বাড়ছে সুরমা-কুশিয়ারার পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ

সিলেট

ভয়াবহ বন্যায় এখন বিপর্যস্ত সিলেট। প্রায় দুই সপ্তাহের ভয়াবহ বন্যার পর সিলেটে নামতে শুরু করে বন্যার পানি। পানি নামতে থাকায় স্বস্তি ফিরে পাচ্ছিলেন লোকজন। এরই মাঝে ভীতি জাগাচ্ছে ভারী বৃষ্টি। সেই সাথে বাড়ছে সিলেট অঞ্চলের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পানি। এতে করে ফের বন্যার কবলে পড়ায় আশংকা ভর করেছে সিলেটবাসীর মনে। একইসাথে নতুন করে আরও দুর্ভোগ বাড়ছে মানুষের।

গত মঙ্গলবার পর্যন্ত সিলেটে সুরমা, ধলাই, পিয়াইন, সারি ও লোভা নদীর তীরবর্তী উপজেলাগুলো থেকে পানি প্রায় নেমে যায়। কুশিয়ারা তীরবর্তী বন্যাকবলিত দুয়েকটি উপজেলা ছাড়া বাকিগুলো থেকে পানি পুরোপুরি না নামলেও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছিল। এরইমাঝে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে ভীতি জাগে মানুষের মনে। প্রায় ছয় ঘন্টায় অবিরাম ভারী বৃষ্টিতে সিলেট নগরীর রাস্তাঘাটে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বাড়তে শুরু করে নদনদীর পানি। সিলেট নগরীর নিচু এলাকাগুলোর বাসাবাড়িতেও পানি প্রবেশ করতে থাকে। তবে বুধবার সকাল বেলা বৃষ্টি না হওয়ায় এসব পানি নেমে যায়। তবে দিনভর ভারী বৃষ্টির কারণে সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পানি ফের বৃদ্ধি পেয়েছে। যেসব এলাকার রাস্তাঘাটে আগে থেকে বন্যার পানি ছিল, সেখানে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, বুধবার (২৯ জুন) সন্ধ্যা ছয়টায় সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও সকাল থেকে বেশ খানিকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। একইভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে কানাইঘাট পয়েন্টেও। এই পয়েন্টে বিপৎসীমার দশমিক ৮৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে পানি। কুশিয়ারা নদীর আমলশিদ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১.১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শেওলা এবং ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টেও কুশিয়ারার পানি বইছে বিপজ্জনকভাবে।

ফের ভারী বৃষ্টি শুরু হওয়ায় সিলেটের হাওর ও নিম্নাঞ্চলে ফের বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নদনদীর পানি বাড়তে থাকায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফেরা মানুষগুলো ফের বন্যার আশংকায় পড়েছেন। সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী তিনদিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। নিয়মিত বৃষ্টিপাতের কারণে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়া কিছুটা কমে যেতে পারে।

সুনামগঞ্জে মাঝখানে এক সপ্তাহ বিরতি দিয়ে গত সোমবার থেকে আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে সুনামগঞ্জে উজানে ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হওয়ায় নামছে পাহাড়ি ঢল। এতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে মানুষের মধ্যে। এই জেলার ৬৫ হাজার মানুষ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

এদিকে বুধবারও সিলেটের বিভিন্ন বন্যাদুর্গত দূর্গম এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। সেনাবাহিনী ও পুলিশের পাশাপাশি ব্যক্তি ও সংগঠনের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *