পদবিতে লেখা হয়েছে মো. কার্ডিওলজি, নারী ডাক্তারকে বানানো হয়েছে পুরুষ!

জাতীয়

এক নারী চিকিৎসকের পদবি লেখা হয়েছে মো. কার্ডিওলজি, আরেকজনেরটা লেখা হয়েছে মো. প্যাথলজি। আবার একজন পুরুষ চিকিৎসকের নাম ছাপা হয়েছে শর্মিষ্ঠা ঘোষাল, একজন নারী চিকিৎসককে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে আব্দুল্লাহ আল মুকিত হিসেবে।

শুধু এসব নাম ও পদবিতে ভুল নয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চতুর্থ সমাবর্তন স্মরণিকার অধিকাংশ জায়গায় ডাক্তার-নার্সদের ছবি, নাম, বিভাগ ও পাসের বছরে ছিল ভুল। পাশাপাশি কিছু প্ল্যাকার্ডে ভুল বানানসহ বেশ কিছু অসংলগ্ন বাক্যও চোখে পড়ে। এতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ। এসব ভুলের কারণে এ স্মরণিকা বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে।

গত ১৩ মার্চ রাজধানীর শাহবাগের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানটিও ছিল অব্যবস্থাপনায় ভরা। কনভেনশন সেন্টারে মূল মিলনায়তনে বসার ব্যবস্থা ছিল সর্বোচ্চ ৮০০ জনের অথচ শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন ৬ হাজার। এতে অনেকেই সমাবর্তন স্থানে ঢুকতে পারেননি। অনেকে খাবারও পাননি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া কিছু বিএসএমএমইউএর সমাবর্তনের একটি প্ল্যাকার্ডে ছিল, ৪র্থ সমাবর্তন সব হারিয়ে আমার শুধু দেবার পালা; অন্য একটিতে ছিল, ৪র্থ সমাবর্তন সফলতার গল্প পড়োরাকারণতা; ৪র্থ সমাবর্তন কোটি বাঙালির ভালোবাসা কাঙ্গাল আমি, আমি সব হারাতে পারি, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা হারাতে পারব।

এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে চিকিৎসকেরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। একজন চিকিৎসক বলেছেন, ‘কোন জিনিসটা ঠিকমতো করেছেন আপনারা? ঠান্ডা বিরিয়ানি, প্লাস্টিকের চেয়ারে বসার ব্যবস্থা, অ্যাকোম্পানিকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা, ছবি তোলার মতো কোনো সুনির্দিষ্ট জায়গাও নেই।’ আরেকজন চিকিৎসকের পোস্ট ছিল, ‘আপনাদের লজ্জা বলে কিছু নেই। সমাবর্তনের সঙ্গে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত ছিল, সবার শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।’

সমাবর্তন স্মরণিকা সম্পাদনা করেছেন কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সমাবর্তনের প্রকাশনা ও মুদ্রণ উপকমিটির সদস্যসচিব এস এম ইয়ার-ই-মাহবুব। তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা চিকিৎসকদের নাম ও ছবি যেভাবে পেয়েছেন, সেভাবেই ছেপেছেন। ছবি ও নাম ঠিক করার মতো যথেষ্ট সময় কমিটি পায়নি।

আমরা খতিয়ে দেখছি উল্লেখ করে বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে নয়। বিএনপি-জামায়াতের কেউ কেউ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করে থাকতে পারে। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের চেয়ারে বসতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা বর্তমান প্রশাসনকে হেয় করার জন্য জেনেশুনে ভুল করে থাকতে পারে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *