বিশ্বনাথের পৌর মেয়র মুহিবের বিরুদ্ধে আ’লীগের প্রতিবাদের পাল্টা জবাব দিলেন কাউন্সিলররা

সিলেট

ফারুক আহমদ
স্টাফ রিপোর্টার

সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে গত ১ আগস্ট দেয়া পৌর আওয়ামী লীগের প্রতিবাদের পাল্টা জবাব দিয়েছেন পৌরসভার নির্বাচিত কাউন্সিলররা।

বুধবার (২ আগস্ট) রাতে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে প্রেরিত ‘বিশ্বনাথ পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ রফিক হাসান, প্যানেল মেয়র-২ সাবিনা ইয়াসমিন, পৌর কাউন্সিলর রাজুক মিয়া রাজ্জাক, ফজর আলী, মুহিবুর রহমান বাচ্ছু, বারাম উদ্দিন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর রাসনা বেগম, লাকী বেগম’ স্বাক্ষরিত এক যুক্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তারা ওই পাল্টা প্রতিবাদ দেন।

পৌর কাউন্সিলররা তাদের বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, মঙ্গলবার (১ আগস্ট) বিশ্বনাথ পৌর আওয়ামী লীগের ব্যানারে বিশ্বনাথ তথা সিলেটের সর্বাধিক জনপ্রিয় পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে যে বক্তব্য প্রদান করেছেন তা মিথ্যা ও বানোয়াট উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জ্ঞাপন করছি। বিশ্বনাথে দলমত নির্বিশেষে সকল মহলের কাছে গ্রহনযোগ্য বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের দু’বারের নিবার্চিত উপজেলা চেয়াম্যান এবং প্রথম পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা মেয়র মুহিবুর রহমানের সম্প্রতিক একটি বক্তব্যকে অপব্যাখ্যা করে ‘পৌর আওয়ামী লীগ’ যে বক্তব্য প্রদান করে তা দূর্নীতিবাজদের পক্ষালম্বন ছাড়া আর কিছু নয়। তারা মেয়রের বিরুদ্ধে যে মানহানীকর বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন তা শান্তি প্রিয় বিশ্বনাথবাসীকে দ্বিধাবিভক্ত ও সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ানো ছাড়া আর কিছু নয়। তাদের এসব উদ্ভট বক্তব্য প্রত্যাহার ও এমন কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার আহবান জানান তারা।

কাউন্সিলররা বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, বিশ্বনাথ উপজেলার সম্প্রতি ইউনিয়ন নির্বাচনে ৫টি ইউনিয়নে নৌকার ভরাডুবি নিয়ে মেয়রের যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সত্য। কিন্তু এই বক্তব্য আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কিভাবে গেল তা আমাদের বোধগম্য নয়। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ধরণের বক্তব্য দেওয়া পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগকে দ্বিধাবিভক্ত করা ও উক্ত নেতৃবৃন্দের দেউলিয়াত্বের প্রমান। প্রকৃত পক্ষে মুহিবুর রহমান আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত প্রাণ। তিনি ১৯৭৫-৭৬ সালে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের ও ১৯৮০ সালে প্রথমে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন এবং একই বছরে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী ছিলেন। ১৯৮৮ সালে তিনি বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষ্যধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগকে বুকে লালন করেন বলেই বিশ্বনাথের ৫টি ইউনিয়নে নৌকার শোচনীয় পরাজয়ে নেতৃবৃন্দের ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলেছেন ও আওয়ামী লীগকে আগামীতে ঢেলে সাজানোর আহবান জানিয়েছেন। পৌর নির্বাচনে তার কাছে তথাকথিত নেতৃবৃন্দের ভুলেই ব্যক্তি মুহিবের কাছে নৌকার শোচনীয় পরাজয় ঘটে এবং এই তথাকথিত নেতৃবৃন্দের কারণেই ইউনিয়ন নির্বাচনেও নৌকার শোচনীয় পরাজয় ঘটেছে।

পৌর কাউন্সিলররা বিবৃতিতে আরোও উল্লেখ করেন, বিএনপি নেতা এম. ইলিয়াছ আলীর শাসনামলে বিশ্বনাথে যখন আওয়ামী লীগ নাম কেউ নিতে সাহস পাননি, তখন এই মুহিবুর রহমানই মাঠে নেমে ছিলেন এবং সিলেট জেলায় একমাত্র তিনিই ইলিয়াস আলীর অন্যায় কার্যকলাপের বিরুদ্ধে মাঠে সোচ্চার ছিলেন। নিজেদের ভুল না শোধরিয়ে একজন জনপ্রিয় নেতার বিরুদ্ধে তাদের এই বক্তব্য ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকা’ ছাড়া আর কিছুই নয়। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে তথাকথিত নেতৃবৃন্দের এই বক্তব্য পক্ষান্তরে বিএনপি-জামাত ও দূর্নীতিবাজদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, এছাড়া আর কিছু না। জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগে শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে বিএনপি-জামাতের প্রেতাত্বা তথাকথিত নেতৃবৃন্দের হাত থেকে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *