হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে কয়েকটি গ্রামের কৃষকদের ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি এবং ডোবা জোর পূর্বক দখল করে মৎস আহরণ এবং প্রাণ নাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে।
নবীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব এবং পশ্চিম বড় ভাকৈর ইউনয়নে ঘনিয়াখালি বিল একটি পক্ষ জোরপূর্বক দখল করে নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে মাছ শিকার করছেন।
¯’ানীয় সূত্রে জানা গেছে, নবীগঞ্জের শৈলাগড় হাওরের মধ্যে হলিমপুর থেকে দূর্গাপুর পর্যন্ত ৭ কিলোমিটারের একটি রাস্তা অব¯ি’ত। রাস্তাটি শৈলাগড় হাওরের উভয় পাশের হলিমপুর, চরগাঁও শৈলাসহ কয়েকটি গ্রামের কৃষকদের হাওরে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা। রাস্তা থেকে প্রায় আঁধ কিলোমিটার দূরে গড়শৌলা মৌজায় অব¯ি’ত ঘনিয়াখালি বিল। বেশ কয়েকবছর যাবত এই বিল থেকে অবৈধভাবে মৎস্য আহরণ, হাওরের চলাচলের একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে খলাঘড় নির্মাণ এবং ব্যাক্তিমালিকানাধীন ডোবা দখল করে জোড়পূর্বক মৎস আহরণ বৈধ মালিকদের জমিতে যেতে বাধা প্রদানসহ কৃষকদেরকে বিভিন্ন ধরণের অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। ‘ঘনিয়াখালি গ্রæফ ফিশারিজ’ দাবী করা বিলের ইজারাদার নবীগঞ্জের ৭ নং ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের বাসিন্দা নজির মিয়া, আজিজুল মিয়া এবং সাজন মিয়া গং। গত রবিবার হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে গ্রামবাসীর পক্ষে এসব বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন হলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা পরিমল দাশ।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কৃষিকাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্য, যন্ত্রপাতি এবং গবাদিপশু আনা নেওয়ার প্রধান রাস্তাটি দখল করে খলাঘড় নির্মাণ এবং বর্ষা মৌসুমে রাস্তার পাশের খালগুলো দখল করে মৎস্য আহরণ করার ফলে কৃষকদের গো-খাদ্য পরিবহনে ও নৈমত্তিক চলাচলে বিঘœ ঘটছে। প্রতিবাদ করতে গেলে কৃষকদের মারধরের ঘটনাও ঘটছে।
এসব অভিযোগ নিয়ে গত বছরে গ্রামের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর আবেদনও করা হয়েছিল। কিš‘ এর কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রনালয় সরকারি জলমহাল ব্যব¯’াপনা নীতি ২০০৯ অনুসারে, বর্ষা মৌসুমে ইজারাকৃত জলাশয় যদি তৎসংসগ্ন এলাকায় প্লাবিত হয়ে একক জলাশয়ে রুপ নেয় তখনও ইজারাদাররা ইজারাকৃত জমির বাহিরে গিয়ে মৎস্য আহরণ করতে পারবে না। অথচ ঘনিয়াখালি গ্রæফ ফিশারিজ নামক ইজারাদাররা তাদের দাবীকরা ইজারাকৃত বিল থেকে দুই থেকে চার কিলোমিটার দূূরে গিয়ে কৃষকদের ব্যাক্তিগত ডোবা, খাল থেকে মৎস্য আহরণ করছেন। কৃষকদের ডোবা-খালে না আসার জন্য হুমকি ধমকি দি”েছন।
গ্রামের কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বোরো মৌসুমে ধান রোপন করার পরপর ইজারাদাররা খাল-বিল শুকিয়ে মৎস্য আহরণ করার ফলে জমিতে পানি সেচের তীব্র সংকট দেখা দেয়। এমনকি পশুগুলোর পানি পানের জন্য একফুটো পানি পর্যন্ত পায় না।
কয়েকবছর ধরে চলা এসব হুমকি,ধমকি, অত্যাচারের কারণে কয়েকটি গ্রামের কৃষকদের মধ্যে তীব্র চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এদিকে ইজারাদারের পক্ষ নিয়ে সাজন মিয়া বাদী হয়ে কৃষকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করেছেন। এতে করে প্রকৃত কৃষকদের মধ্যে আরও বেশি আতঙ্ক ও উৎকন্ঠার সৃষ্টি হয়েছে।