বিশ্বনাথে ‘আল ফালাহ ব্রিক ফিল্ড’ বন্ধের দাবিতে বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে পৌর কাউন্সিলরদের স্মারকলিপি

সিলেট

স্টাফ রিপোর্টার:

সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার কালীগঞ্জ বাজারস্থ ‘আল ফালাহ ব্রিক ফিল্ড’ বন্ধের দাবিতে বিভাগীয় কমিশনারের বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন পৌরসভার ৮ কাউন্সিলর ও জেলা পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র সদস্য।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকালে স্মারকলিপি প্রদান করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট জেলা শাখার কার্যনির্বাহী সদস্য ফজল খান এবং বিশ্বনাথ পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ রফিক হাসান, প্যানেল মেয়র-২ সাবিনা ইয়াসমিন, কাউন্সিলর ফজর আলী, জহুর আলী, মুহিবুর রহমান বাচ্চু, শামীম আহমদ, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর রাসনা বেগম, লাকী বেগম।

স্মারকলিপিতে নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেছেন, বিশ্বনাথ পৌরসভা ৪নং ওয়ার্ডের কালীগঞ্জ বাজারে অবৈধভাবে ‘আল ফালাহ ব্রিক ফিল্ড ও আল আমিন ব্রিক ফিল্ড’ নামে দুইটি ইটভাটা চালিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ দূষণ করছে ও কৃষি জমির মাটি উত্তোলন করে কৃষির মারাত্মক ক্ষতি করে আসছেন। পাশাপাশি যে স্থানে এই দুইটি ইটভাটা স্থাপন করেছেন তার মধ্য দিয়ে বিশ্বনাথ-জগন্নাতপুর মেইন সড়ক রয়েছে এবং প্রায় ২০-৪০০ (বিশ-চার শত) মিটারের মধ্যে ১টি আল ইশাদ লতিফিয়া মাদ্রাসা, ২টি হাফিজি মাদ্রাসা, ১টি মহিলা মাদ্রাসা, ১টি জনকল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়, ১টি কালিগঞ্জ বাজার,  ৬টি গ্রাম (দতা, একাতিরা, ধুপাকলা, গন্ধার কাপন, আলাপুর, মৌজপুর)’সহ আশপাশে আরো ৪/৫টি গ্রাম রয়েছে। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৫-১৭শত শিক্ষার্থী রয়েছে। এতে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে আমাদের এলাকার প্রত্যেকের সুস্থ জীবন। আমাদের এলাকার বাতাস দূষিত হওয়ার কারণে সিংহভাগ মানুষের হার্টের সমস্যা ও চর্মরোগ’সহ নানান রোগে ভোগছি এবং ফসলি গাছে ফসল আসে না।
স্মারকলিপিতে নেতৃবৃন্দ আরোও উল্লেখ করেছেন, আমরা এই দুইটি ইটভাটা বন্ধের দাবি জানিয়ে অনেক দিন ধরে ইটভাটার কতৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। পত্র-পত্রিকায় অনেক লেখালিখি হয়েছে, মানববন্ধন করেছি, সর্বশেষ বিশ্বনাথ পৌরসভা বরাবরের লিখিত অভিযোগ করেছি। ইতিমধ্যে ‘আল আমিন ব্রিক ফিল্ড’ প্রতিষ্ঠানের মালিক নিজের ইটভাটা বন্ধ করে দিয়েছেন। কিন্তু আল ফালাহ ব্রিক ফিল্ড চলমান থাকায় বিশ্বনাথ পৌরসভার আইন শৃঙ্খলা মিটিং এ উক্ত ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য রেজুলেশন পাস করেছেন। বিশ্বনাথ পৌরসভা ২০২৩-২৪ সনের ট্রেড লাইসেন্স না দিয়ে আইনগত ভাবে ইটভাটা অপসারণের জন্য পর পর ৩টি নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং পৌরসভার পক্ষ থেকে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নিকট প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইটভাটা স্বত্বাধিকারী প্রভাবশালী বিশ্বনাথ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজুল হক আইনের তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে নিজের ইটভাটা পরিচালনা করে যাচ্ছেন এবং আমরা যারা ইটভাটা বন্ধের আন্দোলন করছি তাদেরকে নানান ভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন। এমনকি আমাদেরকে কটাক্ষ করে গত ২০ নভেম্বর মদখোর, ইয়াবা খোরদের জড়ো করে গরু জবাই করে ধুমধামে ইট পোড়ানোর জন্য আয়োজন করেন। এইসব মদখোর-সন্ত্রাসী দিয়ে যেকোনো সময় আমাদের উপর অতর্কিভাবে হামলা করাতে পারেন অথবা মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদেরকে ফাঁসাতে পারেন। ইটভাটা মালিক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ সরকারের ইটভাটা নীতিমালা আইন ২০১৩ বঙ্গ করেছেন। সরকারি গেজেট ২০২০ এর শর্ত বঙ্গ করেছেন। ২০২২ এর পরিবেশ মন্ত্রনালয়ে প্রজ্ঞাপন অমান্য করেছেন। তাই সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে অবৈধভাবে চলমান ‘আল ফালাহ ব্রিক ফিল্ড’ বন্ধ করতে দ্রুত প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে বিভাগীয় কমিশনারের নিকট দাবি জানান তারা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *