ফারুক আহমদ
স্টাফ রিপোর্টার
সিলেট জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট প্রদীপ ভট্টাচার্য্য বলেছেন, মানুষ হয়ে জন্মে ছিলাম। বাঙালী হয়ে বাঁচার জন্য ৭১’র সাথে হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যবদ্ধভাবে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে ছিলেন। আর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে দেশের সংখ্যালঘুদের বেঁচে থাকার অধিকারগুলো খেড়ে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পূজা এলেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভাংচুর করা হচ্ছে প্রতিমা, নির্বাচন এলেই হামলা করা হচ্ছে সংখ্যালঘু পরিবারের বাড়িতে, মানসিকভাবে সংখ্যালঘুদের দূর্বল করার জন্য সামাজিকভাবে হেয়-প্রতিপন্ন করা হচ্ছে সংখ্যালঘু শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশায় যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের উপর। তাই এখন আর আমরা ভিক্ষা চাই না, সঠিকভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করে নিজেদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে বাঁচতে দিন। সংখ্যালঘুদের দাবীগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করুণ প্রধানমন্ত্রী।
তিনি শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এবং যুব ও ছাত্র ঐক্য পরিষদের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথাগুলো বলেন। তিনি আরো বলেন, বাঙালীদের অস্তিস্ত ঠিকিয়ে রাখার জন্য এখনই হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে সংখ্যালঘুদের মেধা শূন্য করার অপচেষ্টা রুখতে হবে। সাম্প্রদায়িক হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে। ধর্মীয় বৈষম্য দূর করে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাধীনতার স্বাদ ভোগ করতে হবে। মানবিকতা ঠিকিয়ে রাখার জন্য আমাদেরকে পুনরায় ৭১’র সংবিধানে ফিরে যেতে হবে।
উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মানিক লাল দে’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সমরেন্দ্র বৈদ্য সমরের পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোপিকা শ্যাম পুরকায়স্থ, সাধারণ সম্পাদক কৃপেশ চন্দ্র পাল, মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দে, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট পংকজ দাশ, সহ অর্থ সম্পাদক হারাধন দেব প্রবাস, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাবেক সভাপতি পিনাক চক্রবর্তী, জেলা পূজা উপযাপন পরিষদের সদস্য নিশি কান্ত পাল, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান যুব ঐক্য পরিষদের সহ সভাপতি দিপন আচার্য্য, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ছাত্র ঐক্য পরিষদের আহবায়ক মিথিন পাল প্রান্ত, সদস্য সচিব প্রীতিরাজ পুরকায়স্থ।
বক্তব্য রাখেন উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সহ সভাপতি রুপক কুমার দেব, সুনীল কান্ত দে, সাংগঠনিক সম্পাদক শংকর দাশ শংকু, সদস্য শংকর চন্দ্র ধর, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার দাশ, সংগঠনিক সম্পাদক সমীর দে ঝুলন, উপজেলা জন্মাষ্ঠমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি নেপাল কুমার দে, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটির পক্ষে বক্তব্য রাখেন লামাকাজীর সভাপতি রজত কান্তি দত্ত রুপক, দেওকলসের সভাপতি মতি লাল দাশ, খাজাঞ্চীর সাধারণ সম্পাদক সজিব দে রাখু, অলংকারীর বিজিত রঞ্জন সরকার, রামপাশার সুবিনয় মালাকার, দৌলতপুরের সাধারণ সম্পাদক বিভাংশু গুন বিভু, বিশ্বনাথের সাধারণ সম্পাদক ঝুটন চৌধুরী, দশঘরের সাধারণ সম্পাদক নন্দ লাল বৈদ্য, উপজেলা ছাত্র-যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি কানু রঞ্জন দে, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কাজল মালাকার।
অনুষ্ঠানের শুরুতে গীতাপাঠ করেন উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের দপ্তর সম্পাদক দেবব্রত চক্রবর্তী দেবু ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সম্পাদক রুনু কান্ত দে এবং শোক প্রস্তাব পাঠ করেন যুগ্ম সম্পাদক জয়ন্ত আচার্য্য।
জাতীয় ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শুরু হওয়া ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ভোটাভোটির মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করে কাউন্সিলররা। ভোটাভোটিতে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে সভাপতি পদে শংকর দাশ শংকু ও সাধারণ সম্পাদক পদে শংকর চন্দ্র ধর নির্বাচিত হন। সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দিতা করেন সমরেন্দ্র বৈদ্য সমর ও জয়ন্ত আচার্য্য এবং সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দিতা করেন রুনু কান্ত দে।
সমঝোতার মাধ্যমে উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি পদে অজয় দে, সহ সভাপতি পদে বিষু দেব, বিজয় চন্দ্র দে, সাধারণ সম্পাদক পদে সৌমিত্র ধর মিশু এবং উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ছাত্র ঐক্য পরিষদের সভাপতি পদে অমিত দেব, সহ সভাপতি পদে প্রবীর কান্তি দে, সাধারণ সম্পাদক পদে রাসেন্দ্র দাস রাজীব নির্বাচিত হন।
সম্মেলনে উপজেলা ও আট ইউনিয়নের হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এবং যুব ও ছাত্র ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনীধি, রাজনৈতিক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।