ধর্মীয় স্বাধীনতায় ভারতকে ‘বিশেষ উদ্বেগজনক দেশ’ ঘোষণার সুপারিশ

জাতীয়

ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে ফের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ)।

বিশ্বে ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর নজরদারির দায়িত্বপ্রাপ্ত যুক্তরাষ্ট্রের এই সংস্থাটি তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে ভারত সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এবং সেগুলোর যেসব কর্মকর্তা ধর্মীয় স্বাধীনতা ‘গুরুতর লঙ্ঘনের জন্য দায়ী’ তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অনুরোধ করেছে জো বাইডেন সরকারকে।

পাশাপাশি ওই সংস্থাটির বার্ষিক প্রতিবেদনে ভারতকে ‘একটি বিশেষ উদ্বেগজনক দেশ’ হিসেবে ঘোষণা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছে। খবর দ্য ওয়্যার-এর।

ইউএসসিআইআরএফের ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সারা বছর ধরে ভারতীয় সরকার জাতীয়, রাজ্য এবং স্থানীয় স্তরে ধর্মীয়ভাবে বৈষম্যমূলক নীতি প্রচার এবং প্রয়োগ করেছে, যার মধ্যে ধর্মীয় ধর্মান্তরকে লক্ষ্য করে আইনসহ আন্তঃধর্মীয় সম্পর্ক, হিজাব পরা এবং গোহত্যা নেতিবাচকভাবে মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, দলিত এবং আদিবাসীদের (আদিবাসী এবং তফসিলি উপজাতি) ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।’

দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রশ্নটি তোলার জন্যও অনুরোধ করেছে সংস্থাটি।

এর আগেও নরেন্দ্র মোদি সরকারের শাসনামলে সংখ্যালঘুদের ওপরে অত্যাচার নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগের কথা তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছিল ওই সংস্থাটি। ২০২০ সাল থেকে ভারত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারকে একাধিক সুপারিশও করেছে তারা। যদিও সেসব সুপারিশ মানেনি ওয়াশিংটন।

সংস্থাটির দাবি, গত কয়েক বছর ধরেই ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার অত্যন্ত দ্রুত অবনতি হয়েছে। ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনাও বেড়েছে।

এর আগে সংস্থাটি বলেছিল, সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়ে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতাকে খর্ব করার জন্য বিভিন্ন নীতি প্রণয়ন করছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। সিএএ-এনআরসির কড়া সমালোচনাও করেছিল সংস্থাটি।

যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থার ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পরই তড়িঘড়ি এ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে দিল্লি। ওই প্রতিবেদনকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে দাবি করে যাবতীয় বক্তব্য খারিজ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী জানান, ‘এত মিথ্যা বিবরণ দিয়ে সংস্থাটি নিজেরাই নিজেদের সুনাম নষ্ট করছে।’

প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জড়িত থাকার বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছিল ইউএসসিআইআরএফ। ফলস্বরূপ, ২০০৫ সালে তাকে ১৯৯৮ ইউএস ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম অ্যাক্টের (আইআরএফএ) অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে বাধা দেওয়া হয়েছিল।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *