বাংলাদেশে মানবাধিকার উন্নয়নে ৩০১ সুপারিশ জাতিসংঘের

বিশ্ব

জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার পর্যালোচনায় বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য ৩০১টি সুপারিশ করেছে ১১০টি দেশ। গতকাল বুধবার রাতে জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ‘ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর)’ বা সর্বজনীন পুনর্বীক্ষণ পদ্ধতির ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে বাংলাদেশের ইউপিআর প্রতিবেদনের খসড়া গৃহীত হয়েছে।

গত সোমবার ইউপিআরের আওতায় বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। ওই পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনসহ মানবাধিকার পরিস্থিতি এগিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করেন।

বাংলাদেশের ইউপিআরের খসড়া প্রতিবেদন তৈরির দায়িত্ব ছিল কিউবা, পাকিস্তান ও রোমানিয়ার ওপর। ওই ট্রয়কার পক্ষে গত রাতের অধিবেশনে বাংলাদেশের ইউপিআরের খসড়া প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন রোমানিয়ার প্রতিনিধি। খসড়া প্রতিবেদন নিয়ে কোনো রাষ্ট্র আপত্তি না করায় তা গৃহীত হয়।

এরপর জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি এম সুফিউর রহমান ইউপিআর ওয়ার্কিং গ্রুপের অধিবেশনে বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইউপিআরে ১১০টি দেশ আলোচনায় অংশ নিয়ে মতামত দিয়েছে। এ ছাড়া ১২টি দেশ আগাম প্রশ্ন পাঠিয়ে পর্যালোচনায় সহযোগিতা করেছে। তিনি তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ তার প্রতিবেদনে মানবাধিকারকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে  আইনি ও বিধিবিষয়ক অগ্রগতিগুলো তুলে ধরেছে। ইউপিআরের প্রতি বাংলাদেশের জোরালো অঙ্গীকার আছে। সব সুপারিশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাংলাদেশ এ বিষয়ে ইউপিআরকে জানাবে।

গুম থেকে রক্ষাবিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদ এবং নিষ্ঠুর শাস্তির বিরুদ্ধে সনদবিষয়ক ঐচ্ছিক প্রটোকল স্বাক্ষর করতে বাংলাদেশকে সুপারিশ করেছে স্পেন। স্লোভাকিয়া বাংলাদেশকে আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার সুপারিশ দিয়েছে।

বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশিদের ভোট ও সরকার নির্বাচনের সামর্থ্যকে সুরক্ষা দেওয়ার সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত, জবাবদিহি ও বিচার নিশ্চিত করারও সুপারিশ করেছে।

অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিলসহ বেশ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা বিলোপ করার সুপারিশ করেছে। নেদারল্যান্ডস ‘লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল, ট্রান্সজেন্ডার, কুইর, ইন্টারসেক্স ও অন্যদের (এলজিবিটিকিউআই প্লাস)’ জন্য দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারাসহ এ সম্পর্কিত অন্যান্য আইন বিলোপ করার সুপারিশ করেছে। দেশটি সাইবার নিরাপত্তা আইন সংশোধন করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতেও বাংলাদেশকে সুপারিশ করেছে। সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশকে আশ্রয়প্রার্থী রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে না দেওয়ার নীতি অনুসরণ করার সুপারিশ করেছে।

সরকারি সূত্রগুলো বলেছে, ৩০১টি সুপারিশের মধ্যে যেগুলো বাংলাদেশ গ্রহণ করবে না সেগুলো ইউপিআর কাঠামোর মাধ্যমে জানিয়ে দেবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *