ভারতে কোভিডের পর নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে ‘টমেটো ফ্লু’ নামের একটি অসুখ। এখন পর্যন্ত এতে শতাধিক শিশু আক্রান্ত হয়েছে। ‘দ্য ল্যানসেট রেসপিরেটরি জার্নাল’-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, প্রাথমিকভাবে ভারতের কেরালা প্রদেশের কোল্লামে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের মধ্যে এই রোগটির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এ খবর দিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
খবরে জানানো হয়, টমেটো ফ্লু যে একেবারেই হালকাভাবে নেয়ার মতো সংক্রমণ নয়, তা পরিষ্কার করা হয়েছে ল্যানসেটের রিপোর্টে। এতে বলা হয়েছে, সংক্রামক এই রোগটি কেরালার আঁচল, আরিয়ানকাভু এবং নেদুভাথুর অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। এই রোগের কারণে আশপাশের রাজ্যগুলিকেও সতর্ক করা হয়েছে। তামিলনাড়ু এবং কর্ণাটকের মতো প্রতিবেশী রাজ্য যেনো এই বিষয়ে প্রস্তুত থাকে সেই সতর্কতাও জারি করা হয়েছে!
ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মঙ্গলবার দেশটির সব রাজ্যে টমেটো ফ্লু বিষয়ক একটি নির্দেশনা পাঠিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, এই রোগ হাত, পা এবং মুখের রোগের (এইচএফএমডি) একটি রূপ বলে মনে করা হচ্ছে। এটি মূলত ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে দেখা দেয়। তবে এটি প্রাপ্তবয়স্কদেরও হতে পারে।
টমেটো ফ্লু বা টমেটো জ্বর হল একটি বিরল ভাইরাস-ঘটিত রোগ যা ত্বকে লাল রঙের ফুসকুড়ি, জ্বালা এবং ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি করে।
তবে টমেটোর সঙ্গে এই সংক্রমণের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে এই রোগে সংক্রমিত হলে ত্বকে লালচে ফোস্কা পড়ে। তাই সেখান থেকে এর নাম হয়েছে টমেটো জ্বর বা টমেটো ফ্লু। ফুসকুড়ি এবং ত্বকের জ্বালা ছাড়াও বেশ কিছু লক্ষণ দেখা গেছে এই ফ্লু’র। এরমধ্যে আছে, মাত্রাতিরিক্ত জ্বর, শরীরের নানা জায়গায় ব্যথা, জয়েন্ট ফুলে যাওয়া, ডিহাইড্রেশন এবং ক্লান্তি।
হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, শিশুর ফ্লুয়ের লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সংক্রমিত শিশুকে অবশ্যই ফোস্কা চুলকানো থেকে বিরত রাখতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। নির্দিষ্ট পরিমাণে পানি খাওয়াতে হবে। তার সঙ্গে সঠিক পরিমাণে বিশ্রামের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ রোগ প্রতিরোধের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি শিশুর গোসলের জন্য গরম পানি ব্যবহার করতে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ছাড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টি সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য খেতে হবে। দ্রুত সেরে উঠতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং ঘুম অপরিহার্য। করোনা আর মাঙ্কিপক্সের মধ্যেই টমেটো জ্বর নিয়ে তৈরি হচ্ছে নতুন আতঙ্কের পরিবেশ। এখনও পর্যন্ত ভারতে এই ভাইরাল সংক্রমণের শতাধিক ঘটনা নথিবদ্ধ হয়েছে।