নাসিরেই সরব সিলেট আওয়ামীলীগ

সিলেট

সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুইবার হেরেছিল আওয়ামী লীগ। সেটি সিলেট আওয়ামী লীগের জন্য বড় ধাক্কা ছিল। সময়টা ২০১৮ সালে।

সেই থেকে সিলেট আওয়ামী লীগে পরিবর্তনের সুর। নেতাদের বিভাজন সিলেট আওয়ামী লীগকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছিলো। নেতায় নেতায় দ্বন্দ্ব, কর্মীরাও বিভক্ত। বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিলেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এরপর আর সময় দেয়া হয়নি। ২০১৯ সালেই করা হয় পটপরিবর্তন। সিলেট আওয়ামী লীগের দায়িত্ব তুলে দেয়া হয় নতুন নেতৃত্বের হাতে।

এরপর থেকে ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হয় আওয়ামী লীগের বন্ধন। সেই বন্ধন এখনো অটুট। সিলেট থেকে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছিলো শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলকে। আর নাসির উদ্দিন খানের হাতে দেয়া হয় সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব। দলের কম্বিশনে এখন সিলেট আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ব নাদেল ও নাসিরের হাতে। কেন্দ্রে যাওয়া নাদেলও সাংগঠনিক দক্ষতা দেখাচ্ছেন। আর সিলেটের রাজনীতিতে থিতু হয়ে পড়া নাসির সিলেট আওয়ামী লীগকে আগলে রেখেছেন। এখানেই শেষ নয়; তিন বছর ঘুরতে না ঘুরতে নতুন সুখবর পেলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান।

এতদিন সিলেট আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতারা ছিলেন জেলা পরিষদের দায়িত্বে। প্রয়াত আবুল মাল আবদুল মুহিতের শাসনামলে জেলা পরিষদের প্রশাসক করা হয়েছিলো প্রয়াত নেতা আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ানকে। তার মৃত্যুর পর সেই দায়িত্ব পালন করেন আরেক বর্ষীয়ান নেতা এডভোকেট লুৎফুর রহমান। জেলা পরিষদ, জেলা আওয়ামী লীগের দুটোরই দায়িত্বে ছিলেন তারা। সর্বশেষ এডভোকেট লুৎফুর রহমানের মৃত্যুর পর জেলা পরিষদের পদ শূন্য হয়। এতদিন ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলছিলো কার্যক্রম। জেলা পরিষদের নির্বাচনে এবার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী। এই মুহূর্তে সিলেট আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে অন্যতম তিনি। শফিক চৌধুরী পড়েছিলেন দোটানায়। নিজের এলাকা সিলেট-২ আসনে নৌকা নির্বাসিত। ফলে তিনি গত দুই টার্ম সাইডলাইনে থেকে নির্বাচন দেখেছেন। এবার জেলা পরিষদে ঝুঁকেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হলেন না। ছাড় দিলেন নিজ কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খানকে। এর বাইরে চার নেতা চেয়েছিলেন দলীয় মনোনয়ন। সবাইকে টপকে নাসির উদ্দিন খানই পেলেন সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের সমর্থন। এখন খেলা ভিন্ন। জেলা পরিষদ নির্বাচনে এখন পর্যন্ত প্রার্থী হয়নি বিএনপি। স্বতন্ত্ররা মাঠে নামছেন। কারা মাঠে- এখনো পরিষ্কার নয়। সিলেট আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নিজের অবস্থান আরও সুসংহত হলো নাসিরের। খুশির সংবাদ পান শনিবার সন্ধ্যায়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিনন্দন বার্তায় ভাসেন তিনি। শুধু আওয়ামী লীগের নেতারা নয়, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অভিনন্দন পেয়েছেন। তবে- নাসির সতর্ক। খুশির সংবাদ পেয়েই ছুটে যান শফিকুর রহমান চৌধুরীর টিলাগড়ের বাসায়। সঙ্গে নেতাকর্মীরা। শফিক চৌধুরী সহকর্মী নাসিরকে দেখে আলিঙ্গন করেন। মিষ্টি মুখও করান। নির্বাচনে পাশে থেকে কাজ করার আশ্বাসও দেন। শুধু শফিক চৌধুরীই নয়, নাসির মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদের মীরবক্সটুলাস্থ বাসায় যান। দোয়া নেন প্রবীণ এ আওয়ামী লীগ নেতার। সেখানে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান সহ-সভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদও। এরপর তিনি মহানগর সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের সঙ্গেও দেখা করেন। নাসির উদ্দিন খান জানিয়েছেন- ‘দল হিসেবে সিলেট আওয়ামী লীগ এখন ঐক্যবদ্ধ। আমরা সবাই একই পরিবারভুক্ত। আমরা বিশ্বাস করি; সব বিজয় আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল। আগামী জেলা পরিষদ নির্বাচনে সিলেটে ফের সেটি প্রমাণিত হবে।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *