ব্রিটেনে কেয়ার ওয়ার্কার ভিসার সংখ্যা কমাতে সক্রিয়ভাবে চিন্তা করছে দেশটির সরকার। সরকারের মন্ত্রীরা ভিসার সংখ্যা কমিয়ে নতুন শর্ত যুক্ত করার বিষয়ে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন। ইমিগ্রেশনমন্ত্রী রবার্ট জেনেরিক বলেছেন, কীভাবে কেয়ার সেক্টরে বিদেশি কর্মী কমানো যায় সে ব্যাপারে সরকার শিগগিরই সিদ্বান্ত নেবে।
কেয়ার ভিসায় বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ ব্রিটেনে আসলেও তাদের কাজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা না থাকা, ভাষাগত অদক্ষতার কারণে কাজ পাচ্ছেন না। বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন অভিবাসী কমিউনিটিতে কেয়ার ভিসা নিয়ে হাজার হাজার পাউন্ডের বাণিজ্য, বহু কেয়ার হোমের লাইসেন্স বাতিল এবং কর্মীদের এনে কাজ দিতে না পারার মতো অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে কেয়ার হোমগুলো বলছে, যারা বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে কেয়ার ভিসায় আসছেন, তাদের কাজের ও ভাষাগত ন্যূনতম দক্ষতা না থাকায় কাজ দিতে পারছেন না তারা।
গত বছর ৭৭ হাজার ৭০০ জনকে কেয়ার ভিসা দিয়েছে ব্রিটেনের হোম অফিস। ২০২১ সালে প্রবীণদের পরিচর্যা কর্মীদের ‘শর্টেজ অকুপেশন’ তালিকায় যুক্ত করা হয়। ব্রেক্সিটের পর ক্রমবর্ধমান শূন্যপদ পূরণের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। গত বছর কেবল ভারত থেকে ৩০ হাজার, নাইজেরিয়া থেকে ১৮ হাজার ও জিম্বাবুয়ে থেকে ১৭ হাজার কর্মী কেয়ার ভিসায় ব্রিটেনে এসেছেন।
চলতি সপ্তাহে ব্রিটেনের অভিবাসন মন্ত্রী রবার্ট জেনেরিক কম দক্ষ কর্মীদের যুক্তরাজ্যে আসার পথ খুলে দেওয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সরকারের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, সরকারের মন্ত্রীরা এখন অভিবাসী শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতনের মাত্রা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন। তারা অভিবাসী কর্মীদের ভিসার সংখ্যা কমানোর বিষয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন।
পয়েন্টভিত্তিক বর্তমান ব্যবস্থায় অভিবাসী কর্মীদের ন্যূনতম বার্ষিক বেতন ২৬ হাজার পাউন্ডের বেশি। ন্যূনতম বেতন বাড়ানো হলে বাংলাদেশসহ বহু দেশের কর্মীদের জন্য ব্রিটেনের ভিসা পাওয়া কঠিন হতে পারে।
অভিবাসনমন্ত্রী জেনেরিক বলেছেন, বিদেশি কর্মীদের জন্য কেয়ার ভিসা ও ডিপেন্ডেন্ট ভিসার সংখ্যা হ্রাস করার কথাও বিবেচনা করছে সরকার। আমি মনে করি কেয়ার ভিসায় লাখো বিদেশি কর্মী এরই মধ্যে ব্রিটেনে এসেছেন। এখন বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করা দরকার।
হোম অফিসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, আমরা নেট মাইগ্রেশন কমাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের অভিবাসন ব্যবস্থার অপব্যবহার রোধ করার জন্য শক্তিশালী ব্যবস্থা রয়েছে। নিয়োগকর্তারা নিয়ম ভঙ্গ করলে প্রয়োজনে স্পন্সর লাইসেন্স প্রত্যাহার করাসহ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লন্ডনের লেক্সপার্ট সলিসিটর্সের কর্ণধার ব্যারিস্টার শুভাগত দে শুক্রবার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, এমন বাস্তবতায় সরকার আয়ের সীমা বাড়িয়ে কেয়ার ভিসায় নতুন শর্ত আরোপ করতে পারে।
শেয়ার করুন