নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নাশকতা রুখতে পুলিশকে নজরদারি বাড়াতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি চক্র দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে। সামনে তাদের অপতৎপরতা ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড আরও বাড়বে। এসব অপকর্ম রুখতে আপনাদের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে।

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে দেশে বিএনপি-জামায়াত আগুন সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছিল। জামায়াত-শিবির-বিএনপির লোকেরা প্রকাশ্যে পুলিশকে হত্যা করেছে। সে সময় ২৯ জন পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। তারপরও পুলিশ সদস্যরা জীবন বাজি রেখে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। অতীতের মতো আর কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড যাতে না ঘটে সেজন্য পুলিশ বাহিনীকে সবসময় সজাগ থাকতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশবিরোধী একটি চক্র নানা ষড়যন্ত্র করছে। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কেউ কেউ বিদেশে বসে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে। দেশের মানুষকে উসকানি দিচ্ছে। সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এদের অপতৎপরতা আরও বাড়বে। বাড়তে পারে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড। এসব অপকর্ম রুখতে আপনাদের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনবান্ধব ও চৌকস পুলিশ বাহিনী গড়ার পদক্ষেপ নেন। আর আমাদের সরকার পুলিশের আধুনিকায়নের পাশাপাশি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়েছে। ইতিমধ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ে তুলেছি। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ এখন আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য। এ জন্য আমাদের ‘স্মার্ট পুলিশ বাহিনী’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

সরকার প্রধান বলেন, আপনারা জনগণের সমস্যাকে একান্ত আন্তরিক ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবেন। জনগণের মনে পুলিশ সম্পর্কে যেন অমূলক ভীতি না থাকে, সে জন্য জনগণের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলবেন। আপনারা আইনের রক্ষক, শান্তি শৃঙ্খলার রক্ষক। হুমকি-ভয়ভীতির মুখে অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে কোনোভাবেই আপস করা যাবে না।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করেছি। এই সময় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা কার্যকর করেই আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ; যে বাংলাদেশ হবে জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে স্মার্ট বাংলাদেশ, সেই স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

এর আগে সকাল ১০টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে বার্ষিক পুলিশ প্যারেডের মধ্য দিয়ে পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যান প্রধানমন্ত্রী। তিনি পুলিশের বিভিন্ন কন্টিনজেন্ট ও পতাকাবাহী দলের সুশৃঙ্খল ও দৃষ্টিনন্দন প্যারেড পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন।

এবারের বার্ষিক পুলিশ প্যারেডে অধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দেন খুলনা রেঞ্জের পুলিশ সুপার কাজী মইন উদ্দিন। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন কন্টিনজেন্টের পুলিশ সদস্যরা প্যারেডে অংশ নেন।

২০২২ সালে বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ১৫ জন পুলিশ ও ২ র‌্যাব সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)’, ২৫ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)’ দেয়া হয়।

গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ২৫ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা’ এবং ৫০ জনের হাতে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা’ তুলে দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী পুলিশের ১১৫ সদস্যের এই পদক পরিয়ে দেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *