ভারতে অবৈধভাবে পালানোর সময় সিলেটের কানাইঘাটের দনা সীমান্তে আটক সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে র্যাবের হেলিকপ্টারে করে সিলেট থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টম্বর) বিকেল ৪টার দিকে তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বিমানবন্দর নিয়ে যাওয়া হয়।
তাকে ঢাকায় পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের কারা উপমহাপরিচালক (ডিআইজি প্রিজন) মো. ছগির মিয়া। তিনি বলেন, ‘আজ মঙ্গলবার উনার সিলেটের আদালতে হাজিরা ছিল। আগামীকাল ঢাকায় একটি মামলায় তার আদালতে হাজিরা আছে। হেলিকপ্টারে পাঠানো প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকার নিরাপত্তার দিক বিবেচনায় তাকে হয়তো র্যাবের হেলিকপ্টারে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।’ বিকেল ৪টার দিকে তাকে পুলিশ বুঝে নেয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এরপর তাকে কখন বিমানবন্দরে নেওয়া হয়েছে, সে তথ্যই ছিল না আমাদের কাছে।’
এদিকে মানিককে বহনকারী হেলিকপ্টার মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে তেজগাঁও পুরান বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশে তাকে সোপর্দ করা হয়েছে।
র্যাবের হেলিকপ্টারযোগে তাকে ঢাকায় আনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইং পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস।
এ ব্যাপারে ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানার ওসি মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান বলেন, ‘বিচারপতি মানিককে ঢাকায় আনা হয়েছে। এস্কর্ট করার জন্য থানার একটি টিম পাঠানো হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘মোহাম্মদপুর থানায় তার নামে কোনো মামলা নেই। হয়তো অন্য কোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হতে পারে। মোহাম্মদপুর থানার টিম শুধু নিরাপত্তার জন্য সেখানে গেছে।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ইসরাইল হাওলাদার বলেন, ‘তিনি সিলেটের মামলায় জামিন পেলেও ঢাকায় তার নামে আরো চার-পাঁচটি মামলা রয়েছে। বলতে পারেন কারাগার বদল হলো। ঢাকার একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি। তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।’
এর আগে সকালে সিলেটের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মানিকের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ আগস্ট রাতে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত থেকে বিচারপতি মানিককে বিজিবি আটক করে। পরদিন তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিলেটের আদালত।
ওই দিন বিকেলে আদালতে তোলার সময় আলোচিত এই সাবেক বিচারপতিকে লক্ষ্য করে উত্তেজিত জনতা হামলা চালায়। এতে তিনি মারাত্মক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে তার অণ্ডকোষে অস্ত্রোপচার করা হয়। পরে ১২ সেপ্টেম্বর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় মানিককে ছাড়পত্র (ডিসচার্জ) দেয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মানিককে হাসপাতাল থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়।
শেয়ার করুন