কাজী মোহাম্মদ আলীঃ
যশোরের শিল্প ও বাণিজ্যিক নগরীর অদুরে নওয়াপাড়া পৌরসভার রানা ভাটা এলাকার পার্শ্ববর্তী পোড়াবাড়ি নামক জনবসতি এলাকায় একটি ফ্যাক্টরিতে তৈরি হচ্ছে মশার কয়েল। ফ্যাক্টরির বাইরে নেই কোন সাইনবোর্ড বা কোম্পানির নাম। ফ্যাক্টরির ভিতরে ১৫- ২০ জন শ্রমিক বিভিন্ন কেমিকেলের মিশ্রণে তৈরি করছে মশার কয়েল। তৈরিকৃত মশার কয়েল গুলো ট্যালেন্ট ৫৭০ নামের একটি মোড়কে বিএসটিআই অনুমোদিত মর্মে সিল ব্যবহার করে প্যাকেট জাত করে বিক্রি করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। প্রস্তুতকারক হিসেবে প্যাকেটের গায়ে ব্যবহার করা হয়েছে মেসার্স মিজান এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নাম। ফ্যাক্টরিতে গেলে ফ্যাক্টরির কর্মকর্তা কর্মচারী ও পার্শ্ববর্তীরা জানান, ফ্যাক্টরির মালিক আমিনুর ইসলাম।
মশার কয়েল ফ্যাক্টরি করতে দেশের আইন অনুযায়ী বেশ কিছু পূর্ব শর্ত রয়েছে। তারমধ্যে অন্যতম ইউনিয়ন পরিশদ বা সিটি কর্পোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া। নিজের ব্রান্ড ও লোগোয় বাজারজাত করনে শিল্প মন্ত্রনালয় থেকে ট্রেড মার্ক করা। ভ্যাট ও টিন সার্টিফিকেট। একক মালিকানা হলে, নিজের নামে টিন সার্টিফিকেট হলেই হবে। আর এক মালিকানা না হলে, ব্যবসায়ের নামে ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। থাকতে হবে বিএসটিআই অনুমোদন। বি এস টি আই অনুমোদন পেতে বাধ্যতামূলক উপরোক্ত কাগজপত্র দপ্তরগুলো থেকে সংগ্রহ করে বিএসটিআইতে আবেদন করার শর্ত রয়েছে। তবে এই ফ্যাক্টরি থেকে তৈরি মশার কয়েলগুলোর প্যাকেটে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন নং এর জায়গাটা ফাকা রাখা হয়েছে। ভ্যাট রেজিষ্ট্রেশন জায়গা ফাকা থাকায় বিএসটিআই অনুমোদনের বিষয়টা নিয়ে রয়েছে সংশয়।
ফ্যাক্টরির পার্শ্ববর্তী বসবাসকারী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ফ্যাক্টরিতে কয়েল তৈরির কাজে ব্যবহারিত কেমিক্যালের দুর্গন্ধে এ এলাকায় থাকা দায়। বিষাক্ত কেমিক্যালের দুর্গন্ধ বাতাসে ছরিয়ে পরে শিশু বৃদ্ধ সহ সব বয়সি মানুষ শারীরিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শ্বাসকষ্ট সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ফ্যাক্টরির পার্শ্ববর্তী বসবাসকারীরা।
ফ্যাক্টরির ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা মাহমুদ আলী মোল্লার সাথে ফ্যাক্টরির বৈধতা অপ্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বলেন, মালিক আমিনুর ভেতরে আছে আমি ডেকে দিচ্ছি আপনি তার সাথে কথা বলেন। কিছুক্ষণ পরে আমিনুর কে সাথে নিয়ে আসেন তিনি। মালিক আমিনুরের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন আমাদের সব কাগজপত্র ঠিক আছে। তবে তিনি কাগজপত্র দেখাতে পারে নাই। কাগজপত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, কাগজপত্র ফ্যাক্টরিতে নাই আমাদের অফিসে আছে।
বিষয়টি যশোর জেলা ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক ওয়ালিদ বিন হাবিবকে অবহিত করলে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করার আশ্বাস দেন।
বিএসটিআইয়ের খুলনা বিভাগীয় অফিস প্রধান (পরিচালক) প্রকৌঃ সেলিম রেজা জানান, বিএসটিআই’র অনুমোদন পূর্বে আইন অনুযায়ী সকল কার্য সম্পন্ন করতে হয়। পরে ফ্যাক্টরি পরিদর্শন শেষে অনুমোদন দেওয়া হয়। ফ্যাক্টরিটি সম্পর্কে খোজ নেওয়া হবে।