দুই মামলায় আসামি ৭৭, কারাগারে ৪

সিলেট

সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ এবং তার অনুসারী হিসেবে পরিচিত যুবলীগ নেতা শমসের আলীর বাসায় হামলার ঘটনায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে শাহপরাণ থানায় মামলা দুইটি দায়ের হয়। কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদের মামলায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়। অপর মামলার বাদি যুবলীগ নেতা শমসের আলী শেরু। তিনি ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করেছেন।

এদিকে মামলায় চারজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন নগরীর ইসলামপুরের মোহাম্মদপুরের মৃত মো. জামাল উদ্দিনের ছেলে মো. রাহেল উদ্দিন রাবেন, কল্যাণপুর এলাকার মো. মান্নান মিয়ার ছেলে তারেক আহমদ, আব্দুর রহিম মল্লিকের ছেলে ফুজায়েল মল্লিক (২০) মবরুল ইসলাম বিজয়।

শাহপরাণ থানার পরিদর্শক (তদন্ত)  ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য জানান, মামলায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

তিনি জানান, শুক্রবার রাতে কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ বাদী হয়ে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আসামিরা হলেন কল্যাণপুরের মৃত শেখ মখন মিয়ার ছেলে শেখ নজরুল ইসলাম বিজয় (৩০), আলম মিয়ার ছেলে সুহেল আহমদ (৩২), শেখ কবির উরফে সম্রাট করিবের ছেলে  মো. রাব্বি (২২) ও শেখ রুহিত (২০), মো. মান্নান মিয়ার ছেলে তারেক আহমদ (৩১), শাপলাবাগের সাজ্জাদ মিয়ার ছেলে ছামাদ আহমদ (২২), আব্দুর রহিম মল্লিকের ছেলে ফুজায়েল মল্লিক (২০), মিনহাজের ছেলে ইয়াকীন আহমদ (২০),নাসির উদ্দিন (২৩), মহিন মিয়ার ছেলে মুছা খান তপু (২১), কুশিঘাটের বাছিরের ছেলে শাওন আহমদ (২৩), ভাটাটিকরের  আমিন উদ্দিনের ছেলে রিয়াজুল ইসলাম (২২, মোহাম্মদপুরের মৃত মো. জামাল উদ্দিনের ছেলে মো. রাহেল উদ্দিন রাবেন(২২) ও জসিম মিয়ার ছেলে বোরহান (২৫)।

অভিযোগে আজাদ উল্লেখ করেন, আসামিরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ী, ত্রাস সৃষ্টিকারী ও জবর দখলকারী। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপকর্ম করায় স্থানীয় নিরীহ জনগণ আমার নিকট বিচার চাইলে আমি এসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেই। এতে আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে ও আমার বাসায় হামলা করে। গত বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র, মশাল, হকিস্টিক, রামদা, লোহার পাইপসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার বাসায় হামলা চালায়। এতে বাসার প্রায় ১ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে। হামলার এক পর্যায়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে আসলে আসামিরা গুলি বর্ষণ করতে করতে এলাকা ত্যাগ করে।

এদিকে, বাসায় হামলা, চাঁদাবাজি, প্রাণনাশের হুমকি ও লুটপাটের অভিযোগ করে থানায় আরেকটি মামলা করেছেন সিলেট মহানগর যুবলীগের সদস্য শমসের আলী। তিনি ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করেছেন।

এ মামলার আসামিরা হলেন শেখ নজরুল ইসলাম বিজয়, ছামাদ আহমদ, রাব্বি, রিয়াজুল, ফুজায়েল মল্লিক, ইয়াকীন, সুহেল, বোরহান, নাসির, মো. রাহেল উদ্দিন রাবেন, তারেক আহমদ, মুছা খান তপু, শাওন, শেখ রুহিত, হারুনুর ইসলাম, সাব্বির, সাইফুল ইসলাম ছফু।

 

কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদের বাসায় হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচির ঘোষণা করেছে সিটি করপোরেশন। শনিবার নগর ভবনে অনুষ্ঠিত এক জরুরিসভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে রোববার দুপুর ১২টায় নগর ভবনসহ ৪২টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে এক যোগে ১ ঘন্টা করে মোট ৫৭ ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করা হবে। এছাড়াও আগামী ১ জুলাই সোমবার টিলাগড় পয়েন্টে অবস্থান কর্মসূচি ও ২ জুলাই মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *