান জানান তিনি।