ফারুক আহমদ
স্টাফ রিপোর্টার
সিলেটের বিশ্বনাথে ‘জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া মাদ্রাসা’র সামন দিয়ে ‘সড়ক ও জনপদ (সওজ)’র জায়গায় সরকারি রাস্তা নির্মাণে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অহেতুক বাঁধা এবং ফুটপাতের অবৈধ ভাসমান দোকানে চাঁদাবাজি বন্ধ ও ফুটপাত দখলমুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২২ মে) বিকেলে পৌরবাসির ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে জনস্বার্থে দ্রুত রাস্তাটি বাস্তবায়নের দাবী জানান নেতৃবৃন্দ।
সভায় বক্তারা বলেন, জায়গা সরকারি, রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে সরকারি টাকায়। তারপরও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সাথে বার বার আলাপ-আলোচনা করে জনস্বার্থের রাস্তার কাজ শুরু করি। সম্প্রতি জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা শিব্বির আহমদ মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের সাথে নিয়ে এসে সরকারি রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। অথচ তারা মাদ্রাসার নাম ব্যবহার করে সওজের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে তাতে মার্কেট নির্মাণ করে ভাড়া আদায় করছেন। এর হিসাব কেই জানেন না। সওজের জায়গায় দোকান বসিয়ে প্রতিদিন তারা টাকা তুলছেন। এরপরও জনস্বার্থের রাস্তা নির্মাণ কাজে তারা কোন আইনে, কোন অধিকারে, কাদের মদদে বাঁধা দিচ্ছেন পৌরবাসী তা জানতে চান। রাস্তা নির্মাণে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের ওই অবৈধ বাঁধা প্রদানের বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষসহ প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বক্তারা আরো বলেন, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার সাথে যারা জড়িত ছিলেন তাদের নাম বাদ তিনি মাওলানা শিব্বির আহমদ নিজের মরহুম পিতাকে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা বানিয়ে সাইন বোর্ড লাগিয়েছেন, আমরা এরও কোন প্রতিবাদ করিনি। কারণ প্রতিষ্ঠানের সাথে আমাদের কোন শত্রুতা নেই। তিনি মাদ্রাসায় থাকা সিনিয়র শিক্ষক ও যোগ্য শিক্ষকদের বাদ দিয়ে পিতার পরে কিভাবে মুহতামিম (অধ্যক্ষ) হলেন তা বিশ্বনাথবাসী জানেন না। কিছু দিন পূর্বে মাদ্রাসা ছাত্র সালমানের লাশ উনাদের বাসার সামন থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। মাদ্রাসা ছাত্র সালমানকে ‘হত্যা ও বলাৎকার’ করার অভিযোগে নিজেদের দুলাভাইসহ মাওলানা শিব্বির জেলে কেটেছেন। আমরা জানতে পারি অনেক টাকার বিনিময়ে ওই হত্যা মামলা আপোষ-মিমাংশ শেষ হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- উহার পিতা মাওলানা আশরাফ আলী মাদ্রাসার একজন সামান্য বেতনভূক্ত শিক্ষক ছিলেন, উনার মৃত্যুর পর কিভাবে উনার পরিবার কোটি কোটি টাকার মালিক হলেন। মাদানিয়া ট্রাস্টের টাকা কাদের উন্নয়নে ব্যয় হয় তা জানেন না কেউ। সর্বোপুরী যাদের পরিবারের মানুষ এতো সমস্যার সাথে জড়িত, তারা কেন সরকারি রাস্তা নির্মানে বাঁধা দিবেন। পৌরবাসী এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত জনস্বার্থের ওই রাস্তা বাস্তবায়নের দাবী জানান।
বিশ্বনাথ পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফজর আলীর সভাপতিত্বে ও প্যানেল মেয়র-১ রফিক হাসানের পরিচালনায় মানববন্ধন পূর্ব আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মতিন, উপজেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ, বিশ্বনাথ ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আব্দুস শহিদ, উপজেলা পরিবহন শ্রমিক ঐক্য জোটের উপদেষ্ঠা ময়না মিয়া, ব্যবসায়ী ওয়ারিছ খান, সংগঠক আলী হোসেন ইংরেজ। এসময় মানববন্ধনে পৌরসভার কাউন্সিলর বাহরাম উদ্দিনসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
শেয়ার করুন