স্টাফ রিপোর্টার:
‘অনিয়ম-দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা’ অভিযোগে অনাস্থা প্রস্তাব আনার পর এবার সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আরশ আলী গণির বিরুদ্ধে ভোট দিলেন পরিষদের সদস্যরা।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে পরিষদের মিলনায়তনে চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতেই চলে অনাস্তা প্রস্তাবের ‘পক্ষে-বিপক্ষে’ ভোট গ্রহন। পরিষদের ১৩ সদস্যের মধ্যে ৯ জন সদস্য নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ওই ৯ জন সদস্যই অনাস্তা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। বিপক্ষে কোন ভোট প্রয়োগ না করায় পরিষদের চেয়ারম্যান আরশ আলী গণি সূচনীয়ভাবে পরাজিত হন।
অনাস্তা প্রস্তাবের ‘পক্ষে-বিপক্ষে’ ভোট গ্রহনের পূর্বে পরিষদের চেয়ারম্যান আরশ আলী গণির অনুপস্থিতিতে সদস্যদের নিয়ে এক সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই সমঝোতা বৈঠকে বিষয়টি সমাধান না হওয়ার ফলে চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতেই অনুষ্ঠিত হয় ভোট গ্রহন। ভোট গ্রহন চলাকালে পরিষদের ১৩ জন ভোটারের মধ্যে ৯ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করলেও চেয়ারম্যান’সহ বাকি ৩ জন ভোটার সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ফখরুল ইসলাম নামের এক জন ভোটার (পরিষদের মেম্বার) প্রায় দেড় বছর ধরে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন, রয়েছেন লন্ডনে। ভোট গ্রহন শেষে বিকেল বেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুনন্দা রায় তার নিজ কার্যালয়ে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন।
‘খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের লিখিত অভিযোগের’ তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন উপজেলা প্রাণীসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবুল বাশার জুয়েল। আর এই অনাস্তা প্রস্তাবের ‘পক্ষে-বিপক্ষে’ ভোট গ্রহনের পূর্বে ভোট কেন্দ্রে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েনের ব্যবস্থা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুনন্দা রায়।
এব্যাপারে নিজের বিরুদ্ধে পরিষদের সদস্যদের আনা সকল অভিযোগ ‘মিথ্যা-বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত’ দাবী করে অভিযুক্ত উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরশ আলী গণি বলেন, এবিষয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যে নির্দেশনাই আসবে একজন প্রবাসী হিসেবে তিনি তা মাথা পেতে মেনে নেবেন।
বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুনন্দা রায় বলেন, ভোটের ফলাফল সিট’সহ বিষয়টি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে জানানো হবে। তিনিই (জেলা প্রশাসক) এবিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।
সমঝোতা বৈঠক ও ভোট গ্রহন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণীসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবুল বাশার জুয়েল, উপ-সহকারী প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মণি চন্দ্র দাস, এলএফএ কাউসার আহমদ ও নির্বাচন অফিসের কম্পিউটার অপারেটর রাজন দেব’সহ পরিষদের সদস্য-সদস্যারা।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের গত ২০ অক্টোবর উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সৌদি আরব প্রবাসী আরশ আলী গণির বিরুদ্ধে ‘অনিয়ম-দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা’র অভিযোগ এনে অনাস্থা আনেন একই পরিষদের ৯ জন সদস্য। সেই অনাস্তা প্রস্তাবের আবেদনের তদন্ত শেষে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে সমঝোতা বৈঠক ও প্রস্তাবের পক্ষে-বিপক্ষে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়।
শেয়ার করুন