বন্ধের ঝুঁকিতে সিএনজি স্টেশন

জাতীয়

নির্ধারিত লোড শেষ হওয়ায় গত সপ্তাহে বন্ধ হয় মৌলভীবাজারের ৪ টি সিএনজি স্টেশন। এবার সিলেট নগরীর ২টি পাম্প বন্ধ করে দিয়েছে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে একই কারণে হবিগঞ্জের ৮টি সিএনজি স্টেশনের মধ্যে ৪টিই বন্ধ রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে পৃথক অভিযানে সিলেট নগরীর শিবগঞ্জস্থ সুরমা অটো কেয়ার সিএনজি স্টেশন ও সুবিদবাজারস্থ আহমদ সিএনজি ফিলিং স্টেশনটি বন্ধ করে দেয়া হয়। এ ঘটনার পর থেকে বন্ধের ঝুঁকিতে রয়েছে সিলেটের আরো সিএনজি স্টেশন। একদিকে গ্যাসের জন্য পাম্পগুলোতে যানবাহনের দীর্ঘ সারি অপরদিকে লোড শেষ হওয়ার শঙ্কা নিয়ে চলছে সিলেটের সিএনজি স্টেশনগুলো। এদিকে পাম্প বন্ধ না করে লোড বরাদ্দ বাড়ানোর দাবী সিএনজি স্টেশন মালিকদের।

জানা গেছে, চলতি মাসের নির্ধারিত লোড শেষ হওয়ায় গত সপ্তাহে মৌলভীবাজার শহরের কুসুমবাগ এলাকার মেসার্স সাজ্জাদুর রহমান, শহরের শমসেরনগর রোডের এমএফ ও রাজনগরের ডেলটা সিএনজি অ্যান্ড ফিলিং স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে রাজনগর উপজেলার একমাত্র ডেল্টা সিএনজি অ্যান্ড ফিলিং স্টেশনটির বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হওয়ায় ২২ জুলাই থেকে তারাও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বরাদ্দ শেষ হওয়ায় হবিগঞ্জের ৮টি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মধ্যে ৪ টি বন্ধ হয়ে গেছে। এগুলো হচ্ছে শায়েস্তাগঞ্জ সিএনজি ফিলিং স্টেশন, জিএস ব্রাদার্স সিএনজি ফিলিং স্টেশন, মাধবপুরের আল আমিন সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও সুশান সিএনজি ফিলিং স্টেশন। চালু আছে মাধবপুরের সেমকো সিএনজি ফিলিং স্টেশন, নবীগঞ্জের আউশকান্দি সিএনজি অ্যান্ড রিফুয়েলিং স্টেশন, সদরে মেসার্স এম হাই অ্যান্ড কোং সিএনজি লিমিটেড ও বাহুবলে মেসার্স সিটকো সিএনজি লিমিটেড। যেসব স্টেশন চালু আছে তাতে দিনে হাজার হাজার যানবাহনের সারি লক্ষ্য করা গেছে।

এদিকে, যানবাহনে সিএনজি গ্যাস ভরতে না পেয়ে তীব্র জ্বালানী সংকটে পড়েছে মৌলভীবাজারে চলাচলকারী হাজার হাজার যানবাহন। গত কয়েকদিন ধরে মৌলভীবাজার ও রাজনগর উপজেলায় প্রধান তিনটি সিএনজি স্টেশন বন্ধ থাকায় এই অবস্থা তৈরী হয়েছে। মৌলভীবাজারের গ্যাস পাম্প বন্ধ হওয়ায় ঐ এলাকার যানবাহনগুলো পাশাপাশি অন্য জেলার পাম্পে ভীড় করার কারণে লোড শেষের ঝুঁকিতে রয়েছে অন্যান্য পাম্পগুলো। সবগুলো সিএনজি স্টেশনে শতশত যানবাহনের লাইন দীর্ঘ থেকে আরো দীর্ঘতর হচ্ছে।
অপরদিকে মঙ্গলবার এক সাথে নগরীর ২টি সিএনজি স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাকী স্টেশগুলোতে যানবাহনের চাপ বাড়ার কারণে বাড়ছে লোড শেষ হওয়ার ঝুঁকি। আগস্টের ১ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ হওয়া পাম্পগুলোকে বন্ধ রাখতে হবে। ফের ১ আগস্ট থেকে ঐ মাসের লোড বরাদ্দ নিয়ে ফের চালু হবে বন্ধ হওয়া পাম্পগুলো। এদিকে লোড শেষের দিকে থাকা পাম্পগুলো পড়েছে সঙ্কটে। একদিকে যানবাহনের চাপ অপরদিকে লোড শেষের ঝুঁকিতে বেকায়দায় পড়েছেন স্টেশন মালিক কর্তৃপক্ষ। এজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি লোড বাড়ানোর দাবী জানিয়েছেন সিএনজি ফিলিং স্টেশন ওনার্স এসোসিয়েশনের সিলেট বিভাগীয় নেতৃবৃন্দ। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত চিঠি প্রেরণ করেছেন তারা।
জানা গেছে, সিলেট বিভাগে বর্তমানে ৬০ টির মতো সিএনজি ফিলিং স্টেশন চালু রয়েছে। অনুমোদনের সময় প্রতিটি স্টেশনকে মাসের নির্দিষ্ট লোডের জন্য আবেদন করতে হয়। চালুর পর সেই আবেদন অনুসারে এখনও লোড বরাদ্দ দিচ্ছে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ। একাধিকবার মালিক পক্ষের আবেদন করা হলেও এব্যাপারে সরকারী নীতির কোন পরিবর্তন হয়নি। এদিকে দিন দিনি সিএনজি চালিত যানবাহনের সংখ্যা বাড়তে থাকায় স্টেশনগুলোতে চাপ বাড়ছে। কিন্তু লোড বৃদ্ধি না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন মালিক ও যানবাহন চালকগণ। এরমধ্যে বিকেল ৬ টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হচ্ছে পাম্পগুলোকে। এরপরও গ্যাসের চাপ সামাল দিতে পারছেনা পাম্প মালিকগণ। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ^ব্যাপী জ¦ালানী ও গ্যাসের সঙ্কট দেখা দেয়। এর প্রভাব পড়ে বাংলাদেশে। সরকারীভাবে সপ্তাহে একদিন সিএনজি স্টেশন বন্ধ রাখার প্রস্তাব দেয়া হলেও তা এখনও কার্যকর হয়নি। সিএনজি স্টেশন বন্ধ করলে এর প্রভাব পেট্রোল পাম্পের উপর পড়তে পারে সেই আশঙ্কা থেকে আপাতত সপ্তাহ জুড়েই স্টেশন চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সরকার। তবে লোডের ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা থাকায় জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষকে হার্ডলাইনে যেতে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, মৌলভীবাজারের মেসার্স সাজ্জাদুর রহমান সিএনজি ফিলিং সেটশনটি ২০১২ সালে ১ লক্ষ ৬২ হাজার ২৪০ কিউবিক মিটার বরাদ্দ নিয়ে ২০১৪ সালে যানবাহনে গ্যাস সরবরাহ চালু করে। কিন্তু প্রতিবছরই যানবাহন বেড়ে যাওয়ায় এই বরাদ্দে স্টেশন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে তাদের দাবি। বরাদ্দ বাড়াতে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে। কিন্তু বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে কর্তৃপক্ষ বরাদ্দ বাড়ায়নি।

মেসার্স সাজ্জাদুর রহমান সিএনজি ফিলিং সেটশন এর প্রোপাইটর ইফতেখার আহমেদ জানান, ২০১২ সালে যে চুক্তি হয়েছিলো তা দিয়ে আমি ২০১৪ সালে স্টেশনটি চালু করি। ঐসময়ে যানবাহনের সংখ্যার জন্য এই বরাদ্দ সঠিক ছিল। এখন প্রায় ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। যানবাহন কয়েকগুণ বেড়েছে। চাহিদাও প্রায় দ্বিগুণের চেয়ে বেশি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বরাদ্দ আরো বাড়ানোর জন্য আমি ২০১৫ সাল থেকে কিছুদিন পর পর আবেদন করছি কিন্তু বরাদ্দ বাড়ানো হয়না। ফলে গত ১৮ জুলাই গ্যাস বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হওয়ায় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে, মৌলভীবাজার শহরের শমসেরনগর রোডের এমএফ সিএনজি ফিলিং স্টেশনটির বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ৪৮ হাজার কিউবিক মিটার। তাঁদের বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হওয়ায় ২০ জুলাই দুপুর থেকে তাঁরাও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। স্টেশনের স্বত্তাধিকারী ফরহাদ আলী ইমন জানান, বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে আমিসহ সিলেট বিভাগের সিএনজি এন্ড ফিলিং স্টেশনের মালিকগণ ৫শ’ টাকা দিয়ে ফরম কিনে আবেদন করেছি। পরবর্তীতে আমাদেরকে জানানো হয় বরাদ্দ বাড়ানো হবে না।

অন্যদিকে রাজনগর উপজেলার একমাত্র স্টেশন ডেলটা সিএনজি এন্ড ফিলিং স্টেশনটির বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ৬২ হাজার ২৪০ কিউবিক মিটার। তাঁদেরও বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হওয়ায় ২২ জুলাই সকাল ১১টা থেকে তাঁরাও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।

জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেডের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, সিলেট বিভাগে জালালাবাদ গ্যাসের অধীনে আগে প্রতিদিন ৪০০ মিলিয়ন গ্যাস বরাদ্দ ছিল। কিন্তু এখন দেওয়া হচ্ছে ২৬১ মিলিয়ন। তা দিয়েই চলতে হচ্ছে। এর মধ্যে হবিগঞ্জে সবচেয়ে বেশি গ্যাস প্রয়োজন হয়। কারণ গ্যাস পাম্পের পাশাপাশি এখানে রয়েছে শিল্পাঞ্চল। এ জেলায় হবিগঞ্জ আঞ্চলিক অফিসের অধীন গত জুন মাসে ২১ লাখ ২৫ হাজার ৪৫৪ ঘনমিটার গ্যাস বরাদ্দ দেওয়া হয়।


জালালাবাদ গ্যাস টি এন্ড ডি সিস্টেম লিঃ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের অধিকাংশ সিএনজি স্টেশন তাদের গ্যাসের লোডের দিকে নজর না দিয়ে গ্যাস বিক্রি শুরু করে। একাধিকবার নির্দেশনা দেয়া স্বত্তেও কিছু স্টেশন লোড শেষ করে দিয়েছে। ফলে বাধ্য হয়েই ৩১ জুলাই পর্যন্ত সেসব পাম্পগুলো বন্ধ রাখতে হবে। ১ আগস্ট থেকে মাসের লোড নিয়ে ফের পাম্পগুলো চালু হবে। তবে অবশ্যই স্টেশনগুলোকে নিজেদের লোডের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ প্রতিটি স্টেশন কর্তৃপক্ষ তাদের গ্যাসের পরিমাণ জানতে পারে।

এদিকে জালালাবাদ গ্যাস টি এন্ড ডি সিস্টেম লিঃ সিলেট ৪টি আঞ্চলিক বিতরণ অঞ্চলে বিভক্ত। এরমধ্যে আঞ্চলিক বিতরণ অঞ্চল সিলেট পূর্বের আওতাধীন ৭টি সিএনজি স্টেশন রয়েছে। এরমধ্যে মঙ্গলবার শিবগঞ্জের সুরমা অটো কেয়ার সিএনজি স্টেশনটি বন্ধ করা হয়েছে। জালালাবাদ গ্যাস আঞ্চলিক বিতরণ অঞ্চল সিলেট উত্তরের আওতাধীন সিএনজি স্টেশন রয়েছে ৫টি। এরমধ্যে মঙ্গলবার নগরীর সুবিদবাজারস্থ আহমদ সিএনজি স্টেশন বন্ধ করা হয়েছে। জালালাবাদ গ্যাস আঞ্চলিক বিতরণ অঞ্চল সিলেট দক্ষিণের আওতাধীন সিএনজি স্টেশন রয়েছে ১২টা। এগুলোর মধ্যে পর্যাপ্ত লোড রয়েছে বলে জানিয়েছেন আঞ্চলিক বিতরণ অঞ্চল সিলেট দক্ষিণের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। জালালাবাদ গ্যাস আঞ্চলিক বিতরণ অঞ্চল সিলেট পশ্চিমের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সুচয়ন দাসের সাথে দৈনিক জালালাবাদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তার অঞ্চলের আওতাধীন সিএনজি স্টেশনের সংখ্যা জানাতে তিনি অপরাগতা প্রকাশ করে ফোন কেটে দেন। এরপর একাধিকবার তার নাম্বারে কল দেয়া হলেও রিসিভ করেন নি।

সিলেট বিভাগ সিএনজি ফিলিং স্টেশন ওনার্স এসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, সিএনজি স্টেশনের প্রাথমিক অনুমোদনের সময় আমদানীকৃত কম্প্রেসর মেশিনের ক্যাপাসিটির উপর ভিত্তি করে অনুমোদন দেয়া হয়। প্রাথমিক চুক্তি অনুযায়ী দৈনিক ১২ ঘন্টা হিসেবে, মাসিক ২৬ দিনের লোড গণনাপূর্বক ২০% অপচয় বাদ দিয়ে লোড গণনা করা হয়। কিন্তু সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত গ্যাজেট ও নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিটি সিএনজি স্টেশন দৈনিক ২০ ঘন্টা করে পুরো মাস চালু রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সরকারী নির্দেশনা মেনে গ্যাস সরবরাহ করায় বাধ্য হয়ে স্টেশনগুলোকে অতিরিক্ত লোডের ব্যবহার করতে হচ্ছে।
তারা বলেন, দৈনিক ১২ ঘন্টা হিসেবে মাসিক ২৬ দিনের লোড গণনার প্রক্রিয়া অযৌক্তিক এবং দেশের ক্রমবর্ধমান যানবাহন বৃদ্ধির আলোকে জনগণের চাহিদা বিবেচনায় বাস্তবতা বহির্ভূত। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় অন্যান্য গ্যাস বিপণন প্রতিষ্ঠানের ন্যায় জালালাবাদ গ্যাসের আওতাধীন সিএনজি স্টেশন সমূহের লোড দৈনিক ১২ ঘন্টার পরিবর্তে ২০ ঘন্টা এবং মাসিক ২৬ দিনের পরিবর্তে ৩০ দিন বিবেচনা করে বর্তমান অনুমোদিত লোড বৃদ্ধির দৃশ্যমাণ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবী জানান তারা।

এ ব্যাপারে সিএনজি ফিলিং স্টেশন ওনার্স এসোসিয়েশনের সিলেট বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক ও নগরীর সোবহানীঘাটস্থ ও বেঙ্গল গ্যাসোলিন সিএনজি ফিলিং স্টেশনের স্বত্তাধিকারী ব্যারিস্টার রিয়াসাদ আজিম হক আদনান দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, বিগত ফেব্রুয়ারী মাসে বিভাগজুড়ে সিএনজি ও পেট্রোল পাম্প মালিক-শ্রমিকদের তীব্র আন্দোলন শুরু হলে সিলেটের জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ সিএনজি স্টেশনগুলো থেকে নির্ধারিত ফি জমান নেয়ার মাধ্যমে গ্যাসের লোড বৃদ্ধির আবেদন গ্রহণ করে। কিন্তু তারা আজ অবধি এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত জানায়নি। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের কয়েকটি সিএনজি স্টেশনে গ্যাস বিক্রি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে দুই জেলায় জ¦ালানী সরবরাহে অরাজকতা ও অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে সিলেট জেলা ও নগর এলাকায়। কয়েক কিলোমিটার অবধি লাইন ধরে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও গ্যাস সংগ্রহে ব্যর্থ হয়ে অনেক যানবাহনকে ফিরে যেতে হচ্ছে। এর কারণে পেট্রোল পাম্পগুলোতে পেট্রোল, ডিজেল ও অকটেনের চাহিদা ব্যাপকহারে বাড়ছে। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় লোড স্টেশন বন্ধ না করে গ্যাসের লোড বৃদ্ধি এখন সময়ের অপরিহার্য দাবী।

জালালাবাদ গ্যাস আঞ্চলিক বিতরণ অঞ্চল সিলেট উত্তরের ব্যবস্থাপক মো: মনোয়ার হোসাইন দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, সুবিদবাজারস্থ আহমদ সিএনজি স্টেশনসহ উত্তরের আওতাধীন সব স্টেশনগুলোকে লোডের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তাদের পরিমাণ লোড রয়েছে তা নিজেরাই দেখতে পারেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সে ব্যাপারে উদাসীন থাকায় লোড শেষ হওয়ায় স্টেশনটি বন্ধ রয়েছে। আগস্ট মাসের লোড বরাদ্দ পেলে ফের চালু হবে। সবগুলো সিএনজি স্টেশনগুলোকে লোডের ব্যাপারে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ দেশে জ¦ালানী সঙ্কট বাড়তে থাকায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেছেন। সেই আলোকেই আমাদেরকে ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে।
জালালাবাদ গ্যাস আঞ্চলিক বিতরণ অঞ্চল সিলেট পূর্বের ব্যবস্থাপক শংকর চন্দ্র শর্মা দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, মাসের লোড শেষ হওয়ায় শিবগঞ্জের সুরমা অটো কেয়ার সিএনজি স্টেশনকে বন্ধ রাখা হয়েছে। লোডের ব্যাপারে সকর্ত না থাকলে এবং পর্যাপ্ত লোড না থাকলে অন্যান্য স্টেশনের একই পরিণতি হবে। তাই গ্যাস বিক্রির আগে নিজেদের লোডের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *