গত রাতে নেপালে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে অন্তত ৮০ জন নিহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ১৪০ জন।
গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ও নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্টের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
নেপালের জাতীয় ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উপকেন্দ্র ছিল পশ্চিম নেপালের জাজারকোট নামে একটা এলাকা। শুক্রবার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। তবে পার্শ্ববর্তী পশ্চিম রুকুম এলাকাও এই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাঠমাণ্ডু পোস্ট জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৪৪ জনই জাজারকোট জেলার। এ ছাড়া আহত হয়েছে অন্তত ৫৫ জন। এলাকাটির উপ-পুলিশ সুপার সন্তোষ রোকা হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে চিকিৎসার জন্য।
এদিকে, পশ্চিম রুকুম ভূমিকম্পে নিহত হয়েছে অন্তত ৩৬ জন। জেলার উপ-পুলিশ সুপার নমরাজ ভট্টারি প্রাণহানির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, জেলায় ভূমিকম্পে ৮৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের জেলা সদরের সরকারি হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ভূমিকম্পে হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বলেছে, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল প্রচণ্ড শুক্রবার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে জাজারকোটের রামিডান্ডায় আঘাত হানা ভূমিকম্পে সৃষ্ট মানবিক ও বৈষয়িক ক্ষয়ক্ষতিতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং অবিলম্বে উদ্ধার ও ত্রাণ নিশ্চিতের জন্য ৩টি নিরাপত্তা সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন।’
বিগত এক মাসের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো এত শক্তিশালী ভূমিকম্প দেখা গেল নেপালে। হিমালয়ের পাদদেশের দেশ নেপাল বিশ্বের অন্যতম সক্রিয় টেকটোনিক অঞ্চলে অবস্থিত। ফলে এটি ভূমিকম্পের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা।
গত ৩ অক্টোবর নেপালে এক ঘণ্টার মধ্যে চারটি ভূমিকম্প আঘাত হানার পর দিল্লিতেও শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয়। ৪ দশমিক ৬ এবং ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প ২৫ মিনিটের ব্যবধানে আঘাত হানে; পর ১৫ মিনিট পরে ৩ দশমিক ৮ মাত্রা এবং ১৩ মিনিট পর ৩ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে।
২০১৫ সালের এপ্রিলে নেপালে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ৮ হাজার জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায়, আহত হয় ২১ হাজারের বেশি।
শেয়ার করুন