পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জে চারটি মানুষের মাথার খুলিসহ কঙ্কালের বিভিন্ন অংশের হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়েছে। ডিবি পুলিশ দেবীগঞ্জ উপজেলার পামুলী ইউনিয়নের লক্ষ্মীরহাট ভূল্লিপাড়া এলাকা থেকে এসব উদ্ধার করে।
এ সময় কঙ্কাল চুরির মূল হোতা রিয়াজুল ইসলাম (৫০) ও রাজু ওরফে মেজাক (৪০) পালিয়ে যান। তবে রিয়াজুল ইসলামের স্ত্রী কমলা বানু পুতুল (৩৮) ও রাজুর স্ত্রী নাসিমাকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অভিযানে ১টি ব্যাগের ভেতরে পলিথিনে মোড়ানো ৪টি মাথার খুলি, ৪টি দাঁতের পাটি, ১৪টি বিভিন্ন অংশের হাড়, ৪২টি হাত ও পায়ের হাড়, ৭৯টি বুক ও পাজরের হাড়, ৯০টি মেরুদণ্ডের ভাঙা হাড়, ৬০টি আঙ্গুলসহ দেহের বিভিন্ন অংশের হাড়সহ মোট ২৯৩টি হাড় উদ্ধার করা হয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সকালে পঞ্চগড় পুলিশ সুপারের কার্যালয় চত্বরে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে। পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা কঙ্কাল উদ্ধারসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।
পুলিশ জানায়, গত কয়েক মাসে পঞ্চগড়ের বোদা ও আটোয়ারী উপজেলার বিভিন্ন কবরস্থান থেকে কাঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটছিল। সংঘবন্ধ কঙ্কাল চোর চক্রকে ধরতে কাজ করছিল পুলিশ। বুধবার রাতে গোপন খবরের ভিত্তিতে রিয়াজুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। পরে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে এসব হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় পঞ্চগড় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক মো. মিজানুর রহমান মিজান বাদী হয়ে রিয়াজুল, রাজু, কমলা বানু, নাসিমাসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে দেবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক লিপন কুমার বসাক বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে মদদদাতাতের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
আজ দুপুরেই আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জামাল হোসেন বলেন, কঙ্কাল উদ্ধারসহ দুই নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ডিবি পুলিশ মামলা দায়ের করেছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারেও অভিযান চলছে।
পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা বলেন, কঙ্কালগুলো বিভিন্ন মেডিকেল গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন সময়ে চক্রটি কালোবাজারে এই কঙ্কালগুলো বিক্রি করে থাকেন। আকারভেদে এর মূল্য প্রায় ১৬ থেকে বিশ হাজার ডলার। আগামীতে অভিযান এবং তদন্ত করে মূলহোতাদের আটকের জন্য কাজ করছে পুলিশ।
শেয়ার করুন