বাংলাদেশ ভুটান ম্যাচে নজর হামজা-ফাহমিদুল জুটিতে

খেলাধুলা

জামালকে দিয়ে শুরু, জাতীয় ফুটবল দলে এখন ছয় জন প্রবাসী ফুটবলার। সেই কারণেই বইছে সমর্থনের জোয়রা। এই উন্মাদনাকে দারুণ বলছেন অধিনায়ক জামাল। ঘরের মাটিতে অভিষেক হচ্ছে হামজা আর ফাহমিদুলের। ফিফা প্রতি ম্যাচে ভুটানের বিপক্ষে জয়ই একমাত্র লক্ষ্য। বাংলাদেশ ফুটবলের প্রধান ভেন্যু ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে দুই দলের লড়াই শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়।

২০২১ সালের জুলাই থেকে সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার পর এই মাঠে আর প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল হয়নি। বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ-ভুটান ম্যাচ দিয়ে দীর্ঘ ১৬৫৯ দিন পর ‘হোমে’ ফিরছে ফুটবল।

প্রতীক্ষিত পথচলার শুরু, সব মিলিয়ে যেন  নতুন যাত্রার মঞ্চ। সমর্থকদের উন্মাদনা বেড়েছে বহুগুণে। হামজা জামলদের ভিতের উপর দাঁড়িয়ে নতুন প্রজন্মের ফুটবল লিখতে চায় নিজেদের গল্প। প্রতিপক্ষ ভুটান যাদের বিরুদ্ধে অতীতে আছে ব্যথার স্মৃতি, তবে এবার সেই স্মৃতির ওপর ছাই চাপিয়ে, সংবাদ সম্মেলনে  আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে কথা বলছেন কোচ ও অধিনায়ক দুজনেই। কারণ, এবার লড়াই শুধু ৯০ মিনিটের খেলা নয়, বরং ঘরের মাঠে ফুটবলের পুনর্জাগরণের লড়াই।

গোল বলের খেলায় অনিশ্চয়তা থাকবেই আর তাতেই তো লুকিয়ে নাটকীয়তা। ভুটানের সাথে অতীতের হোঁচট বাংলার ফুটবলে এক অন্ধকার অধ্যায় হলেও, আজকের বাংলাদেশ সেই অধ্যায়ের নয়। আজকের দল আশার রঙে রাঙা। গ্যালারিতে লাল-সবুজের ঢেউ, কণ্ঠে গর্জন আর মাঠে একঝাঁক সাহসী যোদ্ধা।

আজকের ম্যাচ শুধু ফিফা প্রীতি ম্যাচ নয়, বরং বাংলার ফুটবলের বুকে লেখা এক নতুন শুরুর দিন। আর সেই শুরুর ইতিহাসে আজ নাম লেখাতে চায় হামজা, তপু, মোরসালিন, রাকিবরা। হাজারো কণ্ঠে গ্যালারিতে প্রতিধ্বনিত হবে, এই দল আমাদের! এ স্বপ্ন আমাদের।

সবুজ গালিচার বুক চিরে ফুটে উঠেছে এক নতুন স্বপ্ন। নতুন রঙে রাঙানো জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ শুধু আরেকটা ম্যাচ নয়, এ যেন অতীতের ক্ষত মুছে দেওয়ার অঙ্গীকার, এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। হাজারো চিৎকারের মাঝে ঘরের মাঠে হামজা প্রথমবার খেলবে, আর অভিষেকের অপেক্ষায় তরুণ তুর্কি ফাহমিদুল যার পায়ে জেগে ওঠার গল্প, যার চোখে ঘরের মাঠে দেশের হয়ে বুক বাজি রেখে রুখে দাঁড়াবার স্বপ্ন।

কারণ ফুটবল শুধু খেলা নয়, এটা আবেগ, এটা আত্মপরিচয়, এটা একটা পতাকার ওড়ার শব্দ। গোল বল ঘোরে- লক্ষ্য বদলায়, গল্পও কখনো নায়ক, কখনো ট্র্যাজেডি। ভুটানের সঙ্গে অতীতে আছে কষ্টের ক্রন্দন, হারের ইতিহাস- কিন্তু আজকের বাংলাদেশ হারে ভাঙে না, আশায় গড়ে ওঠে।

bafufa

দীর্ঘদিন পর গ্যালারিতে ফিরেছে হর্ষধ্বনি, যেখানে বাবা তার ছেলেকে বলে- দেখিস, এবার গোল হবে! যেখানে প্রতিটি চিয়ার, প্রতিটি করতালি—এই দেশের ফুটবল প্রেমের মহাকাব্য। লাল-সবুজ গ্যালারিতে থাকবে নদ কোনো ফাঁকা সিট, আর সেই গর্জনেই যেন ছুটে চলে বল, ছুটে চলে স্বপ্ন।

এই ম্যাচ, এই মুহূর্ত; শুধু ফলাফলের নয়, এটা ফিরে আসার গান, এটায় লুকিয়ে ফুটবলের ধর্ম। কারণ, যখন একটা জাতি একসাথে নিঃশ্বাস নেয়, একসাথে চায় একটি গোল তখন সেটা আর শুধু খেলা থাকে না, তা হয়ে যায় এক মহাকাব্যিক বিজয়ের প্রার্থনা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *