দোয়ারাবাজারে সোর্স ভেবে শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ

সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে রাতের আধারে অবৈধভাবে ভারত থেকে আসা চোরাকারবারিদের পন্য বিজিবি কর্তৃক আটক হওয়ায় বিজিবির সোর্স সন্দেহে সজিব মিয়া নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (২২ মে) রাত ১০টায় উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এবিষয়ে মঙ্গলবার (২৩ মে) সন্ধায় দোয়ারাবাজার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আহত কলেজ শিক্ষার্থীর বাবা তফাজ্জল আলী।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের তফাজ্জল আলীর ছেলে কলেজ শিক্ষার্থী সজিব মিয়া মঙ্গলবার রাতে জরুরি কাজে দোয়ারাবাজার থানায় যায়। কাজ শেষ করে মোটরসাইকেল যোগে বাড়িতে আসার পথে ওই গ্রামের মৃত মমশ্বর আলীর ছেলে ইয়াকুব আলী (৪৫), কুদ্দুস আলী (৫০), কুদ্দুস আলীর ছেলে আরমান আলী (২৪), সালমান (২২), আনোয়ার (২০), আজদ আলীর ছেলে আজমির আলী (৩৫), একই গ্রূমের কুসুম আলী, সমুজ আলী, আজাদ আলী ছেলে সুহেল (২৫), জুয়েল (২১), মৃত মমশ্বর আলীর ছেলে মাহমদ আলী (৪০), একই গ্রামের আজদ আলী (৬০), মুজেফর আলীর ছেলে আবু বক্কর (২৫) চোরাকারবারিদের দল সজিব মিয়াকে বিজিবির সোর্স এবং তার সংবাদের ভিত্তিতে ভারত থেকে অবৈধভাবে আনা পন্য আটক করেছে দায়ী করে মোটরসাইকেল থেকে জোরপূর্বক নামিয়ে মারধর করে। হত্যার উদেশ্যে ডেগার, রড ও রামদা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। এসময় তাকে বাচাঁনোর উদেশ্যে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলেও চোরকারবারি প্রভাবশালী এ বাহিনীর হাত থেকে তাকে রক্ষা করতে পারেনি। আসামীগন একই গ্রামের হওয়ায় একপর্যায়ে তাদের বাড়িতে নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে বেধে অমানবিক অত্যাচার ও মারধর করে। খবর পেয়ে তার চাচাতো ভাই ওয়ারিছ আলী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ৯৯৯-এ ফোন করলে দোয়ারাবাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থল হতে তাকে উদ্ধার করে। পরে দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বর্তমানে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, চোরাকারবারি ও মাদক কারবারিদের এই দল এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব গড়ে তুলেছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার ও নিপিড়নের স্বীকার হতে হয়। এমনকি তাদের হাত থেকে বর্ডার গার্ড বিজিবির সদস্যরা ও রেহায় পায়নি। তাদের চোরাই মালামাল আটক করতে গিয়ে বিজিবির একাধিক সদস্য নির্যাতনের স্বিকার হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিজিবি সদস্যদের দায়ের করা একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। স্থানীয়রা এই বাহিনী থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানিয়েছে।

দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেব দুলাল ধর লিখিত অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *