বনমালিতে উত্তপ্ত সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটি

সিলেট

ফের বনমালি ভৌমিকে উত্তপ্ত সিলেটের বেসরকারি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লিডিং ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস। দু’জন শিক্ষকের বহিষ্কার আদেশকে কেন্দ্র করে আন্দোলন শুরু হয়েছে। এই আদেশ প্রত্যাহার না করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে অচল করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তারা ক্যাম্পাস ছেড়ে এখন রাজপথে নেমে এসেছেন। মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে।

জানা গেছে, সাবেক আমলা বনমালি ভৌমিক এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেয়ার পর থেকেই মাঝে মাঝে বিভিন্ন ইস্যুতে ক্যাম্পাসের বাতাস উত্তপ্ত হয়ে উঠে। ইতিপূর্বে বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর স্থপতি আজিজুল মাওলার সাথে তার বিরোধের জেরে অচলাবস্থা সৃষ্টির আশঙ্কা কোনোমতে কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়েছিলো। তখন গণমাধ্যমেও তোলপাড়া হয়। আজিজুল মাওলা সংবাদ সম্মেলন ডেকে সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরতে উদ্যোগী হলে পরে ট্রাস্টিদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়েছিলো। এখন আবার বেসামালের দিকে লিডিং ইউনিভার্সিটি।

লিডিং উপাচার্য স্থপতি কাজী আজিজুল মাওলা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন। এই সুযোগে ট্রেজারার বনমালী ভৌমিক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হয়ে গত ১২ অক্টোবর স্থাপত্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রাজন দাশ ও শিক্ষক স্থপতি সৈয়দা জেরিনা হোসেনকে বরখাস্ত করেন।

এই আদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী হয়নি বলে মন্তব্য করেছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র। তাদের দাবি, কারণ দর্শানোর পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ না দিয়েই তড়িঘড়ি করে বহিস্কারের আদেশ দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে ট্রেজারারের বরখাস্ত করার ঘটনাটি আক্রোশমূলক দাবি করে শিক্ষার্থীরা রোববার সারাদিন আন্দোলন করেন।‘হই হই রই রই, বনমালি গেলো কই’ ‘আমাদের স্যার- ম্যাম কই, বনমালি জবাব চাই’ ‘আমলাতন্ত্র নিপাত যাক, শিক্ষার আলো মুক্তি পাক’ ইত্যাদি শ্লোগান দিতে থাকেন তারা। তারা বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান। একপর্যায়ে তারা ট্রেজারের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।

তা না হলে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেয়ারও হুমকি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্র সফররত উপাচার্যের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানিয়েছেন, দুই শিক্ষকের বরখাস্তের আদেশটি ভুয়া। ট্রেজারার যদি ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হয়ে কাজটি করে থাকেন, তা হলে সেটিও বিধিসম্মত হয়নি। বরং তাতে স্পষ্টত আইন লঙ্ঘন হয়েছে।

এদিকে লিডিং ইউনিভার্সিটির সহাকারি রেজিস্ট্রার আলমগীর হোসেন সিলেট প্রতিদিনকে জানান, গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কথা বলেছেন। উপাচার্য না আসা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

সোমবার স্থাপত্য বিভাগের কোনো ক্লাস হয়েছে কি না, তাও নিশ্চিত করতে পারেন নি তিনি।

এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সোমবার বিকেলে সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। মানববন্ধন থেকে তারা আবারও বরখাস্তকৃত শিক্ষকদের পুনর্বহালের জোরালো দাবি জানান। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *