ভারত ন্যায্য হিস্যা না দিলে বিকল্প ভাবতে হবে : তারেক রহমান

রাজনীতি

প্রতিবেশী দেশ অর্থাৎ ভারত যদি আমাদের ন্যায্য অধিকার না দেয় তবে দেশী-বিদেশী সকল বিকল্প ভাবতে হবে’ বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মঙ্গলবার বিকেলে তিস্তা রক্ষা আন্দোলন কমিটির সমাপনী দিনের কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, ভারতের ৫৪টি নদী বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, এটা কোনো করুণার বিষয় নয়। তিস্তা নদীর উজানে গজলডোবা বাঁধ দিয়ে পানি আটকে দিয়েছে ভারত। তিস্তার ন্যায্য পানি আদায়ের জন্য আজকে আমাদের আন্দোলন করতে হচ্ছে। এ পানিবণ্টন নিয়ে আমাদের প্রতিবেশী দেশ অপ্রতিবেশীমূলক আচরণ করছে। ৫০ বছর যাবৎ ফারাক্কার অভিশাপ থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পাই নাই। এখন আবার এসেছে তিস্তার অভিশাপ।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশের এমন আচরণের কারণে আজকে তিস্তা পাড়ের লাখ লাখ মানুষ বন্যায়-খরায় অসহায় জীবন-যাপন করছে। পানির অভাবে কোটি কোটি টাকার শস্য ক্ষতি হচ্ছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ৫ আগস্টে একটি খুনি-স্বৈরাচার দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। এই স্বৈরাচার এক দিন একটি কথা বলেছিল, ‘ভারতকে যা দিয়েছি তা তারা সারা জীবন মনে রাখবে’। তাই এই পার্শ্ববর্তী দেশ পলাতক স্বৈরাচারকে মনে রেখেছে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষকে মনে রাখেনি। ভারত শুধু পলাতক স্বৈরাচারকে জায়গা দিয়েছে আর কিছু দেয়নি। স্বৈরাচার নিজের ক্ষমতা দখল রাখতে গিয়ে ভারতের সেবাদাসীতে পরিণত হয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, পলাতক স্বৈরাচার আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ভারতকে এক তরফাভাবে ট্রানজিট দিয়ে গেছে, এ চুক্তিগুলো পুনর্বিবেচনা করা দরকার। বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, বর্তমান বিশ্বে স্থায়ী শত্রু-মিত্র বলে কিছু নেই। সম্পর্ক হতে হবে দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে। এর বাইরে কিছু নয়। এজন্যই বিএনপির স্লোগান, ‘সবার আগে বাংলাদেশ’।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবেশী দেশের কাছ থেকে আর অন্যায্য আচরণ দেখতে চায় না, বন্ধুত্বের দোহাই দিয়ে কাঁটাতারে ফেলানীর ঝুলন্ত লাশ আর দেখতে চায় না। তারেক রহমান বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে তিস্তা রক্ষার বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখবে। পাশাপাশি দেশের অন্যান্য যেসব নদী আছে সেগুলোকে আমাদের পুনরায় সংস্কার এবং খনন করতে হবে। শহীদ জিয়ার খাল খনন করবো, ইনশাল্লাহ।

তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচার সরকার গত ১৫টি বছর নির্বাচনকে তামাশায় পরিণত করেছে। দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক, ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে একটি মাফিয়াতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। স্বৈরাচার ৫ আগস্ট পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের মানুষের সম্ভাবনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের কোনো হটকারী সিদ্ধান্তে বা আমাদের অসতর্কতায় যেন খুনি ফ্যাসিস্ট সরকারের কেউ যেন পুনর্বাসন হওয়ার সুযোগ না পায়, সেদিকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, দুই দিন যাবত তিস্তা পাড়ের মানুষ যে আন্দোলন করছে এটা বৃথা যাবে না। তিস্তাকে রক্ষা করতে হলে তিস্তাবাসীকে একটি দায়িত্ব পালন করতে হবে। আর সেটি হচ্ছে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আপনারা আপনাদের পছন্দের দলকে সমর্থন দিবেন। সেই সাথে তিনি বলেন, তিস্তা পাড়ের এই আন্দোলন বৃথা যাবে না। ক্ষমতায় এলে সকলকে সাথে নিয়ে তিস্তার সমস্যা সমাধান করব ইনশাআল্লাহ।

বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দেখেছে মানুষের ঐক্যবদ্ধতা। কিভাবে তারা একটি সঙ্কটে নিজেদেরকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। আপনারা যেভাবে বলেছেন, জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাও। একইভাবে আমাদের বাংলাদেশের সকলকে বলতে হবে, ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাও, জাগো বাহে বাংলাদেশ বাঁচাও’।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *