পুরনো কোরআন শরীফ পুড়িয়ে নতুনগুলো বিতরণ করতে চেয়েছিলেন নুরুর রহমান!

সিলেট

পবিত্র কোরআন শরীফ যদি পড়ার অনুপযুক্ত হয়ে যায় তবে তা পুড়ানোর বিধান আছে ইসলামে। এমন মতামত ব্যক্ত করেছেন মাওলানা শায়েখ আহমদুল্লাহ আদিবা টিভি নামক একটা ইউটিউব চ্যানেলে।

শুধু আহমদুল্লাহই নয়, ইউটিউব খুঁজলে দেশবরেণ্য আরও অনেক আলেমেরও এমন মতামত জানা যাবে।

ঠিক এই কাজটিই করছিলেন সিলেট নগরীর আখিলায়ার ধানুরহাটারপাড়স্থ সিলেট আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চেয়ারম্যাান। কিন্তু সেখানে উপস্থিত কেউ ভুল বুঝে ফেসবুক লাইভের সাথে জড়িতদের কয়েকজনকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত করেন। শুরু হয় সম্প্রচার। মুহুর্তে তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা নগরজুড়ে। এরপর পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়।

সোমবার স্থানীয় জনসাধারণসহ বিভিন্ন সূত্রের সাথে আলাপ করে এসব তথ্য জানা গেছে।

রোববার (৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে আখালিয়ার ধানুপাড়াস্থ আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চেয়ারম্যান ও এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে পবিত্র কুরআন শরিফ পুড়ানোর অভিযোগ তুলে মারধর করেন স্থানীয়রা। পরে স্থানীয় কাউন্সিলর ও থানা পুলিশ তাদের হেফাজতে রাখেন। রাত ১২টার দিকে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের বিশেষ টিম সিআরটি এবং জালালাবাদ ও  কোতোয়ালি থানার অতিরিক্ত পুলিশ এবং র‌্যাব-৯ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেন।

এসময় উত্তেজিত জনতার একাংশ সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। রাত সাড়ে ১২টার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বাধ্য হয়ে ফাঁকা গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। রাত ২টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। উত্তেজিত মানুষ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশের কয়েকজন সদস্যও আহত হন।

সোমবার সারাদিন এ ব্যাপারে বিভিন্ন সূত্রের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কোরআন পুড়ানোর ঘটনাটি অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কোন পরিকল্পিত ঘটনা ছিলনা। কিছু কপি পড়ার অযোগ্য হয়ে পড়ায় সেগুলো ধ্বংস করতেই পুড়াচ্ছিলেন সিলেট আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চেয়ারম্যান নুরুর রহমান। তখন তার কাছে ব্যক্তিগত কাজে এসেছিলেন ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানাধীন বাউলাপাড়া এলাকার ইদ্রিস আলীর ছেলে মাহবুব আলম। তিনিও ফেঁসে যান।

তারা দু’জনে এখনো পুলিশের হেফাজতে। আর সোমবার বিকেল ৩টার দিকে টুকেরবাজার থেকে আটক করা হয়েছে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ইসহাক আহমদকে।

এদিকে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুরুর রহমান জানিয়েছেন, পুরানো কিছু কোরআন শরীফ পুড়িয়ে ফেলতে এবং তার বদলে নতুন কিছু কোরআন শরীফ লোকজনের মধ্যে বিতরণ করতে তার কাছে দিয়ে গিয়েছিলেন তার সহকর্মী শিক্ষক ইসহাক আহমদ। তিনি তাই করছিলেন। কিন্তু কোরআনের কপিগুলো পুড়ছিলনা বা পুড়তে দেরি হচ্ছিল দেখে তিনি আধ লিটার কেরোসিন আনিয়ে পুড়াতে গেলে স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পারেন। তারপর অতিউৎসাহী হয়ে তারা ফেসবুকে লাইভ করতে শুরু করলে উত্তেজনা ছড়ায়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *