বিশ্বনাথের লামাকাজীতে ছয়টি গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা : গ্রেফতার ২৭

সিলেট

ফারুক আহমদ
স্টাফ রিপোর্টার

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজীতে (সুরমা সেতু) এডমিরাল এমএ খান সেতুর টোল আদায়কে কেন্দ্র করে রোববার ১৬ অক্টোবর রাতে মির্জাগাঁও এবং পাঁচগাঁও (সাঙ্গিরাই, দোকানীপাড়া, কাজিরগাঁও, কেশবপুর ও মোল্লারগাঁও) গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ২৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার রাতেই তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

সংঘর্ষে ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান ও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে অ্যাসল্ট মামলা দায়ের করা হয়েছে। থানার এসআই বিনয় চক্রবর্তী বাদী হয়ে আটক ২৭ জনসহ ৬৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ২০০/৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করে সোমবার (১৭ অক্টোবর) এই মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ৮।

গ্রেফতার হওয়া আসামীরা হলেন লামাকাজী ইউনিয়নের মির্জারগাঁও গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হকের পুত্র গোলাম মওলা (৪২), আব্দুল হকের পুত্র সালেহ আহমদ (৪০), আলা উদ্দিনের পুত্র আরিফ উদ্দিন (৩২), মৃত ফারুক আহমদের পুত্র শাকরান আহমদ (২০), আব্দুল মতিনের পুত্র আব্দুস সহিদ (৩৫), ফরিদ উদ্দিনের পুত্র আলী আহমদ (৩৫), হেলাল মিয়ার পুত্র শফিল মিয়া (৩২), মইজ উদ্দিনের পুত্র সুমেল আহমদ (২২), রায়হান উদ্দিনের পুত্র হোসাইন (২০), মৃত বিলাল উদ্দিনের পুত্র হাফিজুর রহমান (২৬), শাহনুর মিয়ার পুত্র জাহেদ মিয়া (২৫), জয়নাল আবেদীনের পুত্র জুনেদ আহমদ (১৯), মৃত জরিফ উদ্দিনের পুত্র আবুল খয়ের (৩৫), উবায়দুর রহমান শামীমের পুত্র মাহবুব হাসান জুবায়ের (২২) মনু মিয়ার পুত্র শাহিন মিয়া (২৩), মৃত শমর আলীর পুত্র রফিকুল ইসলাম বাবলু মিয়া (৩৭), মৃত জয়নুল হকের পুত্র কালা মিয়া (৪৫), মৃত আছমত আলীর পুত্র আশিদুল হক (৩০), মরম আলী পুত্র হেলাল হোসেন (২৭), মৃত আসর আলীর পুত্র ইসলাম উদ্দিন (৩২), রাজাপুর গ্রামের রেজু মিয়ার পুত্র নজির মিয়া (১৮), লামাকাজী গ্রামের গোলাম মোস্তফার পুত্র ইকবাল হোসেন (২৪), দোকানী পাড়া গ্রামের তোতা মিয়ার পুত্র আব্দুল হক কাজিরগাঁও গ্রামের মৃত রজব আলীর পুত্র সমুজ আলী (৩০), মৃত তাহের আলীর পুত্র ইমরান আহমেদ (১৯), মৃত রইছ আলীর পুত্র ফয়জুল ইসলাম (৩৫) ও কেশবপুর গ্রামের মৃত আজর আলীর পুত্র এ কে এম দুলাল (৪৯)। গ্রেফতারকৃতদের সোমবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

অ্যাসল্ট মামলা দায়ের ও ২৭ জনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিশ্বনাথ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদুল ইসলাম বলেন, মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

প্রসঙ্গত, রোববার (১৬ অক্টোবর) রাত ৯টায় সিলেটের জালালাবাদ থানার জাঙ্গাইল গ্রামের এক সিএনজি অটোরিক্সা চালক লামাকাজী সেতুর টোল ফাঁকি দিয়ে চলে যেতে চাইলে তাকে টোল আদায়ে থাকা লোকজন থামিয়ে তার কাছ থেকে টোল আদায় করেন।
এসময় ওই ব্যক্তির সাথে টোল আদায়কারী লোকদের বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে টোল ফাঁকি দেওয়া সিএনজি চালকের পক্ষ নিয়ে মির্জারগাঁও গ্রামবাসী এবং টোল আদায়কারীদের পক্ষ নিয়ে অপর পাঁচগাঁও (সাঙ্গিরাই, দোকানীপাড়া, কাজিরগাঁও, কেশবপুর ও মোল্লারগাঁও) সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
দীর্ঘ প্রায় দুই থেকে আড়াই ঘন্টা ব্যাপী চলে উভয় পক্ষে ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পরে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) জালালাবাদ থানার পুলিশদল ও দাঙা পুলিশ গিয়ে সংঘর্ষ থামাতে বিশ্বনাথ থানা পুলিশকে সহায়তা করে। ৭ রাউন্ড টিয়ারগ্যাস ও ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে রাত ১১টার দিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়। সংঘর্ষ চলাকালে ভাংচুর করা হয় শতাধিক দোকানপাট ও অন্তত ২০টি যানবাহন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *