প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ১৫ বছরে সিলেটের যত উন্নয়ন

সিলেট

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করতে সিলেটে এসে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তার শাসনামলে সিলেটের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরেছেন। নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে পুনরায় ক্ষমতায় এলে সিলেটবাসীর জন্য নতুন কোন কোন উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে, সে পরিকল্পনাও বর্ণনা করেছেন।

গতকাল বুধবার সিলেট নগরের সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে উপস্থিত নেতাকর্মীসহ সবার প্রতি তিনি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে পুনরায় আওয়ামী লীগকে জয়ী করার আহবান জানান। ।

শেখ হাসিনা জানান, সিলেটকে একটি অত্যাধুনিক শহরে উন্নীত করার লক্ষ্যে ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সিলেট শহর পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু করা যায় কি না তা সমীক্ষার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এসময় এ বিভাগে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।

জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, সিলেটে ১০টি আধুনিক ফায়ার সার্ভিস ও ডিফেন্স স্টেশন তৈরি হয়েছে। ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। সিলেট বাধাঘাট বিমানবন্দর সড়কও উন্নীত করা হচ্ছে চার লেনে। বিমানবন্দরকেও আমরা আরও উন্নত করছি। এ ছাড়া সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক এবং সিলেট-তামাবিল সড়কও চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে।

জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে সাদা পাথর পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের জরিপ কার্যক্রম চলছেÑ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই সড়কটি খুব তাড়াতাড়ি চালু হবে। ২২১ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়ক ছাড়াও ৫৯টি সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। তামাবিল ও শেওলা স্থলবন্দরের কাজ উন্নত করে দিচ্ছি। হাওরে মাছের হ্যাচাপ বা ফিশ ল্যান্ডিং করে দেওয়া হয়েছে। সিলেটে হাইটেক পার্ক ও ৯৫টি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব এবং স্কুলে ইনকিউবেটর সেন্টার করেছি। ছয়টি স্কুলে স্কুল অব ফিউচার এবং সাতটি উপজেলায় ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর থেকে চৌকি দেখি পর্যন্ত চার লেন রাস্তা করার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ওসমানী বিমানবন্দর অবকাঠামো উন্নয়ন সম্প্রসারণের কাজ চলছে। সেখানে ৬টি ই-গেট এবং রিফুয়েলিং স্টেশন স্থাপন করা হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে ঢাকা-সিলেট ও সিলেট-চট্টগ্রাম দুদিকের রেললাইন নির্মাণ ও ট্রেনে উন্নত বগি সংযোজনের কাজ চলছে। নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে চলছে সুরমা, কুশিয়ারা, মনুসহ বিভিন্ন নদীতে ড্রেজিংয়ের কাজ। খালগুলো উন্নত করার কাজও অব্যাহত রয়েছে। টিম ব্রিজের পাশে নতুন সেতু নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। সেটি প্রক্রিয়াধীন আছে।’

সিলেট বিভাগ আওয়ামী লীগের শাসনামলেই করা হয়েছেÑ এ কথা জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘সিলেটে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে। সেটার স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়ে উঠছে ৮০ একর জায়গার ওপর। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সিলেট জেলা হাসপাতালের কাজ প্রায় সমাপ্ত। এ ছাড়া সদর হাসপাতালে ২০০ শয্যার আইসোলেশন, ১০ শয্যার আইসিইউ এবং ১০০ শয্যার বার্ন ইউনিট তৈরি করে দিচ্ছি। শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম করা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সিলেট ওসমানী মেডিকেলে ১০ তলাবিশিষ্ট আধুনিক আউটডোর কমপ্লেক্স. ১০ শয্যাবিশিষ্ট আইসিইউ স্থাপন ও ১৮ তলা ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। ৯০টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়েছে এবং আরও ৬টি নির্মাণের কাজ চলছে। সিলেট দীঘি খাল উন্নত ও দৃষ্টিনন্দন এবং ওয়াকওয়ে নির্মাণের কাজ চলছে। হজরত মানিক কবরস্থানকে তিন হাজার কবর দেওয়ার উপযোগী করে দিচ্ছি। ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য বন্দরবাজার এলাকায় একটি ২৫ তলা ভবন নির্মাণের প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া সিলেটে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সরকার গঠন করলে সিলেট নগরীর কদমতলীতে আধুনিক বাস টার্মিনাল করব। সিলেট সিটি করপোরেশনকে সিসিটিভির আওতায় আনা হবে। ইন্টারনেট আরও উন্নত করা হবে। সব থেকে সুন্দর আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম সিলেটে আমি তৈরি করে দিয়েছি। সিলেট শহরকে যানজটমুক্ত করার জন্য রিংরোড নির্মাণকাজ চলমান। একটি আধুনিক হাউজিং এস্টেট প্রকল্প আমরা হাতে নেব।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *