আর্লিং হালান্ডকে টপকে এবারের ব্যালন ডি’অর জিতেছেন লিওনেল মেসি। কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার জয়লাভই মেসির এই অর্জনের ক্ষেত্রে নিয়ামক হয়েছে।
প্যারিসে সোমবার রাতে জমকালো অনুষ্ঠানে মেসির হাতে তুলে দেওয়া হয় ফরাসি সাময়িকী ‘ফ্রান্স ফুটবল’- এর পুরস্কার, ব্যালন ডি’অর ২০২৩।
এই নিয়ে অষ্টমবারের মতো পুরস্কারটি জিতলেন মেসি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচবার জিতেছেন ফুটবলের মহাতারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
ইউরোপিয়ান ফুটবলের সফল অধ্যায় শেষে গত জানুয়ারিতে সৌদি আরবের ক্লাব আল নাস্রে যোগ দেওয়া রোনালদো এবার ৩০ জনের তালিকাতে ছিলেন না, ২০০৩ সালের পর যা প্রথমবারের মতো।
এদিকে, মেসি আবার গত বছর ৩০ জনের তালিকায় ছিলেন না। ২০০৫ সালের পর তার ক্যারিয়ারে প্রথমবার ঘটে এমন ঘটনা। এবার জয়ের ক্ষেত্রে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বলতে গেলে শুধু হালান্ড।
গত মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটির ট্রেবল জয়ে বড় অবদান ছিল নরওয়ের এই তারকার। লিগে ৩৭ ম্যাচে জালের দেখা পান ৩৬ বার। ভেঙে দেন ৩৮ ম্যাচের লিগে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের পথে ১১ ম্যাচে গোল করেন ১২টি। তাকে ছাপিয়ে আরেকবার ব্যালন ডি’অর হাতে তুললেন মেসি।
জাতীয় দলের হয়েগত মৌসুমটা সাফল্যমণ্ডিত ছিল মেসির। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অধ্যায় অবশ্যই কাতার বিশ্বকাপ জয়। ৩৬ বছরের খরা কাটিয়ে আর্জেন্টিনাকে ফের বিশ্বকাপ জেতানোর ক্ষেত্রে আসর জুড়ে দুর্দান্ত খেলেন সাবেক বার্সেলোনা তারকা। ফ্রান্সের বিপক্ষে ফাইনালে জোড়া গোলসহ আসরে মোট ৭ গোল করেন মেসি।
পিএসজির জার্সিতে নিজের সেরা ছন্দে না থাকলেও টানা দ্বিতীয়বারের মতো লিগ ওয়ানের শিরোপা জেতেন মেসি। প্যারিসের দলটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বিদায় নেয় শেষ ষোলো থেকে। ইউরোপ সেরার মঞ্চে মেসি ৭ ম্যাচে চারটি গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে করান চারটি। পিএসজি ছেড়ে এই মৌসুমে তিনি যোগ দেন মেজর সকার লিগের দল ইন্টার মায়ামিতে।
মেয়েদের ব্যালন দ’র জিতেছেন স্পেন ও বার্সেলোনার মিডফিল্ডার আইতানো বনমাতি। প্রথমবারের মতো পুরস্কারটি জিতলেন তিনি।
ব্যালন ডি’অর দেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়মে পরিবর্তন আনা হয় গত বছর। আগে ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে পুরো বছরের পারফরম্যান্স বিবেচনায় নেওয়া হলেও এখন বিবেচনায় ধরা হয় ইউরোপিয়ান ফুটবলের একটি মৌসুমকে (আগস্ট থেকে জুলাই)।
১৯৫৬ সাল থেকে ইউরোপের সেরা খেলোয়াড়কে ব্যালন ডি’অর পুরস্কার দেওয়া চালু হয়। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত পুরস্কারটি শুধু ইউরোপের খেলোয়াড়দেরই দেওয়া হতো। এরপর থেকে ইউরোপে খেলা বিশ্বের যে কোনো খেলোয়াড়ের জন্য পুরস্কারটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। আর ২০০৭ সাল থেকে কেবল ইউরোপের সেরা নয়, পুরস্কারটি দেওয়া শুরু হয় বিশ্বের সেরা ফুটবলারকে।
ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কার আর ফ্রান্স ফুটবলের ব্যালন ডি’অর একীভূত হয়েছিল ২০১০ সালে। ফিফার সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ায় ২০১৬ সাল থেকে আবার একাই ব্যালন ডি’অর দেওয়া শুরু করে ফ্রান্স ফুটবল। ব্যালন ডি’অর জয়ী নির্ধারণ করা হয় সাংবাদিকদের ভোটে।
শেয়ার করুন