বন্যা পরিস্থিতিতেও সিন্ডিকেট: শুকনা খাবার-মোমের দাম আকাশচুম্বী

সিলেট

সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। তলিয়ে গেছে সাত উপজেলার নিম্নাঞ্চল। সেইসঙ্গে পানি ঢুকেছে পৌর শহরেও। বানের পানিতে বিধ্বস্ত হয়েছে বসতঘর, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, গবাদিপশু, গোলার ধান-চাল। এমন দুর্দশাগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা জেলায় অসংখ্য। যা বানের পানি নেমে গেলে নির্ধারণ করা যাবে। এমন পরিস্থিতিতে যখন দিশেহারা মানুষ তখন নিমিষেই বাজারগুলো থেকে উধাও হয়ে গেছে মোমবাতি, চিড়া ও সিলিন্ডার গ্যাস। সেইসঙ্গে ঘণ্টা খানিকের ব্যবধানে দামও যেন হয়ে উঠেছে আকাশচুম্বী। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন মানুষ।

এদিকে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে যত বেশি বৃষ্টি হবে তত বেশি বন্যা তার রূপ বদলাবে। তবে এরই মধ্যে দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলায় বন্যায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে নিম্নাঞ্চলের মানুষ। পাশাপাশি বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, মধ্যনগর, ধর্মপাশা ও সবশেষে সুনামগঞ্জ পৌর শহরেও বন্যার পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চলে গ্রামীণ রাস্তাঘাট। সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জেলা সদরের সঙ্গে তাহিরপুর ও দোয়ারাবাজার উপজেলা। এমনকি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে টাঙ্গুয়ার হাওরসহ জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলো। এরই মধ্যে বাজারগুলোতে ঘণ্টা খানিকের ব্যবধানে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে মোমবাতিসহ শুকনা খাবারের দাম। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন মানুষ।

তাহিরপুরের নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দা আলী হোসেন বলেন, ঢলের পানিতে ঘরের সকল আসবাবপত্র তলিয়ে গেছে। কোনো রকম ছেলে মেয়েকে নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছি।

বন্যাকবলিতরা বলছেন, সুনামগঞ্জের এমন পরিস্থিতিতেও সিন্ডিকেট। তাইতো নিমিষেই বেড়ে গেছে মোমবাতি, চিড়া ও সিলিন্ডারের দাম।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি কিছুটা কমে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

স্থানীয় সৈকত বলেন, মানুষের যখন খারাপ অবস্থা তখন সুনামগঞ্জের ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে শুকনা খাবার ও মোমবাতির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, এটা সত্যি দুঃখজনক।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক বলেন, বন্যা মোকাবিলার জন্য এরইমধ্যে আমরা সকল ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। সেইসঙ্গে জেলায় ৫১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পানিবন্দি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিচ্ছেন।

সুনামগঞ্জ-৪ আসনের এমপি মোহাম্মদ সাদিক বলেন, এই দুর্যোগের সময়ে ব্যবসা বড় কথা নয়, মানবকল্যাণ বড় কথা। সেইসঙ্গে ব্যবসায়ীদের কাছে অনুরোধ যেন তারা নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রি করেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *