নয়াপল্টনেই সমাবেশে অনড় বিএনপি

রাজনীতি

পুলিশ অনুমতি না দিলেও আগামী ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে সমাবেশ করার ব্যাপারে অনড় বিএনপি। এ জন্য সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা।

এদিকে শুক্রবার বিএনপি অভিযোগ করেছে, ঢাকার সমাবেশকে কেন্দ্র করে গত দুই দিনে অন্তত ৫৩৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, পরিস্থিতি ঘোলাটে না করে ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ নয়াপল্টনেই করতে দিন।

নইলে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য সরকারই দায়ী থাকবে।

তিনি বলেন, নয়াপল্টনেই শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ হবে। সেখান থেকে সরকার পতন আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মহান বিজয়ের মাস উপলক্ষে ‘মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র ও শহিদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম’ শীর্ষক এই সভা হয়।

অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আবার গায়েবি মামলা শুরু হয়েছে। যত জুলুম নির্যাতন আসুক বিএনপির সমাবেশ নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই হবে।

আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা উপদেষ্টা নাজমুল হাসানের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন-বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুলস্নাহ, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।

অপর এক অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আহ্বায়াক আমান উল্লাহ আমান বলেন, অতীতে নয়াপল্টনে শান্তিপূর্ণভাবে বিএনপির সমাবেশ হয়েছে, প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। সুতরাং আগামী ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশও নয়াপল্টনেই হবে। সরকার মূলত অসৎ উদ্দেশে বিএনপির নেতাকর্মীকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু আমরা সরকারের সেই ফাঁদে পা দেব না। ১০ ডিসেম্বর ঢাকা হবে মিছিলের নগরী, জনতার শহর। এই সরকারের পক্ষে সমাবেশ ঠেকানো সম্ভব হবে না।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনের ভাসানী মিলনায়তনে মহানগর উত্তর মহিলা দলের অধীন পল্লবী, রূপনগর, বাড্ডা, ভাটারা, মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানার কর্মিসভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ১০ ডিসেম্বর আমরা ক্ষমতা ছিনিয়ে নেব না। ওই দিন কিছুই হবে না। সরকার পতনে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

বিএনপিকে হেফাজতের পরিণতির হুমকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি আর হেফাজত এক না। অনেক মার খেয়েছি, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছি। এবার যদি ফের মারতে আসেন, তাহলে আর বসে মার খাব না, পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলব।

ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলা দলের আহ্বায়ক নায়াব ইউসুফের সভাপতিত্বে কর্মিসভায় আরো বক্তব্য দেন-মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আফরোজা আব্বাস, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক প্রমুখ।

এদিকে বিকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি সবদিক বিবেচনা করে নয়াপল্টনে সমাবেশের সিদ্ধান্ত নিলেও পুলিশ শর্তসাপেক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার জন্য জোরজবরদস্তি করছে।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ যখন যেখানে মনে করে সেখানে অনুষ্ঠান করার অনুমতি পায়। সেখানে শত শত বাসে মানুষ আনা হয়। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল যায় সেখানে। সারা ঢাকাজুড়েই মাইকের হর্ণ বসানো হয়। নগরবাসীর চলাচল স্থবির হয়ে যায়। অথচ পুলিশ কিছুই বলে না।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *