দুর্নীতির মামলায় আদালতে হাজিরা শেষে সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে কারাগারে নেওয়ার জন্য তোলা হয় প্রিজনভ্যানে। সেখানে ইনু যখন দাঁড়িয়ে থাকেন, তা নিয়ে আপত্তি জানান দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য। তখন তর্কে জড়িয়ে ইনু এই বিষয়ে আদেশ দেখাতে বলেন তাকে।
এর আগে ইনুকে সকাল সাড়ে ৯টার আগে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আনার পর, রাখা হয় মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায়।
তবে শুনানিতে ইনুকে এজলাসে তোলা হয়নি। এদিন দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি। এজন্য ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ আগামী ২ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নতুন দিন ঠিক করে দেন।
দুদকের প্রসিকিউশনের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বেলা সোয়া ১২টার দিকে হাজতখানা থেকে প্রিজনভ্যানে তোলা হয় ইনুকে। প্রিজনভ্যানে উঠে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি।
এ সময় এক পুলিশ সদস্য তাকে বলেন,''দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না।"
এরপর ইনু বলেন,"আমি দাঁড়িয়ে থাকব, কি করবেন আপনি? কি আইনে আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারবো না।"
তারপরও ওই পুলিশের ওই সদস্য ইনুকে বসতে বলেন।
তখন ইনু উত্তেজিত কন্ঠে বলেন, "কি বলছেন আপনি, আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারব না? আপনি অর্ডার দেখান আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারব না। আপনি সিনক্রিয়েট করছেন কে? আপনি অর্ডার নিয়ে আসেন।"
এরপর প্রিজনভ্যানের পেছনে পুলিশ সদস্যরা যেখানে বসে থাকেন সেখানে চলে যান ওই পুলিশ সদস্য।
প্রিজনভ্যানটি আদালত প্রাঙ্গনে যতক্ষণ ছিল, ততক্ষণই ইনুকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ভ্যানের গ্রিলের ফাঁক দিয়ে বাইরে কাউকে খুঁজতে দেখা যায় তাকে। কিছুক্ষণ পর এসে ওই পুলিশ আবার ইনুর পাশে গিয়ে দাঁড়ান।
সরকার পতনের পর গত বছরের ২৬ অগাস্ট হাসানুল হক ইনুকে উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয়। দুদক গত ১৬ মার্চ ইনুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। ২৭ জুলাই তাকে দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মামলায় অভিযোগে বলা হয়েছে, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৪ কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার চারটি ব্যাংক হিসাবে ১১ কোটি ৮৮ লাখ ১৬ হাজার ১৯ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে।
আরেক মামলায় হাসানুল হক ইনুর স্ত্রী আফরোজা হকের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদক বলছে, হাসানুল হক ইনুর উপার্জিত অর্থ দিয়ে তার স্ত্রী সম্পদশালী হয়েছেন।
প্রধান সম্পাদকঃ সারওয়ার খান
সম্পাদকঃ জাকের খান (রুবেল)
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫