বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের আয় নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করে ক্রিকট্র্যাকার নামে ভারতের একটি অনলাইন ক্রীড়া পোর্টাল। যেটি নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় চলছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহদের মতো বর্তমান তারকাদের আয়ের পাশাপাশি মাশরাফির সম্পদ আয়ের ফিরিস্তিতে উল্লেখ করা হয়। তাতে বলা হয়, সাবেক এই অধিনায়ক বর্তমানে ৫১০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক।
খবরটি সামনে আসার পর গতকাল রাতে সেটিকে ‘উদ্ভট নিউজ’ আখ্যায়িত করে প্রতিবাদ জানান সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান জাতীয় সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা। ১৮ ঘণ্টা পর ওই খবরের প্রতিবাদ জানিয়ে দ্বিতীয় পোস্ট করেছেন তিনি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের ওই পোস্টটি তুলে ধরা হলো।
তিনি লেখেন ‘ক্যারিয়ারের শুরু থেকে অসংখ্য সাংবাদকর্মীরে সঙ্গে মিশেছি, তাদেরকে কাছ থেকে দেখেছি। এমন অনেক সাংবাদিক আছেন, ক্রিকেট তাদের কাছে শুধু পেশাই নয়, আরো বেশি কিছু। অনেক সীমাবদ্ধতা, ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক অনিশ্চয়তা মধ্যেও অনেকেই অনেক কষ্ট করে কাজ করে যান ক্রিকেট খেলাকে ভালোবেসে, দেশের ক্রিকেটকে ভালোবেসে। তাদের প্রতি আমার সম্মান ও শ্রদ্ধা সবসময়ই ছিল, আছে ও থাকবে।’
তিনি আরো লেখেন, ‘আমাকে নিয়ে প্রকাশিত খবরটির জন্য এখানে দুঃখপ্রকাশ করা হয়েছে, অবশ্যই তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। তবে সব মিডিয়ারই বোঝা উচিত, আমাদের পরিবার আছে, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব আছে, সামাজিক মর্যাদা ও আত্মমর্যাদা আছে। স্পর্শকাতর কোনো খবর প্রকাশের আগে তাই যতটা সম্ভব নিশ্চিত হওয়া উচিত।’
মাশরাফি লেখেন, ‘আর আমার বিরোধী মতের যে ভাইরা মনে করছেন, এসব উড়ো খবরকে পুঁজি করে আমার সম্মানহানি করবেন, তাদেরকে বলব, আপনারা কেবল সময় নষ্টই করছেন। রাজনীতির এই বিশাল জগতে মাশরাফি তুচ্ছ ও নগন্য একজন। আমার দল এত ঐতিহ্যবাহী এবং এতটা বড়, সেখানে আমি খুবই ক্ষুদ্র ও সামান্য একজন। আমার মতো একজনের পিছু লেগে থেকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখা মানে আকাশ-কুসুম কল্পনা। আমি আমার পথেই থাকব। আপনারা নিজেদের পথটা খুঁজতে থাকুন!’
সোমবার ‘মিথ্যা নিউজের’ প্রতিবাদ জানিয়ে প্রথম পোস্টে মাশরাফি বলেন, ‘ভিনদেশী কোনো হাবিজাবি স্বস্তা ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজ তাদের মনগড়া যা ইচ্ছা লিখতেই পারে। সেসবকে পাত্তা দেওয়ার কিছু নেই। কিন্তু তাদেরকে সূত্র ধরে নিয়ে যখন আমাদের দেশের নানা ওয়েবসাইট যা ইচ্ছা তাই লিখে দেয়, তখন দুঃখ লাগে বটে! দেশের একজন মানুষকে নিয়ে লেখা হচ্ছে, আপনারা চাইলেই তো খোঁজ-খবর নিতে পারেন। তা না করে উল্টো তাদের উদ্ভট নিউজের সূত্র ধরে আপনারা নিউজ করছেন। সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার ন্যূনতম চর্চা নাহয় করলেন না, অন্তত নিজেদের এতটা স্বস্তা হিসেবে তুলে ধরতেও তো বিবেকে নাড়া দেওয়া উচিত…!’
এদিকে ক্রিকট্র্যাকার প্রকাশিত ওই নিউজের কোনো বিশ্বাসযোগ্য তথ্যসূত্র দিতে পারেনি। সে কারণে নিউজটির দায়ভার নেয়নি তারা। অবশ্য খবরটি প্রকাশের কিছুক্ষণ পরেই ক্রিকট্র্যাকার নিজেদের ওয়েবসাইট থেকে খবরটি সরিয়েও নেয়।