টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভের ম্যাচে বুধবার (২ নভেম্বর) ভারতের মুখোমুখি হলো বাংলাদেশ। ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৮৪ রান করে ভারত। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৫ রানে হারে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ১৬ ওভারে ১৪৫/৬
ভারত: ২০ ওভারে ১৮৪/৬
ভারতের কাছে ৫ রানে হারলো বাংলাদেশ
শেষ ওভারে অর্শদীপ সিংয়ের প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে দিয়েছিলেন তাসকিন। পরেরটি ছিল শর্ট লেংথে, মিডউইকেট দিয়ে ছক্কা মেরেছেন নুরুল। ব্লকহোলে পরের বলটিতে সিঙ্গেল নেননি নুরুল।
চতুর্থ বলে নিয়েছেন ডাবলস। পঞ্চম বলে ব্যাটের ফেস ওপেন করেছেন নুরুল, অফ স্টাম্পের বাইরের ফুললেংথের বলটিতে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে হয়েছে চার।
শেষ বলে প্রয়োজন ছিলো ৭ রানের, ৬ রান হলে সুপার ওভারের সম্ভাবনা ছিলো। ১ রানের বেশি তাতে আসেনি। ফলাফলে বাংলাদেশ ডিএলএস পদ্ধতিতে হেরেছে ৫ রানে।
মোসাদ্দেক বোল্ড
ছয়, বাউন্সারে ডট, বোল্ড—পান্ডিয়ার বলে ফিরলেন মোসাদ্দেক হোসেন। বাংলাদেশের বলতে গেলে শেষ আশা ছিলেন তিনি।
ইয়াসির ক্যাচ আউট
পান্ডিয়া আগের ওভারেও করেছিলেন শর্ট লেংথে, এবার প্রথম বলটিও করলেন সেখানেই। তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন ইয়াসির। ২২ বলে দরকার ৪৯ রান, বাকি ৫ উইকেট।
আফিফের পথেই সাকিব
আফিফের মতো প্রায় একই লেংথ থেকে অর্শদীপ সিংকে একই ধরনের শট খেলতে গেলেন সাকিব, ফিরতে হলো তাকেও।
ফিরলেন আফিফও
অর্শদীপ সিংয়ের লেংথ কম ছিল, টেনে মেরেছিলেন আফিফ। বল উঠেছিল অনেক, তবে যায়নি বেশিদূর। লং অন থেকে ছুটে এসে ভুল করেননি সূর্যকুমার।
ক্যাচের পর তার উদ্যাপনই বলছিল, এ উইকেটের অর্থ তাদের কাছে কী।
লিটনের পর ফিরলেন নাজমুল
১০ম ওভারে মোহাম্মদ শামির প্রথম বলেই টেনে মিডউইকেটে মারার চেষ্টা করেন নাজমুল। টাইমিং ভালো হয়নি। ক্যাচটি নেন সূর্যকুমার যাদব।
২৫ বলে ২১ রান করে ফিরলেন নাজমুল। ইনিংসে ১ চার ও ১ ছক্কা।
বৃষ্টির পর খেলা শুরু হতেই প্রথম বলে লিটন আউট
লিটন রীতিমতো ফুঁসছেন। এমন একটা ইনিংসের শেষটা যদি হয় রানআউটে, তাহলে এমন প্রতিক্রিয়া অস্বাভাবিকও নয়। অশ্বিনের বলে স্কয়ার লেগে খেলেছিলেন নাজমুল, এরপর কল করেছিলেন ডাবলসের। লিটন সাড়া দিয়েছিলেন তাতে, মাঝপথে অবশ্য একটু খেই হারিয়ে ফেলেছিলেন।
লোকেশ রাহুলের থ্রো সরাসরি ভেঙেছে নন স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প। লিটন ফিরেছেন ২৭ বলে ৬০ রান করে।
বাংলাদেশের সামনে নতুন লক্ষ্য
বৃষ্টির পর খেলা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের পরিবর্তিত লক্ষ্য ১৬ ওভারে ১৫১ রান। ফলে বাকি ৯ ওভারে দরকার ৮৫ রান।
ওভার কাটা গেলে যেমন হবে বাংলাদেশের লক্ষ্য
৭ ওভারে বাংলাদেশ ৬৬/০। ৩০ মিনিট অতিরিক্ত আছে, তবে এরপর কাটা যাবে ওভার।
ওভার কাটা গেলে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়াবে এমন—
১৮ ওভারে ১৬৯
১৫ ওভারে ১৪২
১৩ ওভারে ১২২
১০ ওভারে ৮৯
৩৩ ম্যাচ পর শুরুর জুটিতে পঞ্চাশ
৩৩ ম্যাচ পর শুরুর জুটিতে পঞ্চাশ পেয়েছে বাংলাদেশ।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৯ রানের জুটি গড়েছিলেন লিটন দাস ও নাইম শেখ। তারপর পেল এই প্রথম।
আজকের ম্যাচে ২১ বলে ৫০ করে ফেলেন লিটন দাস।
পাওয়ার প্লেতেই ডানহাতি এই স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান করে ফেললেন ৫৬ রান! ২৪ বলের ইনিংসে এখন পর্যন্ত তিন ছক্কার সঙ্গে সাতটি চার মেরেছেন লিটন।
আরেক পাশে বেশ ভুগছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু লিটনের ব্যাটে আড়ালেই পড়ে গেছে তা।
পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬০ রান করেছে বাংলাদেশ। ৫৬ রানে খেলছেন লিটন। ১২ বলে শান্তর রান ৪।
বৃষ্টি, ডিএলএসে এগিয়ে বাংলাদেশ
অ্যাডিলেডে নেমেছে বৃষ্টি। ৭ ওভার শেষে বাংলাদেশ সংগ্রহ ৬৬।
ডিএলএস পার স্কোর এখন ৪৯, বাংলাদেশ তাই বেশ খানিকটা এগিয়ে।
অল্পের জন্য বাঁচলেন লিটন
আর্শদিপ সিংকে দুটি চার মারার পর কট বিহাইন্ড হতে হতে বেঁচে গেছেন লিটন দাস। বল তার ব্যাট ছুঁয়ে কিপারের গ্লাভসে যাওয়ার আগে ছুঁয়ে যায় ঘাস।
পরের বলে আরেকটি চার মারেন লিটন।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের সর্বোচ্চ সংগ্রহ
শুরুতে ভারতকে চাপে ফেলেছিলো বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদের আঁটসাঁট বোলিং বেশ কাজে এসেছিলো। রোহিত শর্মা ফিরলেও দারুণ ব্যাটিংয়ে ঠিকই ফিফটি পান লোকেশ রাহুল।
সাকিব আল হাসান এসে দেন ব্রেকথ্রু। এরপর থেকে বাংলাদেশ উইকেট পেয়েছে, তবে ভারত ঠিকই পেয়ে গেছে ১৮৪ রানের সংগ্রহ।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের এটি সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
ভারতকে বোড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বড় কৃতিত্ব কোহলির ৪৪ বলে ৬৪ রানের ইনিংসের। মাঝে সূর্যকুমারের ১৬ বলে ৩০ রানের ঝোড়ো ইনিংসে দারুণ মোমেন্টাম পায় ভারত।
তবে বাংলাদেশ ফিরে আসে আবার। দীনেশ কার্তিক ঠিক ফিনিশ করতে পারেননি, তবে শেষদিকে রবিচন্দ্রন অশ্বিন খেলেছেন ৬ বলে ১৩ রানের ক্যামিও।
চলতি বিশ্বকাপে এতো রান তাড়া করে এখন পর্যন্ত জেতেনি কোনো দল।
তৃতীয় উইকেট পেলো হাসান
মোস্তাফিজের বলে ক্যাচ তুলেও বেঁচে গিয়েছিলেন অক্ষর প্যাটেল। পরের ওভারে আবারো হাসানের স্লোয়ারে কাভারে ক্যাচ তুললেন, এবার ঠিকই নাগাল পেয়েছেন সাকিব। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ইঁদুর-বিড়াল খেলা চলছেই অ্যাডিলেডে!
কোহলির ফিফটির পর রান আউট কার্তিক
কাভারে খেলেছিলেন কোহলি, কার্তিক নিতে চেয়েছিলেন সিঙ্গেল। তবে তাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন কোহলি।
কার্তিক ডাইভ দিলেও বাঁচলেন না। সাকিবের থ্রো ঠিকঠাক ধরার আগেই স্টাম্প ভেঙেছিলেন শরীফুল, তবে আদতে থ্রোয়ে সরাসরি আগেই ভেগেছে স্টাম্প।
হাসানের শিকার হার্দিক পান্ডিয়া
শর্ট বল। লাফিয়ে উঠে ব্যাট চালালেন হার্দিক পান্ডিয়া। একটু লাফ দিয়ে উঠে পয়েন্টে ক্যাচ নিলেন ইয়াসির আলী।
এমসিজিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতের জয়ের ভিত গড়ে দেওয়া পান্ডিয়া ও কোহলি জুটি টিকল না বেশিক্ষণ। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রেকথ্রু বাংলাদেশের।
৬ বলে ৫ রান করেন পান্ডিয়া।
১৬ ওভারে ভারতের রান ৪ উইকেটে ১৪০। ক্রিজে বিরাট কোহলির সঙ্গী দিনেশ কার্তিক।
রাহুলের পর সূর্যকুমারকেও ফেরালেন সাকিব
পয়েন্টের পেছনে গ্যাপ রেখেছিলেন সাকিব, তাকে জায়গা বানিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন সূর্যকুমার। সাকিব বল করেছেন স্টাম্প বরাবর। সূর্য মিস করে হয়েছেন বোল্ড।
টুর্নামেন্টে ভারতের সেরা দুই ব্যাটসম্যানের সামনে সাকিব করে গেছেন সাহসী বোলিং, সেটির পুরস্কারও পেলেন। কোহলি ও সূর্যর জুটিতে উঠেছে ৩৮ রান।
রাহুলকে ফেরালেন সাকিব
আগের বলেই ডাবলস নিয়ে ফিফটি পূর্ণ করেছিলেন রাহুল। পরের বলে ঘুরিয়ে খেলতে গিয়ে ফাইন লেগে ধরা পড়লেন মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে। পেছন দিকে ছুটে ভালো ক্যাচ নিয়েছেন মোস্তাফিজ।
৩২ বলে ৫০ রান করে ফিরেছেন ভারত ওপেনার লোকেশ রাহুল।
রাহুলকে ফিরিয়ে আবার দলকে লড়াইয়ে ফেরালেন অধিনায়ক সাকিব। কোহলি ও রাহুলের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে উঠেছে ৩৭ বলে ৬৭ রান।
হাসানের হাতে জীবন পাওয়া রোহিত ফিরলেন হাসানের বলেই
তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বল। লেংথ থেকে ওঠা বলে ব্যাট চালিয়েছিলেন রোহিত শর্মা, বল সরাসরি গিয়েছিল ডিপ স্কয়ার লেগে থাকা হাসান মাহমুদের গলা বরাবর। বল হাসানের হাতে ঢুকেছে, বেরিয়েও গেছে এরপর। তাসকিনের শরীরী ভাষা এরপর চাইলেই অনুমান করে নিতে পারেন আপনি। ভারত অধিনায়ক জীবন পেলেন ১ রানে।
পরের ওভারে সেই হাসানের বলেই ফিরলেন রোহিত শর্মা! অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাটের মতো করেছিলেন ভারত অধিনায়ক, ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সরাসরি ক্যাচ গেছে ইয়াসির আলীর হাতে! বাংলাদেশের প্রথম ব্রেকথ্রু।
তাসকিনের প্রথম ওভারে ১ রান
ভারতের বিপক্ষের আজকের ম্যাচে প্রথম ওভারে মাত্র ১ রান দিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। প্রথম চার বল ডট দেওয়ার পর পঞ্চম বলে গিয়ে সিঙ্গেল নিয়েছেন লোকেশ রাহুল। শেষ বলে ডিফেন্ড করেছেন রোহিত শর্মা।
আজকের ম্যাচ প্রসঙ্গে গতদিন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেছিলেন, ‘ভারত ফেভারিট দল তারা এখানে বিশ্বকাপ জিততে এসেছে। আমরা ফেভারিট নই, আমরা এখানে বিশ্বকাপ জিততে আসিনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা খুব ভালো করেই জানি, ভারতের বিপক্ষে এ ম্যাচ জিতলে এটিকে অঘটন বলা হবে। আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করবো এবং অঘটন ঘটানোর চেষ্টা করবো।’
তিনি বলেন, আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হলো, বাকি দুই ম্যাচ খুব ভালোভাবে খেলা। দুই ম্যাচের কোনটিও যদি জিততে পারি, আপসেট হিসেবে গণ্য হবে। সেই আপসেটটা করতে পারলে আমরা খুশি হব। না করতে পারলে বেশি কিছু বলার নেই।
সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হলেও, এ ম্যাচকে অন্যভাবে দেখতে নারাজ সাকিব।
সৌম্যর জায়গায় শরিফুল
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় পাওয়া দলে একটি পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ। সেই পরবির্তন অবশ্য বেশ চমক জাগানিয়া। ওপেনার সৌম্য সরকারের জায়গায় ফিরিয়েছে বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামকে।
দল ঘোষণার সময় ভারত ও পাকিস্তানের টপ অর্ডারের বিপক্ষে নাসুম আহমেদের ম্যাচ আপের কথা বলেছিলেন শ্রীধরন শ্রীরাম। তবে জায়গা হয়নি বাঁহাতি স্পিনারের।
বাংলাদেশ একাদশ
সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, ইয়াসির আলি চৌধুরি, নুরুল হাসান সোহান (উইকেটরক্ষক), তাসকিন আহমেদ, লিটন দাস, হাসান মাহমুদ, নাজমুল হোসেন শান্ত।
শেয়ার করুন