সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভা নির্বাচনে সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিক চৌধুরীসহ তিন নেতার এলাকা বিশ্বনাথে নৌকার ভরাডুবি করে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান। আর বাকি দুই নেতা হচ্ছেন অ্যাডভোকেট শাহ ফরিদ আহমদ ও অ্যাভোকেট শাহ মোশাহিদ আলী। তাদের মধ্যে শাহ মোশাহিদ আলীর বাড়ি হচ্ছে পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে। মোশাহিদ আলীর সেই কেন্দ্রতেও নৌকার পরাজয় হয়েছে। আ’লীগের ঘরদ্বন্ধের কারণে নৌকার এমন ভরাডুবি হয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন। সর্বত্র চলছে এমন আলোচনা-সমালোচনা।
শফিকুর রহমান চৌধুরীর নিজ পৌরসভায় নৌকার এমন ভরাডুবিকে মেনে নিতে পারছেনা আ’লীগের অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীরা। তারা প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতে না পারলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নৌকার পরাজয়ের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। আগামি জাতীয় সংসদস নির্বাচনে এসকল নেতৃস্থানীয় নেতারা নৌকার পরাজয়ের মাশুল দিতে হবে বলে মনে করছেন নৌকা মাঠে কাজ করা পরাজিত নেতাকর্মীরা।
বুধবার (২ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশ্বনাথে প্রথম পৌরসভা নির্বাচন। নির্বাচনে আ’লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী উপজেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদককে পরাজিত করে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও সাবেক দুই বারের উপজেলা চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান। তিনি ২০টি ভোট কেন্দ্রে ৮হাজার ৪৭৪টি ভোট পেয়ে বেসরকারীভাবে বিজয়ী হয়েছেন। আর তার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী ফারুক আহদ নৌকা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৩হাজার ২৬৩টি। শুধু তাই নয়, বিএনপির ঘরানার বহিস্কৃত তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকেও এই নির্বাচনে হার মানিয়েছেন মুহিব।
তবে নৌকার এমন বড় পরাজয়কে শফিক চৌধুরীসহ সিনিয়র নেতাদের দায়ি করছেন অনেক নেতারা। তাদের মতে ফারুক আহমদ নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার পর অনেক নেতাকর্মীদের সমন্বয় করা হয়নি। তাই সল্পসংখ্যাক নেতাকর্মী নিয়ে নিস্ফল প্রচার প্রচারণা করা হয়েছে। কিন্তু আ’লীগের নিস্ফল প্রচারণায় তাদের ঘরদ্বন্ধের বিষয়টি সাধারণ মানুষ বুঝে নেন। ফলে অনেক পদধারি নেতারা ধীরে ধীরে মুহিবুর রহমানের সাথে চলে যান।
উপজেলা আ’লীগের সহ সভাপতি ফখরুল আহমদ মতসিনসহ অনেক নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পাওয়ার পর তাদেরকে কেউ সমন্বয় করেন নি। তাই তারা মাঠে কাজ করার সুযোগও পাননি।
এব্যাপারে জানতে চাইলে শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, এই নির্বাচন নৌকার পরাজয়ের বিষয় নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধিনে অবাদ, সুষ্টু ও নিরপেক্ষ এই নির্বাচনে ভোটাররা স্বাধীন মতো তাদের ভোট প্রয়োগ করেছে সেটা তার প্রমান। আর এটাই প্রমান করেছে ওসমানীনগর উপজেলা ও বিশ্বনাথ পৌরসভা নির্বাচন।
শেয়ার করুন