বাজেট একমুখী ও গতানুগতিক: আমীর খসরু

রাজনীতি

প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট একমুখী এবং গতানুগতিক বলে মনে করে বিএনপি। বাজেটের পর বুধবার এক আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী একথা জানান। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাজেট দেয়া উচিত ছিলো। সংবাদ সম্মেলনে, সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী আরও জানান, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে ভরসা পাচ্ছে না।

কেমন হলো ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায় বিএনপি। গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, জুলাই অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্য দূর করার কথা বলা হচ্ছে, এর প্রতিফলন প্রস্তাবিত বাজেটে নেই।

তিনি বলেন, দেশে এখন যেহেতু সংসদ বা গণতান্ত্রিক কোনো সরকার নেই, তাই তাঁরা আশা করেছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য স্থাপনের মাধ্যমে বাজেট প্রণয়ন করবে।

 

তিনি আরও বলেন, সরকার চাইলে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত নিতে পারত। বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী ও তরুণ প্রতিনিধিরাও অংশ নিতে পারতেন। কিন্তু সেটি করা হয়নি।

মূল্যস্ফীতি ৬.৫% নামিয়ে আনার যে লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে সেটা অবাস্তব বলে মনে করেন সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী। একই সাথে শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও কৃষিতে বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক বলেও মন্তব্য তার।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি প্রায় ‘ডাবল ডিজিট’। তা কমিয়ে ৬.৫ শতাংশ করার কথা বলা হচ্ছে, যা বাস্তবসম্মত মনে হয় না। দারিদ্র্য বৃদ্ধির হারে লাগাম টানা যেত। বিশ্বব্যাংকের তথ্য বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ২৭ লাখের বেশি মানুষ আগের চেয়ে বেশি দরিদ্র হয়ে পড়েছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। সেটা এবারের বাজেটে ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ, যা আগের সরকারের মতোই অবান্তর ও কাগুজে প্রবৃদ্ধি। খাদ্যনিরাপত্তা হুমকির মুখে। অপর্যাপ্ত, ত্রুটিপূর্ণ, দুর্নীতিগ্রস্ত সামাজিক সুরক্ষা খাতে পেনশন ও কৃষি ভর্তুকি অন্তর্ভুক্ত করে বরাদ্দ বাড়ানোর চেষ্টা হিসেবে দেখানো হয়েছে। কিন্তু সামাজিক সুরক্ষার জন্য সরকারি বরাদ্দ অপর্যাপ্ত থেকে যাচ্ছে।

আমীর খসরু বলেন, সরকার সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার যে বাজেট ঘোষণা করেছে, সেটি পুরোপুরি সমন্বয়হীন। এতে উৎপাদন কমবে, কর্মসংস্থান কমবে, মানুষের ওপর আর্থিক চাপ বাড়বে। তাছাড়া কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়মিত করদাতাদের জন্য বৈষম্যের সৃষ্টি করবে।

আমীর খসরু আরও জানান, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন যে কোন বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। সেজন্য আগামীতে রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে, বিএনপি কীভাবে দেশ চালাবে তারও একটা ধারণা দেন দলের এই নীতি নির্ধারণী সদস্য।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *