নবীগঞ্জে খাবার পানির তীব্র সংকট, গভীর নলকূপ স্থাপনের ধুম

হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পানির স্তর একেবারে নীচে নেমে যাওয়ায় টিউবওয়েলগুলো ও মটর মেশিন চালিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি উঠানো সম্ভব হচ্ছে না।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শুষ্ক মৌসুমে পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি না হওয়ায় পানির এ রকম সংকট দেখা দিয়েছে। যার ফলে নবীগঞ্জ উপজেলা টিউবওয়েলগুলোতেই পানি ঠিকমত না উঠায় সাধারণ মানুষ পড়েছেন মারাত্মক বিপদে। বোরো ফসলের মৌসুম হওয়ায় বেশিরভাগ বোরো জমিতে শ্যালো মেশিন বসানোর ফলে পানির এ রকম সংকট দেখা দিয়েছে বলেও অনেকে মনে করেন।

বিভিন্ন এলাকায় খোজ নিয়ে ও সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন গ্রামের অধিকাংশ টিউবওয়েলগুলোই পানি না উঠার কারণে প্রায় অকেজো হয়ে পরে আছে। তাই গ্রামের সাধারণ মানুষ বিশুদ্ধ খাবার পানি না পেয়ে পুকুর ও ডোবার পানি সংগ্রহ করে ফুটিয়ে খাবার উপযোগী করে তোলার চেষ্টা করছেন। যার ফলে তাদেরকে মারাত্মক ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এ অবস্থা এখন শুধু বিভিন্ন গ্রামেই নয় শহর এলাকায়ও মোটর মেশিনের সাহায্যে পাতাল থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ ক্ষেত্রে গ্রামের মানুষের মত শহরের মানুষও বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য পড়ছেন মারাত্মক বিপাকে। কোন কোন পরিবারের লোকজন বাজার থেকে মিনারেল ওয়াটার বোতল কিনে এনে খাবার পানির চাহিদা মেটালেও বাসার অন্যান্য কাজের পানি যোগাড় করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অনেকেই পানি সংকটের কারণে প্রতিদিন গোসল করতে পারছেন না। যার ফলে অনেক এলাকায় ডায়রিয়া ও আমাশয় রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন ছোট ছোট হাটবাজারে বাসাবাড়িতে পানি না থাকায় সাতশত থেকে নয়শত ফুট ডিপ টিউবওয়েল স্থাপনের ধুম পড়েছে।

উপজেলার বাংলাবাজার এর বাসার মালিক আব্দুল হান্নান মিয়ার  সাথে কথা বললে তিনি জানান, একমাস যাবত আমার বাসার মটরমেশিন দিয়ে পানি উঠছে না তাই প্রায় এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা খরচ করে সাতশত ফুটের একটি ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন করছি।

নবীগঞ্জ উপজেলা জোনাল অফিস ও নবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুসারে বিদ্যুৎ ও ডিজেল চালতি শ্যালো মেশিন প্রায় সংখ্যা ২৭২টি চলমান।

নবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ,কে,এম মাকসুদুল আলম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শুষ্ক মৌসুমে উনিশ হাজার হেক্টর জমিতে এবার বোরো আবাদ হবে। হাওয় অঞ্চলে হাওরের পানি দিয়ে সেচ দেওয়া হয়। উঁচু স্থানে পায় সাড়ে চার হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ফসলের আবাদ হবে এবার। পানির জন্য শ্যাল মেশিনের মাধ্যমে সেচ দেওয়া হয়।সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী সেচের দূরত্ব বজায় রেখে অনুমোদন দেওয়া হয়।

নবীগঞ্জ উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, অতিরিক্ত পরিমাণে গভীর  শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি উত্তোলন সাধারণত নভেম্বর মাস হতে মার্চের শেষের দিক পর্যন্ত পানির সমস্যা দেখা দেয়। শুষ্ক মৌসুমে পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি না হওয়ায় পানির সমস্যা হয়ে থাকে। নদীর পানি কালের পানি সেচ কাজে ব্যবহার করতে হবে এবং পানি বিশুদ্ধ করে খাবারের উপযোগী করতে হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *