ভারতে পিটিয়ে হত্যার ৯ মাস পর বাংলাদেশী যুবকের মরদেহ ফেরত

জাতীয়

পঞ্চগড়ের ভারতীয় সীমান্তের অভ্যন্তরে ‘গরু চোর সন্দেহে’ পিটিয়ে হত্যার প্রায় ৯ মাস পর বাংলাদেশি যুবক আব্দুস সালামের মরদেহ ফেরত পেয়েছে পরিবার। গতকাল শনিবার সন্ধার দিকে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা সীমান্তের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তার মরদেহ গ্রহণ করে পরিবারের লোকজন। এ সময় বিজিবি, বিএসএফ সদস্য ছাড়াও জনপ্রতিনিধি ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

নিহতের পরিবার ও সীমান্ত সূত্র জানায়, গত বছরের ২৪ আগস্ট ভোরে নীলফামারী-৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন পঞ্চগড় উপজেলা সদরের অমরখানা সীমান্তের বিপরীত ভারতের বড়ুয়াপাড়া সীমান্ত এলাকায় বাংলাদেশি যুবক আব্দুস সালামসহ তিন যুবককে ধাওয়া দেয় স্থানীয়রা। এ সময় অন্য দুজন পালিয়ে গেলেও আব্দুস সালামকে গরু চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করে ভারতীয়রা। পরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও ভারতীয় পুলিশ বাংলাদেশি ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত আব্দুস সালামের বাড়ি উপজেলা সদরের সাতমেরা ইউনিয়নের কাহার পাড়ায়। ঘটনাটি ভারতীয় বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার হলে নিহতের পরিবার বিষয়টি জানতে পারে এবং মরদেহ ফেরতের জন্য বিজিবির মাধ্যমে ভারতের কাছে আবেদন করে। দুই দেশের আইনি জটিলতা এবং দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে নিহতের এক ভাই ভারতে গিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় তার মরদেহ নিয়ে আসেন।
নিহত সালামের বড় ভাই আলিম হোসেন বলেন, আমার ভাইয়ের কোনো খোঁজ না পেয়ে পরে জানতে পারি তাকে গরু চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। দীর্ঘ ৯ মাস ধরে আমার ভাইয়ের লাশ ফেরতের জন্য বিজিবিসহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেছি। দীর্ঘদিন পর হলেও স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের সহায়তায় লাশ ফেরত পাওয়া গেছে।

তবে এ বিষয়ে বিজিব বা বিএসফের সংশ্লিষ্ট কেউ কোনো কথা বলেনি। একাধিকবার তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফল মেলেনি। তবে সাতমেড়া ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি বলেন, ভারতে গরু আনতে গিয়ে স্থানীয় সালাম নামে একজন মারা গেছেন বলে জানা গিয়েছিল। মরদেহটি ভারতের একটি হাসপাতালে বিশেষ ব্যবস্থায় রাখা ছিল। এরপর নিহত সালামের এক ভাই ভারতে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করে। দীর্ঘ ৯ মাস পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে মরদেহটি হস্তান্তর করে বিএসএফ ও ভারতীয় পুলিশ। তবে মরদেহ আনার খরচ সালামের পরিবারের পক্ষ থেকেই করা হয় এবং পরিবারের পক্ষ থেকেই মরদেহ নিয়ে আসা হয়।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস পর নিখোঁজ আব্দুস সালামের মরদেহ পেয়েছে তার পরিবার। মরদেহ নিয়ে আসার সময় পরিবারের সদস্যদের সাথে পুলিশও ছিল। এ ঘটনায় মরদেহ উদ্ধারের একটি সাধারণ ডায়েরির প্রস্তুতি চলছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *