কুরবানি ইসলামি শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। কুরআন ও হাদিসে এর গুরুত্ব অপরিসীম। কুরআন, সুন্নাহ এবং ইজমায়ে উম্মতের আলোকে কুরবানির বৈধতা প্রমাণিত। হাদিস শরীফে এসেছে যে, ‘নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় হিজরতের পর যখন থেকে কুরবানি করা শুরু করেন, তারপর থেকে আর কখনো বাদ দেননি। অর্থাৎ কোনো ঈদুল আজহার সময় কুরবানি না করে থাকেননি। (জামে তিরমিযী ১/১৮২)
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, ‘নবীজী সা. মদিনায় ১০ বছর অবস্থান করেছেন। প্রতিবছরই তিনি কুরবানি করেছেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৪৪৯)
কুরবানি তো তারাই দেবে, যাদের সামর্থ্য রয়েছে। যাদের রয়েছে কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার মতো নেসাব ও সম্পদ, তাদের ওপরই কুরবানি ওয়াজিব। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ হাতে কুরবানি করতেন।
মুসলিম দেশগুলোতে কুরবানিতে অন্যকে শরিক করার প্রচলন রয়েছে। উট, গরু, মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যেকোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কুরবানি করা জায়েজ। (মুসলিম: ১৩১৮; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭)। উটের বয়স পাঁচ বছর হতে হবে। গরু ও মহিষের বয়স দুই বছর হতে হবে। (মুআত্তা মালেক: ৭৫৪)
কুরবানিতে কাউকে শরিক করার ক্ষেত্রে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি বিষয় হলো অংশীদার নির্বাচন করতে প্রত্যেককে ভালোভাবে জেনে-বুঝে নিতে হবে। কারণ শরিকের কারও নিয়ত গলদ হলে কারও কুরবানিই (অন্য শরিকদের কারও কুরবানি) শুদ্ধ হবে না।
এ বিষয়ে ফতোয়ার কিতাবগুলোতে বলা হয়েছে, যদি কেউ আল্লাহ তায়ালার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কুরবানি না করে শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে কুরবানি করে তাহলে তার কুরবানি সহীহ হবে না। তাকে অংশীদার বানালে শরিকদের কারো কুরবানি হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে শরিক নির্বাচন করতে হবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৮, কাজিখান: ৩/৩৪৯)
আরেকটি বিষয় হলো- হারাম টাকা দিয়ে কেউ কুরবানি করলে তার কুরবানি আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। কেননা ‘আল্লাহ তাআলা পবিত্র; শুধুমাত্র পবিত্রটাই তিনি গ্রহণ করেন…।’ (তিরমিজি: ২৯৮৯) পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা ব্যয় কর তোমাদের অর্জিত হালাল সম্পদ থেকে।’ (সুরা বাকারা: ২৬৭)
শেয়ার করুন