করোনাকালে দেশে পরিচিত হয়ে ওঠে অনলাইন গেমস ফ্রি ফায়ার। এ সময়ে এটি জনপ্রিয় হয়েছে উঠেছে তরুণ শিশু-কিশোরদের মধ্যে। এই খেলায় আসক্ত হয়ে পড়ছে সিলেটের বিয়ানীবাজারের স্কুলগামী শিক্ষার্থীরাও।
ফ্রি-ফায়ার বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন গেম। মোবাইল এবং কম্পিউটার দুটোতেই খেলা যায় এই গেম। তবে ফ্রি-ফায়ার কম্পিউটার ভার্সন থেকে মোবাইল ভার্সনটিই বেশি জনপ্রিয়।
অন্যান্য ব্যাটেল রয়্যাল গেমের মতোই ফ্রি-ফায়ার অনেক বেশি হিংস্র গেম। এটি কিশোরদের মধ্যে এক প্রকার ক্ষিপ্ততা সৃষ্টি করে। অধিক মাত্রায় হিংস্রতা থাকায় ১৩ বছরের কম বয়সীদের জন্য এই গেমটি ঝুঁকিপূর্ণ।
ক্ষতিকর বিবেচনায় ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশে অনলাইন গেম পাবজি এবং ফ্রি ফায়ার আদালতের নির্দেশে বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও ভিপিএন সহ অন্যান্য সফটওয়্যার দিয়ে ঠিকই খেলে যাচ্ছে শিশু কিশোররা।
সচেতন মহল বলছেন, এসব গেম আসক্তির কারণে কিশোররা পারিবারিক, সামাজিক অবস্থান থেকে বিচ্যুত হয়ে যাচ্ছে। সাথে পড়াশোনায়ও তাদের মনোযোগ কমছে। খেলার এক পর্যায়ে এসে তারা “ভায়োলেন্ট” হয়ে যেতে পারে। এমনকি এটি আলোচিত আরেক ‘বু হোয়েল’ গেমের মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। কেবল শারীরিক ক্ষতির কারণই নয়, এই গেমগুলো সেই সাথে মানসিক রোগের কারণও হতে পারে।
এই খেলায় আসক্ত বিয়ানীবাজারের এক কিশোর (১৪) বলে, এই খেলার এক একটা চরিত্র কিনতে অন্তত ৪০০-৫০০ টাকা খরচ করতে হয়। এই খেলার জন্য মোবাইলে ইন্টারনেটের ডাটা প্যাকও কিনতে হয়।
২০২২ সালের ১৩ জুন বিয়ানীবাজার পৌরসভার শ্রীধরা গ্রামের আহমদ আল আবী (১৩) নামের ‘ব্লু হুয়েল’ আসক্ত কিশোরের আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে।
আলতাফ হোসেন নামে এক অভিভাবক বলেন, প্রতিদিন রাতে কাজকর্ম শেষ করে বাড়ি যাওয়ার সময় দেখা যায় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্ররা মাঠে, রাস্তার পাশে একত্রিত হয়ে বসে মোবাইলে ফ্রি-ফায়ার নামক গেম খেলে আর বকাবকি করে মোবাইলের সাথে একজন ভারসাম্যহীন মানুষের মতো। আমি এদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত।
সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন, বিয়ানীবাজারের সভাপতি এডভোকেট আমান উদ্দিন বলেন, এসব গেমস খেলে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির মুখে পরতে যাচ্ছে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। অভিভাবকসহ সমাজের সবাই মিলে এ বিষয়ে তদারকি না করলে ভবিষ্যৎ ভয়ংকর হতে পারে। তাই, সবাইকে সচেতন হতে আহ্বান জানান তিনি।
বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)কর্মকর্তা দেব দুলাল ধর জানান, উপজেলার শিশু-কিশোররা পড়াশুনা ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন সময় খেলার মাঠ, স্কুলের বারান্দায়, ব্রীজের উপরে, নির্জন এলাকায় বসে স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে অনলাইনে গেমসে আসক্ত থাকে। বিষয়টি আমার নজরে আসলে অভিযান শুরু করবো।
শেয়ার করুন