কাল বহুল আলোচিত ১০ ডিসেম্বর। এইদিন রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বলে বহু আগেই ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। মাসখানেক ধরে দেশের রাজনীতিতে আলোচনা চলছে দিনটিকে নিয়ে। তবে সমাবেশটি বিএনপি একা করবে, না জোটকে নিয়ে করবে এনিয়ে ছিল বেশ জল্পনা-কল্পনা। বিএনপির একক কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্তে জোটে কিছুটা টানাপেড়েনের খবরও শোনা যায়।
এদিকে বিএনপির সমাবেশ যত ঘনিয়ে আসে একে একে গ্রেফতার হতে থাকে দলটির শীর্ষ নেতারা। অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয় দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ও। সবশেষ গত রাতে গ্রেফতার করা হয় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে। তবে শেষ পর্যন্ত রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে দলটি।
অপরদিকে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে টানাপোড়েনের খবর শোনা গেলেও রাজধানীতে বিএনপির আগামীকালের সমাবেশ সফল করতে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে গণমাধ্যেমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানান জোটের শীর্ষ এই শরিক দলের সেক্রেটারি জেনারেল (ভারপ্রাপ্ত) মাওলানা এটিএম মা’ছুম। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতারের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে এই বিবৃতি দেন তিনি।
বিবৃতিতে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, ‘সরকার বিরোধী দলকে দমন-পীড়নের অংশ হিসেবে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা দায়ের ও দলীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রাখার যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তারই ধারাবাহিকতায় গভীর রাতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসকে তাদের নিজ নিজ বাসা থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, সরকার সংবিধান স্বীকৃত জনগণের অধিকার বাস্তবায়নের পরিবর্তে হুমকি-ধমকি ও উস্কানীমূলক যে সব ভাষায় বক্তব্য রাখছেন, তা নিন্দনীয়। এগুলো কোনো রাজনৈতিক ভাষা হতে পারে না। হাত ভেঙে দেয়ার বক্তব্য দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেয়া ছাড়া আর কিছু নয়। দেশের জনগণ আজ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। জনগণের এই ঐক্যকে কিছুতেই রুখে দেয়া যাবে না। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার ও হয়রানি করে জনগণকে নেতৃত্ব শূন্য করার কোনো পদক্ষেপই সফল হবে না। এর আগেও নেতৃবৃন্দকে আটক রাখা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও জনগণ সম্মিলিতভাবে রাজপথে নেমে তাদের কাক্সিক্ষত বিজয় ছিনিয়ে এনেছে।
জামায়াতের অবস্থান তুলে ধরে বিবৃতিতে এটিএম মা’ছুম বলেন, আমরা স্পষ্টভাষায় জানাতে চাই, গ্রেফতার, জুলুম-নির্যাতন বন্ধ করে এবং হুমকি-ধমকি ও উস্কানীমূলক বক্তব্য পরিহার করে গ্রেফতারকৃত সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন। বিএনপি ঘোষিত ১০ তারিখের সমাবেশ সফল করতে দিন। অন্যথায় এর দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।’
কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার একদফা দাবি আদায়ের আন্দোলনে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ারও আহ্বান জানান জামায়াত সেক্রেটারি।