বেড়েছে তেলের দাম. বিক্রি হচ্ছে শখের বাইক

জাতীয়

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণার পর পরই অনলাইনে মোটরসাইকেল বিক্রির হিড়িক পড়েছে। ফেসবুকে বাইক সংক্রান্ত বিভিন্ন গ্রুপ, বিক্রয় ডট কমসহ সেলভিত্তিক বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বেড়েছে মোটরসাইকেল বিক্রির বিজ্ঞাপন।

শুক্রবার রাতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে ভোক্তা পর্যায়ে ৩৪ টাকা বাড়ায় সরকার। অকটেনের দাম বাড়ে ৪৬ টাকা, পেট্রোলের দাম বাড়ে ৪৪ টাকা। অর্থাৎ রাত ১২টার পর থেকে ডিজেল ও কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা ও পেট্রোল ১৩০ টাকা লিটার দরে বিক্রি হচ্ছে।

জ্বালানির বাড়তি দামের কথা উল্লেখ করেই মোটরসাইকেল বিক্রির বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন বাইকাররা। শনিবার সকালে দেখা গেছে, জ্বালানির বাড়তি দাম কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাঁচ শতাধিক মোটরসাইকেল বিক্রির বিজ্ঞাপন উঠেছে বিক্রয় ডট কমে। অনেকেই টাকা নগদ করার জন্য ‘ইমার্জেন্সি’ বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের প্রোফাইলে এবং বাইকারদের গ্রুপগুলোতে সকাল থেকে অসংখ্য পোস্ট দেখা গেছে। সজিব সাহা নামে এক ব্যক্তি পোস্ট করেছেন, বাইকের ওপর থেকে মনই উঠে গেল। ভাবছি একটা বাইসাইকেল কিনব। আমার বাইক বিক্রি করব। কেউ নিলে নক দিয়েন। এফজেড-৫ বাইক আমি কিনেছি মাত্র ২০ দিন হলো। দেড় লাখ হলেই বিক্রি করে দেব।

আকরামুজ্জামান আজাদ নামের আরেক বিক্রেতা পোস্ট করেন, বাইক বিক্রি করব। কেউ নিতে চাইলে যোগাযোগ করুন। ৮৯ টাকার তেল ১৩৫ দিয়ে কেনার সামর্থ্য আমার নেই।

অন্যদিকে, জ্বালানির দাম হঠাৎ কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় বেশ বিপাকে পড়েছেন চুক্তিভিত্তিক মোটরসাইকেল চালকরা। সকাল থেকে জ্বালানির বাড়তি দামের কারণে যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া চাইতে হচ্ছে তাদের। আর এতে করে কয়েকগুণ বেশি ভাড়ার কারণে যাত্রীই পাচ্ছেন না তারা। হতাশ হয়ে তাদের অনেকে বাইক বিক্রি করতে চাচ্ছেন।

নীলক্ষেত মোড়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষায় থাকা চুক্তিভিত্তিক মোটরসাইকেল চালক আব্দুস সালাম বলেন, হঠাৎ রাতে তেলের দাম বাড়ার ঘোষণা শুনেছি। সঙ্গে সঙ্গে বাইক নিয়ে বের হয়ে কয়েকটি পাম্প ঘুরেও তেল পাইনি। সকালে অতিরিক্ত দামে তেল কিনে গাড়ি বের করতে হয়েছে। আগে যে জায়গায় ১২০-১৩০ টাকা ভাড়া ছিল এখন সেখানে এখন ১৮০-২০০টাকা ভাড়া হয়েছে। ফলে বাড়তি ভাড়া চাওয়ায় যাত্রী-ই পাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে তো আমরা চলতে পারব না। তেলের দাম না কমলে বাইক বিক্রি করে অন্য কোনো পেশা ধরতে হবে।

কারওয়ান বাজার মোড়েও যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায় মোটরসাইকেল চালকদের। আজহারউদ্দীন নামের এক চালক বলেন, তেলের দাম না কমলে না খেয়ে থাকতে হবে। সকাল থেকে মাত্র তিন জন যাত্রী পেয়েছি। বাড়তি ভাড়া শুনলে তারা আর যেতে চাচ্ছেন না। আমরা অনেকটা নিরুপায়। এত দাম দিয়ে তেল কিনে গাড়ি চালানো যাবে না। গাড়ি বিক্রি করে দিতে হবে। দ্রুত দাম কমানোর দাবি জানাচ্ছি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *