ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে দেশের ১৩ এলাকা : সতর্কতা ও প্রস্তুতির পরামর্শ

সিলেট

দেশের ১৩টি এলাকা ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে। ভূগর্ভস্থ ফাটল বা চ্যুতি থাকার কারণে ওই কম্পন হতে পারে। সবচেয়ে তীব্র ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা ও সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকা। সব এলাকাই ঢাকা থেকে কমপক্ষে ১০০ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু সেখানে ৭ থেকে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলে তা ঢাকায় বড় ধরনের বিপর্যয় তৈরি করতে পারে। এ তথ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালও শনিবার একটি সেমিনারে জানিয়েছেন, দেশে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার মতো ভূতাত্ত্বিকভাবে সক্রিয়, যেগুলো ভূতাত্ত্বিকভাবেও সক্রিয়। তিনি বলেন, সেজন্য প্রস্তুতি বাড়ানো দরকার। জনসচেতনতা ভূমিকম্প দুর্যোগের বিপদাপন্নতা কমানোর জন্য একটি বড় উপাদান। এজন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথ্য স্কুল পর্যায়ে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।

গত ৫ মে সংঘটিত ভূমিকম্প বিষয়ে তিনি বলেন, এই ভূমিকম্পটি কোনো বড় ধরনের ভূমিকম্পের ইঙ্গিত দেয় না। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পের তথ্য প্রমাণসহ তিনি দেখান যে, এই ভূমিকম্প সংঘটিত হতে প্রায় ৩৫০-৬৫০ বছর সময় প্রয়োজন। তবে একটি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় যেকোনো সময়ে ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্প হতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈয়দ হুমায়ুন আখতারের হিসাবে, গত এক যুগে ঢাকার আশপাশে ভূমিকম্পের সংখ্যা বাড়ছে। ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সময়ে কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলায় ছয়টি ভূমিকম্প হয়েছিল। এরপরের বছরগুলোতে ভূমিকম্পগুলোর কেন্দ্রস্থল ছিল মূলত সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকার মধ্যে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভূমিকম্পের কেন্দ্র ঢাকার আশপাশে বেশি দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যাওয়া ভূ-অভ্যন্তরের বার্মা প্লেটের নিচে ইন্ডিয়ান প্লেট চাপা পড়ে যাচ্ছে। যে কারণে সেখানে প্রচুর শক্তি জমা হচ্ছে। ওই শক্তি যেকোনো সময় বের হয়ে শক্তিশালী কম্পন সৃষ্টি করতে পারে। ফলে ভূমিকম্প মোকাবিলায় থেমে থাকা কাজ আমাদের এখনই দ্রুত শুরু করতে হবে।

দেশের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীর ১০০ থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে ৭ থেকে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ঢাকায় তীব্র কম্পন অনুভূত হতে পারে, যা এই শহরের দুর্বল ভবনগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ঢাকার সম্প্রসারিত বা নতুন নতুন আবাসিক এলাকার মাটি নরম ও দুর্বল। এ ধরনের মাটিতে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা না মেনে বহুতল ভবন হলে তা মাঝারি মাত্রার কম্পনেই ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকে।

উল্লেখ্য যে, ২০২১ সালের ২৯ মে পরপর সাত দফা ভূমিকম্প অনুভূত হয় সিলেটে। এরপর ২০২২ ও ২০২৩ সালে আরো কয়েকদফা ভূমিকম্প হয়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *