নদীপথে অবৈধ চাঁদাবাজী বন্ধের দাবীতে ছাতকে ৮ ব্যবসায়ী সংগঠনের হুংকার নৌযান দিয়ে বালু পরিবহন বন্ধ করে দেয়ার ঘোষনা

সুনামগঞ্জ

ছাতক প্রতিনিধিঃ

ছাতকে পাথর-বালু ব্যবসায়ীদের ভাগ্যাকাশে আবারো কালো মেঘের ঘনঘটা। পাথর কোয়ারী বন্ধ থাকায় পাথর ব্যবসায়ীদের ভাগ্য শিকেয় উঠে যায় অনেক আগেই। লাফার্জ কর্তৃক খোলাবাজারে ক্রাশিং চুনাপাথর বিক্রিতে এখানের ঐতিহ্যবাহী চুনাপাথর ব্যবসাও পড়েছে মারাত্মক হুমকীর মূখে। নদী পথে অবাদে চাঁদাবাজীর কারনে অতিষ্ট হয়ে নিজেদের পাথর-বালু ব্যবসা ঘুটিয়ে নিয়েছেন অনেকেই। নতুন করে অবৈধ চাঁদাবাজদের বেপোরোয়া চাঁদাবাজীর কারনে নদীপথে পরিবহন ব্যবসাও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ছাতক শাহপরান ইঞ্জিন নৌকা মালিক সমবায় সমিতি সহ ৮টি ব্যবসায়ী সংগঠন। বুধবার বিকেলে শহরের নিজস্ব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ ঘোষনা দেন। অবৈধ ইজারা বাতিল ও অবৈধ চাঁদাবাজী বন্ধ না হলে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ওইসব এলাকায় নদীপথে সব ধরনের নৌযান চলাচল ও মালামাল পরিবহন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়ার হমকিও প্রদান করেন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বর্তমান অর্থ বছরের জন্য ইতিমধ্যেই বিআইডব্লিটিএ কোম্পানীগঞ্জের রনিখাই হতে পারকুল ও দোয়ারাবাজার পর্যন্ত নদীপথ ইজারা দেয়া হয়েছে। যা ইজারা গ্রহীতাগন নিয়মিত টুল আদায় করেও যাচ্ছে। সম্প্রতি একই এলাকায় কোম্পানীগঞ্জের মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির নামের এক ব্যক্তির নামে বিআইডব্লিটিএ সুনামগঞ্জের সহকারী বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা সুব্রত রায় স্বাক্ষরিত এ পরিপত্রে ইজারা প্রদান করা হয়। পরিপত্রে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদীর পশ্চিম পাশে টুকের বাজার, পূর্ব পাশে ডকারপাড় ও লাউটিরপাড় হয়ে আরশি খাল পর্যন্ত নদীর উভয় পাড়ে উঠানামাকৃত মালামালের এলএসসি এবং নৌযানের বর্দিং চার্জ আদায় কেন্দ্র ঘাট/পয়েন্টটি স্পট কোটেশনে পরিচালনার কার্যাদেশ উল্লেখ করে অনুমোদন দেয়া হয়। যা চলতি বছরের ৩০ জুলাই হতে ২৯ আগষ্ট পর্যন্ত কার্যকর হতে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ উল্লেখিত স্থানটি বালু মহাল বা কোয়ারী। যেখানে সরকারের রাজস্ব দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ইজারা প্রদানের সরকারী বিধান অনুযায়ী প্রতিটি ইজারা এক অর্থবছরের জন্য দেয়া হয়ে থাকে। আর এখানে বিআইডব্লিটিএ সুনামগঞ্জের সহকারী বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা সুব্রত রায় এক মাসের জন্য একই এলাকা ইজারা প্রদান করেছেন। যা অবধৈ বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে ছাতক বাজার একতা বালু উত্তোলন ও সরবরাহকারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে সিলেটের জেলা প্রসাশকের কার্যলয়ে জেলা প্রশাসক নুমেরী জামানের সভাপতিত্বে এক সভায় বালুভর্ত্তি কোন নৌ-যান থেকে অবৈধভাবে কোন চাঁদা আদায় করা যাবে না মর্মে সিদ্ধান্ত হয়। যা বিগত তিন বছর ধরে বাস্তবায়ন হয়ে আসছে। সম্প্রতি বিআইডব্লিটিএ সুনামগঞ্জের সহকারী বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা সুব্রত রায় কর্তৃক যে মাসিক ইজারা প্রদান করা হয় সেই ইজারাদারগন অবৈধভাবে কোম্পানীগঞ্জের কাটাগাং হতে বিলাজুরের মধ্য স্থানে অবৈধভাবে প্রতি নৌ-যান হতে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। অনেক সময় নৌ-যান শ্রমিকদের মারধোর সহ বিভিন্নভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করে আসছে অবৈধ ইজারাদাররা। একই স্থানে বিআইডব্লিটিএ’র দুটি ইজারা প্রদান ও এসব অবৈধ চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে বর্তমানে কঠুর অবস্থান নিয়েছে ছাতকের ৮টি শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন। নেতৃবৃন্দ অবৈধ ইজারা বাতিল ও অবৈধ চাঁদাবাজী বন্ধের দাবী তুলে বক্তব্য প্রদান করেন ছাতক পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফজলু মিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হাজী আবুল হাসান, ছাতক লাইমষ্টোন উম্পোটার্স এন্ড সাপ্লায়ার্স গ্রুপের সেক্রেটারী অরুন দাস, ছাতক পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারন সম্পাদক সামছু মিয়া, ছাতক বাজার একতা বালু উত্তোলন ও সরবরাহকারী ক্ষুদ্র সমবায় সমিতির সভাপতি সায়েদ আহমদ বাবলু, সহ সভাপতি নজরুল ইসলাম, ইউপি সদস্য শামছুল ইসলাম, লেবার সর্দার সমিতির সাবেক সভাপতি তজমুল আলী প্রমূখ। ##

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *