ফিলিপাইনে বন্যা ও ভূমিধস : নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭২

জাতীয়

মৌসুমি ঘূর্ণিঝড় নালগায়ে’র প্রভাবে ফিলিপাইনের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে প্রবল বর্ষণ এবং তার ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বান ও ভূমিধসে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭২ জনে পৌঁছেছে। এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে, কারণ এখন পর্যন্ত উপদ্রুত বিভিন্ন এলাকায় নিখোঁজ রয়েছেন ১৪ জন।

এছাড়া আহত অবস্থায় ৩৩ জনকে উদ্ধার করেছেন ফিলিপাইনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীরা। এই বিভাগের মুখপাত্র বেরনার্দো রাফায়েলিতো আলেজান্দ্রো শনিবার দেশটির বেতার সংবাদমাধ্যম ডিজিএমএমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এই দুর্যোগে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ মাগিন্দানাওয়ে। প্রদেশটির বন্যা ও ভূমিধস কবলিত বিভিন্ন এলাকা থেকে এ পর্যন্ত ৬৭ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

এছাড়া পার্শ্ববর্তী সুলতান কুদরত প্রদেশে ২ জন, দক্ষিণ কোতাবাতো প্রদেশে ২ জন এবং ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ ভিসায়াসের বিভিন্ন এলাকা থেকে আরও ৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে ডিজিএমএমকে জানিয়েছেন আলেজান্দ্রো।

ফিলিপাইন সাগরে গত কয়েকদিন ধরে চলা একটি নিম্নচাপ বৃহস্পতিবার ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। ফিলিপিনো আবহাওয়া দপ্তর এই ঝড়ের নাম দিয়েছে ‘নালগায়ে’। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ো আসা নালগায়ে ইতোমধ্যে শনিবার ভোর বেলা আছড়ে পড়েছে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় কাতানদুয়ানেস প্রদেশে।

এই ঝড়ের প্রভাবে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই রাজধানী ম্যানিলা ও তার আশপাশের অঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলসহ সারা দেশে শুরু হয়েছে বর্ষণ ও দমকা হাওয়া। তবে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন প্রদেশে বৃষ্টিপাত ছিল অতিমাত্রায় প্রবল। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণাঞ্চলে এত বর্ষণ এর আগে দেখা যায়নি।

প্রবল বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল এবং সেই ঢলের কাদা, পাথর ও গাছ লোকালয়ে ভেসে আসায় শুক্রবার ভোরের আগেই মাগিন্দানাও, সুলতান কুদরত, দক্ষিণ কোতাবাতো ও ভিসায়াত প্রদেশের বিভিন্ন গ্রাম ও শহরে আকস্মিক বান ও ভূমিধস ঘটে। এই দিন সকাল থেকেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছিলেন।

ইতোমধ্যে অবশ্য মাগিন্দানাওয়ে বৃষ্টিপাত কমে এসেছে। কেন্দ্রীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাগিন্দানাও প্রদেশ শাখার কর্মকর্তা নাসরুল্লাহ ইমাম বলেন, ‘মাগিন্দানাওয়ের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কমে এসেছে। এটা একটা আশার কথা। আমরা প্রদেশের সব স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীদের সহায়তা করতে অনুরোধ জানিয়েছিলাম, তারা সাড়াও দিয়েছেন।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *