এম ইয়াকুব হাসান অন্তর
হবিগনজ প্রতিনিধি
দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা বাড়িয়ে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়ায় খুশি হবিগঞ্জের চা-শ্রমিকরা। এজন্য তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। একই সাথে আন্দোলন চলাকালে জেলা-উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও রাস্তা অবরোধ করে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। শনিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর হবিগঞ্জের ২৪টি বাগানে শ্রমিকদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আজ রোববার শ্রমিকরা কাজে ফিরে যাবেন বলে জানিয়েছেন চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
জানা যায়, গত ৯ আগষ্ট থেকে হবিগঞ্জের ২৪টি চা বাগানসহ সারাদেশের চা বাগানগুলোতে শ্রমিকরা মজুরী বৃদ্ধির দাবীতে প্রথমে কর্মবিরতি ও পরে রাজপথে অবরোধ তৈরী করে। এর মধ্য শ্রম অধিদপ্তর ও মালিক পক্ষ ১২০ টাকা মজুরীর স্থলে আরো ২৫ টাকা বৃদ্ধি করে ১৪৫ টাকা দিতে সম্মতি জানালে চা শ্রমিকরা তা প্রত্যাখান করে আন্দোলন অব্যাহত রাখে। এসময় তারা প্রধান মন্ত্রীর ঘোষনা ছাড়া ঘরে না ফেরার অঙ্গিকারাবব্দ হলে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান একাধিকবার চা শ্রমিকদের কাজে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়েও কোন কাজ হয়নি। অবশেষে শনিবার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনায় চা শ্রমিকরা আস্থা ফিরে পেয়ে আজ রোববার থেকে কাজে যোগদান করবে বলে ঘোষনা দিয়েছে।
চানপুর চা বাগানের ফ্যাক্টরী সর্দার ভাস্কর ভৌমিক জানান, আমরা গত ১৯ দিন ধরে ন্যায্য মুজরি বৃদ্ধির দাবীতে আন্দোলন করে আসছি। প্রধানমন্ত্রী নিজে আমাদের মজুরি বৃদ্ধি করে দেয়ায় আমারা অত্যান্ত খুশি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আমাদের মা। আমাদের শেষ আশ্রয়স্থল একমাত্র তিনি। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় আজ রোববার থেকে শ্রমিকরা কাজে ফিরবে। সন্ধ্যা রানী জানান, আমাদের দুঃখ কষ্ট একমাত্র আমাদের মা শেখ হাসিনাই বুঝে। তাইতো আমরা আমাদের মায়ের ঘোষণা ছাড়া আন্দোলন ছাড়ব না বলে জানিয়েছিলাম। মা ঘোষণা দিয়েছে তাই আমাদের এখন থেকে কাজে ফিরতে কোন বাঁধা নেই। বিশ্বনাথ নায়েক জানান, মজুরি বৃদ্ধি করা হোক এটা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবী ছিল। অবশেষে আমাদের দাবী পূরণ হয়েছে। আমরা আজ রোববার থেকেই স্বতঃস্ফুর্তভাবে কাজে ফিরব।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল জানান, আমাদের মা জননী আমাদের দাবী পূরণ করেছেন। এতে আমরা চা শ্রমিকরা খুশি। রোববার সাপ্তাহিক বন্ধ থাকলেও লস্করপুর ভ্যালীর সকল বাগানেই কাজে ফিরবে শ্রমিকরা। নৃপেন পাল আরো বলেন, আন্দোলন চলাকালে জেলা-উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও রাস্তা অবরোধ করে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করার জন্য আমরা ক্ষমা প্রার্থী। তিনি বলেন, পেটের দায়ে শ্রমিকেরা আন্দোলন করেছেন। এতে বাগান মালিকদেরও ক্ষতি হয়েছে। এ জন্য মালিকেরা যদি শ্রমিকদের সহযোগিতা চায়, তাহলে সহযোগিতা করা হবে।
শেয়ার করুন