বর্বর হামলার শিকার কবি রাধাপদ রায়

জাতীয়

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কবি রাধাপদ রায়ের (৮০) ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর আহত হয়ে তিনি নাগেশ্বরী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

গত শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার ভেতরবন্দ ইউনিয়নে নিজ গ্রামে কবির ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় কবি রাধাপদ রায়ের ছেলে জুগল রায় রোববার রাতে পাশের এলাকার অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে নাগেশ্বরী থানায় মামলা করেছেন।

সোমবার সকালে নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আশিকুর রহমান বলেছেন, কবি রাধাপদ সরকার বর্তমানে নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। গত শনিবারের ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত দুই ভাই পলাতক। পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে।

স্বজন, মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে নাগেশ্বরী উপজেলার গোদ্দারেরপাড় এলাকায় নিজ বাড়িতে রাধাপদ সরকার হামলার শিকার হন। পাশের এলাকার দুই ভাই মো. রফিকুল ইসলাম ও কদুর আলী তার ওপর হামলা করেন। তারা কবিকে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান। এতে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেন।

কবি রাধাপদ রায়ের ছেলে জুগল রায় বলেন, ‘পারিবারিক পূর্বশত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে রফিকুল ইসলাম ও কদুর আলী আমার বাবার ওপর হামলা চালান। এ ঘটনায় থানায় মামলা না করার জন্য আমাদের হুমকিও দেন। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কবি রাধাপদ রায় বলেন, ‘রফিকুলের সঙ্গে আমার পূর্বের কোনো শত্রুতা ছিল না। রফিকুলের ভাই কদুর আলীর সঙ্গে ছয় মাস আগে একবার কথা-কাটাকাটি হয়েছিল। সেই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য কদুর আলী তার ভাই রফিকুল ইসলামকে দিয়ে আমার ওপর আক্রমণ করেন। ছয় মাস আগের ওই ঘটনা আমরা ভুলে গিয়েছিলাম। তারা আমাকে একা পেয়ে এভাবে আমার ওপর হামলা চালাবেন, আমি কল্পনাও করতে পারিনি। যেভাবে আক্রমণ শুরু করেছিলেন, এলাকাবাসী না থাকলে সেদিন তারা আমাকে জানেই মেরে ফেলতেন।’

‘স্বভাবকবি’ খ্যাত রাধাপদ রায় পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন, তবে পড়ালেখা কম হলেও আঞ্চলিক ভাষায় তার লেখা গান ও কবিতাগুলো বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

রাধাপদ রায়ের নিজের লেখা আঞ্চলিক ভাষায় শতাধিক গান ও কবিতা আছে। নিজের লেখা গান ও কবিতা মানুষকে শুনিয়ে সামান্য উপার্জনে চলে তার সংসার। আঞ্চলিক ভাষায় তাৎক্ষণিক গান, কবিতা ও ছড়া তৈরি করে মানুষকে মুগ্ধ করায় স্থানীয় লোকজন রাধাপদ রায়কে ‘স্বভাবকবি’ হিসেবে জানেন।

তার লেখা ‘কেয়ামতের আলামত জানি কিন্তু মানি না’ কবিতাটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছিল।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *