স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটের বিশ্বনাথে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি যুক্তরাজ্য প্রবাসী সুহেল আহমদ চৌধুরী ‘কাপ-পিরিচ’ প্রতীকের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে মুহিবুর রহমান সুইট ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোছা. করিমা বেগম বিজয়ী হয়েছেন।
অবশেষে রাত সাড়ে ১২টার দিকে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন সহকারী রিটার্নিং ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা স্বর্ণালী চক্রবর্তী। বোধবার (৮ মে) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৭৪টি ভোটকেন্দ্রের ব্যালট এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
ওই দিন রাতে বেসরকারি ভাবে ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, চেয়ারম্যান পদে সুহেল আহমদ চৌধুরী ১৩ হাজার ৩২২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমদ ‘আনারস’ প্রতীকে পেয়েছেন ১২ হাজার ৯৬৮ ভোট। যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিশ্বনাথ স্পোটর্স ডেভোলাপমেন্ট ট্রাস্ট ইউকের যুগ্ম সম্পাদক যুক্তরাজ্য প্রবাসী সেবুল মিয়া ‘দোয়াত-কলম’ প্রতীক নিয়ে ১১ হাজার ৬৯৯ ভোট ও বিশ্বনাথ পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আলতাব হোসেন ‘টেলিফোন’ প্রতীকে ৮ হাজার ৭০৩ ভোট, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক যুক্তরাজ্য প্রবাসী গৌছ খান ‘কৈ মাছ’ প্রতীকে ৫৭৮৮, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও যুবলীগের সহ সভাপতি প্রবাসী শমসাদুর রহমান রাহিন ‘শালিক’ প্রতীকে ২১৫০, উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও যুক্তরাজ্যের ডরসেট আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবাসী আব্দুল রোশন চেরাগ আলী ‘ঘোড়া’ প্রতীকে ১৬৪৪, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী এনাম ‘মোটর সাইকেল’ প্রতীকে ৯৪১, যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা সফিক উদ্দিন ‘উট’ প্রতীকে ৫১৮, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী আকদ্দুছ আলী ‘হেলিকপ্টার’ প্রতীকে ৪০৩ ভোট পেয়েছেন।
জানা গেছে, রাত ৯টার ভিতরেই উপজেলার ৭৪টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৬৫টির ফলাফল মিলে যায়। কিন্তু এসময় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে খাজাঞ্চি ইউনিয়নের নোয়ারাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইটিং অফিসার মো. বিল্লাহ হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসেন।
অভিযোগপত্রে তারা উল্লেখ করেন- নোয়ারাই কেন্দ্রে ভোট গণনা শেষে প্রিজাইটিং অফিসার তড়িঘড়ি করে ফলাফলের কাগজ কোনো এজেন্টের স্বাক্ষর না নিয়ে চলে আসেন। কিন্তু রাত ৯টা পর্যন্তও তিনি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় না পৌঁছালে কর্মকর্তা তাকে পুলিশ পাঠিয়ে নিজ বাসা থেকে ডেকে আনেন। আসার পর তিনি নোয়ারাই কেন্দ্রের রিজাল্ট শিট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে দিলে দেখা যায়- এতে কোনো এজেন্টের স্বাক্ষর নেই।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, কাগজে ভোটের সংখ্যা এবং গণনা শেষে কেন্দ্রে ঘোষণার সংখ্যার মধ্যে তারতম্য রয়েছে।
এসব বিষয় নিয়ে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কার্যালয়ে তিনি সকল চেয়ারম্যান প্রার্থীকে নিয়ে সমাধানের জন্য আলোচনা করে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বনাথ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৮৮হাজার ৩৭। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯৭ হাজার ৬ ও নারী ভোটার ৯১ হাজার ৩১জন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটাররা সর্বমোট ভোট প্রয়োগ করেন ৬০ হাজার ৪১৯, বৈধ ভোটের সংখ্যা ৫৮ হাজার ১৩৬, বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ২ হাজার ২৮৩, প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৩২% শতাংশ।
শেয়ার করুন